গত কালই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি তির্যক মন্তব্য ছুঁড়ে বলেছিলেন, বিদেশের ব্যাঙ্কে যাদের কালো টাকা গচ্ছিত রয়েছে, তাদের নাম সামনে এলে আসলে অস্বস্তিতে পড়বে কংগ্রেস!
২৪ ঘন্টাও পার হয়নি। জেটলিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব জানান, “হুমকি না দিয়ে, ওই তালিকা এখনই প্রকাশ করুক সরকার।” কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “হুমকি দিয়ে কাজ হবে না। কাদা ছোড়ার রাজনীতি করেও লাভ নেই। কাল নয়, আজই কালো টাকার কারবারিদের নাম প্রকাশ করা হোক।”
কালো টাকা উদ্ধারের প্রশ্নে মনমোহন সিংহ সরকারের বিরুদ্ধে এক সময় আন্দোলনে নামে বিজেপি। ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদীর প্রচারের অন্যতম বিষয়ও ছিল কালো টাকা প্রসঙ্গ। সেই সঙ্গে বিজেপি নির্বাচনী ইস্তাহারে জানায়, ক্ষমতায় এলে বিদেশের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধার করবে তাঁদের সরকার। এর কারবারিদের নামও প্রকাশ হবে। কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বৈত কর ব্যবস্থা রোধ চুক্তির কারণে, গোপনীয়তা রাখার বাধ্যবাধকতায় ওই নামের তালিকা প্রকাশ সম্ভব নয়। নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত তখন থেকেই। তার পরেই জেটলির মন্তব্যে চটেছেন কংগ্রেসের নেতারা। কারণ, অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য জল্পনা উস্কে দিয়েছে যে বিদেশের ব্যাঙ্কে কোন কোন কংগ্রেসি নেতার কালো টাকা গচ্ছিত রয়েছে!
এই অবস্থায় কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন বলেছেন, “কোনও রকম চাপ বা ব্ল্যাকমেল করে আমাদের দমানো যাবে না। কালো টাকা উদ্ধারের অক্ষমতা মোদী সরকার রাজনীতি দিয়ে ঢাকতে চাইছে।” মাকেনের যুক্তি, “ভোটের সময় নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সরকার গঠনের একশো দিনের মধ্যে কালো টাকা উদ্ধার করে দেখাবেন। কিন্তু পাঁচ মাস হয়ে গেলেও পাঁচ টাকাও উদ্ধার করতে পারেননি।” প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, “সাধারণ মানুষ এ রকম মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিলে এত দিনে তাঁর বিরুদ্ধে ৪২০ ধারায় মামলা হতো।”
গত কাল জেটলি ইঙ্গিত দেন তদন্তের পরে ৮০০টি নামের তালিকার মধ্যে ১৩৬ জনের নাম প্রকাশ করা যেতে পারে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, কেন বেছে বেছে নাম প্রকাশ করা হবে? তালিকায় থাকা সবার নাম প্রকাশ করুক সরকার। কালো টাকা নিয়ে কংগ্রেস পাল্টা আক্রমণ শুরু করার পরে বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভি জবাব দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কয়লা কেলেঙ্কারিতে কংগ্রেসের মুখ পুড়েছে। কালো টাকা নিয়ে ওরা নিজেদের মুখ আরও কালো করতে চায় নাকি?” কংগ্রেসকে তাঁর কটাক্ষ, “যাদের মুখ আগেই কালো হয়েছে, তাদের কেউ ব্ল্যাকমেল করে নাকি?”