আমেরিকার দু’মুখো নীতি

পাকিস্তানকে মদত কেন, ক্ষুব্ধ দিল্লি

এক দিকে ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে ২৬/১১ কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলার জন্য অনুমতি দেওয়া। আর্ন্তজাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসের কারখানা নিয়ে সরব হওয়া। অন্য দিকে, পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম আটটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:০৪
Share:

এক দিকে ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে ২৬/১১ কাণ্ড নিয়ে মুখ খোলার জন্য অনুমতি দেওয়া। আর্ন্তজাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসের কারখানা নিয়ে সরব হওয়া। অন্য দিকে, পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম আটটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া। সম্প্রতি ওবামা প্রশাসনের এই দ্বিমুখী আচরণে তাদের পরস্পরবিরোধী নীতিই স্পষ্ট হয়ে উঠছে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি।

Advertisement

গতকালই সরকারি ভাবে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এফ-১৬ বিক্রির বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে ভারত। কিন্তু ভারতের কথা শুনে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের এই বিষয়টি থেকে পিছিয়ে আসবে ওয়াশিংটন, তা-ও মনে করছে না সাউথ ব্লক। তাই ভবিষ্যতে মার্কিন নীতিতে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা হবে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, অসন্তোষ আরও স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করতে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ বার দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ডেমোক্র্যাট সরকারই হোক বা রিপাবলিকান সরকার— আমেরিকার এই দ্বিমুখী নীতি-ই গত দু’দশক ধরে দেখে আসছে ভারত। আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধের সময় থেকেই পাকিস্তানের উপর নির্ভরতা বাড়ে হোয়াইট হাউসের। তখন থেকেই পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ভারতে সন্ত্রাস পাচার নিয়ে নয়াদিল্লির যাবতীয় অভিযোগকে অনেকটাই লঘু করে দেখে এসেছে মার্কিন প্রশাসন। ‘ভাল’ এবং ‘মন্দ’ তালিবান, এমন কী, ‘ভাল’ এবং ‘মন্দ’ সন্ত্রাসবাদীর তত্ত্ব আমেরিকাই খাড়া করেছিল।

Advertisement

পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে মার্কিন নেভি সিলে-র হাতে ওসামা বিন লাদেন হত্যার পরে অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। কিন্তু এখনও পাকিস্তানকে মদত দেওয়ার নীতি থেকে আমেরিকা যে সরে আসেনি, পাকিস্তানকে এফ-১৬ বিক্রির ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের অভিযোগ, এমন একটি সময়ে পাকিস্তানকে এই যুদ্ধবিমান বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন কর্তারা, যখন পঠানকোট তদন্ত নিয়ে তোলপাড় চলছে। জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গিরা যে এই হামলায় যুক্ত, সে ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিয়েছে নয়াদিল্লি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি পাকিস্তানি প্রশাসন। বরঞ্চ সংগঠনের মাথা মাসুদ আজহারকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এই অবস্থায় পাকিস্তানকে যুদ্ধবিমান বিক্রি করার ঘটনায় ভুল সঙ্কেত যাবে বলেই মনে করছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘আমেরিকার যুক্তি, পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ওই বিমান নাকি জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। যুক্তিটি অত্যন্ত হাস্যকর। কেন না, জঙ্গি মারতে বিমান ব্যবহার করার দরকার হয় না।’’ শেষ পর্যন্ত এই সব যুদ্ধবিমান জঙ্গিদের হাতে গিয়েই পড়বে বলে আশঙ্কা বিদেশ মন্ত্রকের এই কর্তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন