প্রতিশ্রুতি কি বাস্তব, এ বার কেজরীকে নিশানা মোদীর

ভোটের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দু’জনই। দিল্লির ভোটে জনসভাগুলিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুলে ধরেছিলেন আর্থিক সংস্কার আর উন্নয়নের কথা। অন্য দিকে বিদ্যুৎ আর জলের বিলে ব্যাপক ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লিবাসীর স্বার্থ দেখার আশ্বাস দিয়ে একের পর এক জনসভা করে গিয়েছেন কেজরীবাল। ফলাফল মোদীর পক্ষে যায়নি। একেবারে ভরাডুবি বললেও কম বলা হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৫
Share:

রি-ইনভেস্ট ২০১৫। বিকল্প বিদ্যুৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

ভোটের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দু’জনই। দিল্লির ভোটে জনসভাগুলিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুলে ধরেছিলেন আর্থিক সংস্কার আর উন্নয়নের কথা। অন্য দিকে বিদ্যুৎ আর জলের বিলে ব্যাপক ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লিবাসীর স্বার্থ দেখার আশ্বাস দিয়ে একের পর এক জনসভা করে গিয়েছেন কেজরীবাল।

Advertisement

ফলাফল মোদীর পক্ষে যায়নি। একেবারে ভরাডুবি বললেও কম বলা হবে। হারের কারণ নিয়ে বিজেপিতে যখন চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ, ঠিক তখনই কেজরীবালের জনমোহিনী প্রতিশ্রুতিগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে অপ্রচলিত বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে তাঁর কটাক্ষ, বিদ্যুতের জন্য অন্য রাজ্যের উপর যাদের নির্ভর করতে হয়, সেই সব দল কী ভাবে দাম ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, বুঝতে পারি না! মোদীর মন্তব্য, “যখনই ভোট হয়, রাজনৈতিক দলগুলি বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলতে থাকে। এ সব নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।”

জনমোহিনী ঘোষণা, ভর্তুকির রাজনীতিতে লাগাতার ছাড়ের বন্যা দেশের অর্থনীতিকে যে কোনও ভাবেই সাহায্য করতে পারবে না, কুর্সিতে বসার পরেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এনডিএ সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্ত সেই পথেই এগোচ্ছে। এমনকী দিল্লির ভোটে বিপর্যয়ের পরে সরকারের বিভিন্ন আর্থিক নীতি নিয়ে যখন দল এবং সঙ্ঘ পরিবারের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে, তখন শনিবারই মোদী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সংস্কারের পথ থেকে কোনও ভাবেই সরে আসবে না কেন্দ্রীয় সরকার। আর আজ এক কদম এগিয়ে কেজরীবালের নাম না করে অর্থনীতিতে এই সব জনমোহিনী ঘোষণার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন মোদী।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর এই সমালোচনার পরেও আপ অবশ্য এখনই কোনও সংঘাতের পথে হাঁটছে না। বরং দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা আশুতোষ সহযোগিতাই চেয়েছেন মোদীর কাছে। তাঁর মন্তব্য, “দিল্লিবাসীকে সস্তায় বিদ্যুৎ দিতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইছি।” তবে কেজরীবালের দল মোদীকে পাল্টা নিশানা না করলেও কংগ্রেস অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। দলের নেতা মণীশ তিওয়ারির মতে, কৃষকদের বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হলো পঞ্জাব। সেখানে অকালি ও বিজেপির জোট সরকার বিনা পয়সায় কৃষকদের বিদ্যুৎ দিচ্ছে। মণীশের মন্তব্য, “মোদীর উচিত পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলের কাছে এ সব প্রশ্ন তোলা।”

বিক্ষোভের মুখে মুখ্যমন্ত্রী

শপথ গ্রহণের পরের দিনেই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। শাহদরা অঞ্চলের ছোটনগর এলাকায় বস্তি উচ্ছেদ নিয়ে রবিবার কেজরীবালের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখান ওই বস্তিরই কিছু মানুষ। অভিযোগ, সময় রামলীলা ময়দানে নতুন সরকার শপথ নিচ্ছিল ঠিক সেই সময়ই বস্তি উচ্ছেদ করছিল পুলিশ। তাঁরা আরও বলেছেন, পুলিশ শুধু ঘরদোরই ভাঙেনি তারা গালিগালাজও করেছে। এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে শিশুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগও উঠেছে। তবে পুলিশ এই সব যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, বস্তিবাসীরা সরকারের জমিতেই বাড়ি তুলছিল। পুলিশ শুধু সেই কাজে বাধা দিয়েছে। কোনও অত্যাচার করেনি। প্রতিবাদীরা এলাকার বিধায়ক রাম নিবাস গয়ালকেও অভিযোগ জানান। তবে গয়াল জানিয়েছেন, ঝুপড়িগুলি ভোটের ঠিক এক দিন আগেই তৈরি হয়েছিল। স্থানীয়রা তাঁকে ১৩ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ জানাতে আসেন। গয়াল আরও বলেছেন যে পুলিশ যখন শনিবার বস্তিবাসীদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল তিনিই তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন। বিক্ষোভকারীদের গয়ালের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল শনিবার। তবে তাঁরা দেখা করেননি বলে গয়ালের অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন