প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদীর থেকে নিজেকে যোগ্য বলে মনে করেন নীতীশ কুমার।
বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম না-করে আজ এমনই মন্তব্য করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা ভোটে তাঁর অন্যতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সম্পর্কে নীতীশ বলেন, “লোকসভায় আমার মতো অভিজ্ঞতা কি তাঁর রয়েছে? কিন্তু তিনি সংসদে নেতৃত্ব দিতে চাইছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অন্যের চেয়ে আমি যথেষ্টই যোগ্য প্রার্থী।”
নরেন্দ্র মোদীকে সমালোচনার কেন্দ্রে রাখলেও, অতীতে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার ইচ্ছা এ ভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি জেডিইউ শীর্ষ নেতা। লোকসভা ভোটের সময় এগিয়ে আসতেই এ বার মোদীর সঙ্গে নিজের তুলনার কথা তুললেন।
এখানেই শেষ নয়। মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও শানিয়ে নীতীশ বলেন, “যে মানুষটি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য সারা দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁর কতটা অভিজ্ঞতা রয়েছে?” স্পষ্ট ভাবে না-বললেও নীতীশ বোঝাতে চেয়েছেন, এর আগে মোদী কখনওই সংসদে নির্বাচিত হননি। তিনি শুধুমাত্র গুজরাত বিধানসভারই সদস্য হয়েছেন।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নীতীশ কুমার আগে একাধিকবার বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নেই। রাজ্য-রাজনীতিতেই থাকতে চান। তাঁর নেতৃত্বে দ্বিতীয় বার ভোটে জিতে বিহারে মন্ত্রিসভা তৈরি হয়েছে। এনডিএ-তে থাকাকালীন নীতীশ বার বারই বলেছিলেন, “বড় দল থেকেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। আমরা ছোট দল, তা-ই আমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও সুযোগই নেই। সেই দৌড়েও আমি নেই।”
এ দিনের মন্তব্যের মাধ্যমে তা হলে কি তৃতীয় বিকল্প ফ্রন্টকেও কোনও ইঙ্গিত দিতে চাইছেন নীতীশ। তাঁর কথায়, “এ বারও ত্রিশঙ্কু সংসদ তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। তাতে তৃতীয় মোর্চা যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।” প্রশ্ন উঠছে, সে ক্ষেত্রে তিনিও কি প্রধানমন্ত্রীর কুর্সির দাবিদার হতে চাইছেন? তার সদুত্তর মেলেনি।
নরেন্দ্র মোদী বিজেপি-র প্রচার কমিটির প্রধান হওয়ার পর থেকেই, তাঁকে ক্রমাগত আক্রমণ করতে শুরু করেছেন নীতীশ। গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, “যাঁর মধ্যে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার মতো সহনশীলতা রয়েছে, তিনিই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।” অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, “আমরা যখন এনডিএ-তে ছিলাম, তখন অটল’জি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। যিনি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে জানতেন। এখন যাঁরা সে জায়গায় পৌঁছতে চাইছেন, তাঁরা দেশকে টুকরো টুকরো করতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে আমরা যেতে পারব না।” এর পরই তিনি এনডিএ থেকে সরে আসেন। রাজ্য সরকার থেকে সরিয়ে দেন বিজেপি-র মন্ত্রীদেরও।
দু’বার বিহার সফরে এসে, নাম না-করে নীতীশকেও বিঁধতে ছাড়েননি মোদী। পাল্টা জবাব দিয়েছেন জেডিইউ শীর্ষ নেতাও। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফের তিনি এনডিএ জোটে ফিরবেন কি না, সে প্রশ্নে নীতীশের জবাব, “মাটির সঙ্গে মিশে যাব, তবু ওই জোটে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”