প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার লোভেই বিজেপি-র হাত ছেড়েছিলেন নীতীশ কুমার এমনই ভাষায় পুরনো ‘বন্ধু’কে আক্রমণ করলেন অমিত শাহ।
বিহারে আজ কার্যত বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে বিজেপি সভাপতি বললেন, “নীতীশজি, আপনি আমাদের দুর্বল ভাববেন না। এ বার টের পাবেন বিজেপি কত শক্তিশালী।” শুধু নীতীশই নন, অমিতের নিশানায় ছিলেন লালু প্রসাদও। রীতিমতো অঙ্ক কষেই যে বিজেপি বিহার বিধানসভার ভোটে লড়তে নামছে, তা এ দিন আরও স্পষ্ট হয়েছে। রাজ্যে বিরোধী শিবিরের দিকে বার বার তোপ দাগছেন দলীয় নেতারা। দু’দশকের শত্রুতা থাকাকালীন বিভিন্ন সমাবেশে নীতীশ, লালুর পরস্পর-বিরোধী বক্তৃতা এবং নীতীশের প্রতিশ্রুতির অডিও রেকর্ডিং সাধারণ মানুষকে শোনানোর ছক আগেই কষা হয়েছে। এ দিন পিছড়ে বর্গের নেতা হিসেবে পরিচিত সমাজবাদী কর্পূরি ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীও ঘটা করে পালন করে প্রদেশ বিজেপি। ওই অনুষ্ঠানেই এসেছিলেন অমিত। লালু-নীতীশের সম্পর্ককে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ওঁরা সমাজবাদী নন, পরিবারবাদী। ক্ষমতালোভী, অহঙ্কারীও। আপনাদের সমর্থন পেলে আমি বিহারে আর কোনও দিন ওঁদের জঙ্গলরাজকে ফিরতে দেব না।” লালু-নীতীশ মুক্ত বিহার গড়তে শাসক জোটকে উৎখাতের ডাকও দেন তিনি।
বক্তৃতায় বার বারই নীতীশ, লালুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অমিত। তাঁর মন্তব্য, “দিল্লির মসনদের স্বপ্ন দেখেই আমাদের সঙ্গে ১৭ বছরের সর্ম্পক ভেঙেছিলেন নীতীশ। একা রাজ্য চালাতে গিয়ে ১৯ মাসে বিহারকে গভীর খাদের পাশে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। এখানে না আছে বিদ্যুৎ, না আইনের শাসন।” অমিত বলেন, “জোট থাকাকালীন নিজেদের দাবি ছেড়েই নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল বিজেপি। প্রতিদানে উনি আমাদের কী দিলেন, সেটা সবাই দেখেছেন।” পটনার ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের বিজেপি নেতা সুশীল মোদী, নন্দ কিশোর যাদব, প্রদেশ সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে। সমাবেশে উপস্থিত জনতাকে অমিত বলেন, “লোকসভা ভোটে বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে ৩১টি বিজেপিকে দিয়েছেন। এ বারও আপনাদের ভোট উন্নয়নের পক্ষেই দেবেন।” তাঁর দল ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরের মধ্যে বিহারকে দেশের মধ্যে ‘পয়লা নম্বরে’ নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অমিত। বিভিন্ন শিল্প গঠনের পাশাপাশি গুজরাত থেকে নিয়ে আসা দুধের উপর ভিত্তি করে কারখানা তৈরির আশ্বাসও দেন।
সমাবেশের পর দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠকও করেন অমিত। দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের কমপক্ষে ১০০ জন সদস্য জোগাড় করার নির্দেশ দেন। সভাপতি জানান, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মী ব্লক থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত কোনও জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন। ভবিষ্যতে তাঁকে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করারও সম্ভাবনা থাকবে।