পাশে নবীনরা, ভোট-কৌশল বদলাচ্ছেন রাহুল

কংগ্রেসের অন্দরে মতবিরোধ নিয়ে গুঞ্জন চলছিল বেশ অনেক দিন ধরেই। ভোটের মুখে সেটা আরও স্পষ্ট হল। প্রচার-কৌশল থেকে শুরু করে প্রার্থী বাছাইয়ের মতো বিভিন্ন বিষয়ে দলের বর্ষীয়াণ নেতাদের সঙ্গে রাহুল গাঁধীর এখন তুমুল মতপার্থক্য তৈরি হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রে খবর, তার জেরে নিজের বাসভবনে এ বার একটি নতুন ওয়ার রুম খুলেছেন রাহুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৪:২৩
Share:

কংগ্রেসের অন্দরে মতবিরোধ নিয়ে গুঞ্জন চলছিল বেশ অনেক দিন ধরেই। ভোটের মুখে সেটা আরও স্পষ্ট হল।

Advertisement

প্রচার-কৌশল থেকে শুরু করে প্রার্থী বাছাইয়ের মতো বিভিন্ন বিষয়ে দলের বর্ষীয়াণ নেতাদের সঙ্গে রাহুল গাঁধীর এখন তুমুল মতপার্থক্য তৈরি হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রে খবর, তার জেরে নিজের বাসভবনে এ বার একটি নতুন ওয়ার রুম খুলেছেন রাহুল।

ফলে গুরুদ্বারা রেকাবগঞ্জ রোডে কংগ্রেসের পুরনো ওয়ার রুম কার্যত এখন ব্রাত্য। মাসখানেক আগে পর্যন্তও নিয়মিত যেখানে সকাল-বিকেল বৈঠক হত, তা-ও এখন বন্ধ। এবং রাতারাতি সেই পরিবর্তনের ধাক্কায় পুরনো ওয়ার রুমের মতোই দলেও এখন অনেকটাই কোণঠাসা অবস্থা দিগ্বিজয় সিংহ, জনার্দন দ্বিবেদী, আহমেদ পটেলের মতো বর্ষীয়াণ নেতাদের।

Advertisement

দলের খবর, ক’দিন আগেই ১২ নম্বর তুঘলক লেনে তাঁর বাসভবনে নতুন ওয়াররুম তৈরি করেছেন রাহুল। আর সেই নতুন কৌশল-কক্ষের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তুলনামূলক ভাবে হরিয়ানার নবীন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাকে। সেই সঙ্গে নতুন ওয়ার রুমে কাজ করছেন প্রিয়ঙ্কা বঢরা, মোহন গোপাল, কনিষ্ক সিংহ, জীতেন্দ্র সিংহরা। এ ছাড়া দলীয় ইস্তাহার রচনার জন্য মাঝেমধ্যে সেখানে যান কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। এঁদের বাইরে একমাত্র মধুসূদন মিস্ত্রী ছাড়া কংগ্রেসের আর কোনও সাধারণ সম্পাদকেরই কার্যত সেখানে প্রবেশাধিকার নেই।

রাহুল-ঘনিষ্ঠদের মতে, দলের সহ-সভাপতি যে ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে চাইছেন, তা নিয়ে কংগ্রেসের বর্ষীয়াণ নেতাদের মতের ফারাক হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। কংগ্রেসের দীর্ঘ দিন ধরে প্রচলিত নিয়মের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে রাহুলেরও অসুবিধা হচ্ছিল। কারণ আঠারো মাসে বছরের সংস্কৃতি থেকে বেরোতে চান রাহুল। সেই সঙ্গে নির্বাচনী প্রচার, কৌশল রচনা ও প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে স্বজনপোষণও বন্ধ করতে চান তিনি। আর সেই কারণে কংগ্রেসের প্রচারের বিষয়টি এ বার রণদীপ-প্রিয়ঙ্কার তত্ত্বাবধানে পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে করানো হচ্ছে। তেমনই দলের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনের জন্য বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষাও বন্ধ করে দিয়েছেন রাহুল।

মজার বিষয় হল, সাবেক কংগ্রেসে সেই ফারাকটাও কিন্তু এ বার নজর দিলেই বোঝা যাচ্ছে। লোকসভা হোক বা বিধানসভা নির্বাচন প্রার্থী বাছাইয়ের সময় কংগ্রেস সদর দফতরে প্রতি বার উপচে পড়ে ভিড়। দিগ্বিজয় সিংহ, জনার্দন দ্বিবেদী, মোহন প্রকাশের মতো সাধারণ সম্পাদকদের ঘরে তিল ধারণের স্থান থাকে না। কিন্তু এ বার একেবারেই সেই ছবিটা উধাও। গত কয়েক দিন ধরে দশ নম্বর জনপথে দফায় দফায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলছে। কিন্তু কংগ্রেস দফতরে কোনও সাধারণ সম্পাদকেরই দেখা মিলছে না।

তা হলে বর্ষীয়াণদের কী হল?

জবাবে রাহুল শিবিরের এক নেতা আজ বলেন, দিগ্বিজয় সিংহ, আহমেদ পটেল, জনার্দন দ্বিবেদীরা ব্যস্ত মুখে ঘুরছেন ঠিকই। কিন্তু আদতে তাঁদের সে রকম কাজই এখন আর নেই। ইস্তেহারের খসড়া তৈরি করে আজ শুধু এক বার বৈঠকে ডেকে নাম-কা-ওয়াস্তে তাঁদের মত জানতে চাওয়া হয়েছে। ব্যস।

কিন্তু প্রশ্ন হল, ভোটের আগে দলে হঠাৎ এই পরিবর্তনে কংগ্রেসের ভাল হবে তো? জবাবে দলের এক সাধারণ সম্পাদক আজ বলেন, সেটা সময়ই বলবে। তবে এটা স্পষ্ট যে, বর্ষীয়াণরা কেউ খুশি নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন