পাসপোর্ট জোচ্চুরি ধরতে নজরদারি বিমান সংস্থারও

বিমানবন্দরে জাল পাসপোর্ট ধরতে বাড়তি সতর্কতার উদ্যোগ শুরু হল। উদ্যোক্তা খোদ ইন্টারপোল। পাসপোর্ট যাচাইয়ের কাজে তারা এ বার বিমানসংস্থাগুলিকেও সামিল করতে চাইছে। পরীক্ষামূলক ভাবে প্রক্রিয়াটি চালাতে প্রথমে বেছে নেওয়া হয়েছে মালয়েশিয়ারই এক বিমানসংস্থাকে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৪ ০২:৫৩
Share:

বিমানবন্দরে জাল পাসপোর্ট ধরতে বাড়তি সতর্কতার উদ্যোগ শুরু হল। উদ্যোক্তা খোদ ইন্টারপোল। পাসপোর্ট যাচাইয়ের কাজে তারা এ বার বিমানসংস্থাগুলিকেও সামিল করতে চাইছে। পরীক্ষামূলক ভাবে প্রক্রিয়াটি চালাতে প্রথমে বেছে নেওয়া হয়েছে মালয়েশিয়ারই এক বিমানসংস্থাকে।

Advertisement

দু’মাসের বেশি হয়ে গেল, কুয়ালা লামপুর থেকে বেজিং যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে ২৩৯ জন যাত্রী সমেত নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স এমএইচ ৩৭০-র বোয়িং বিমান। তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালিয়েও তার সন্ধান মেলেনি। তদন্তকারীদের দাবি, বিমানটিতে জাল পাসপোর্টধারী তিন জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের পাসপোর্টগুলো আদতে অন্য লোকের হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্ট। চোরাপথে বিমানে উঠে তাঁরা কোনও নাশকতা ঘটিয়েছেন, এমন ধারণাও বাসা বেঁধেছে তদন্তকারীদের মনে।

এমনই এক পরিস্থিতিতে পাসপোর্ট পরীক্ষায় আরও কড়াকড়ি বলবৎ করার প্রয়াস। প্রতিটি দেশের বিমানবন্দরে বিদেশগামী যাত্রীদের পাসপোর্ট পরীক্ষা করেন স্থানীয় অভিবাসন-কর্মীরা। কোথাও পুলিশ, কোথাও গোয়েন্দারা। কিন্তু সে পরীক্ষা যে একশো শতাংশ সফল হয়, তা হলফ করে বলা যায় না। শ’য়ে শ’য়ে যাত্রীর পাসপোর্ট সব সময়ে খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয় না। ধরে নেওয়া যায়, পরীক্ষা-বলয়ের এমন কোনও ছিদ্র দিয়েই জাল পাসপোর্টধারী তিন যাত্রী এমএইচ-৩৭০-এ সওয়ার হতে পেরেছিলেন। তাই এ বার শুধু অভিবাসন দফতরের উপরে ভরসা না-রেখে পাসপোর্ট পরীক্ষার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিমানসংস্থাকেও কাজে লাগাতে চাইছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।

Advertisement

এবং পাইলট-প্রকল্পের জন্য তারা বেছে নিয়েছে সেই মালয়েশিয়ারই এক বিমানসংস্থাকে, যার নাম এয়ার এশিয়া। এটি মালয়েশিয়ার সস্তার এয়ারলাইন্স। নতুন ব্যবস্থায় এয়ার এশিয়া-র আন্তর্জাতিক উড়ানের চেক-ইন কাউন্টারে বসেই সংস্থার কর্মীরা জেনে যাবেন, সামনে দাঁড়ানো যাত্রীর পাসপোর্টটি আগে খোয়া গিয়েছিল কি না। কী ভাবে?

বিমানসংস্থা সূত্রের খবর: এই মুহূর্তে ১৬৭টি দেশের চুরি যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া প্রায় চার কোটি পাসপোর্টের তথ্য ইন্টারপোলের কাছে মজুত রয়েছে। ইন্টারপোলের সেক্রেটারি জেনারেল রোনাল্ড কে নোবে সম্প্রতি কুয়ালা লামপুরে এসে জানিয়েছেন, ওই বিশাল তথ্যভাণ্ডারের সফটওয়্যার এয়ার এশিয়া-র নিজস্ব সিস্টেমে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। কোনও যাত্রীর পাসপোর্টের সঙ্গে তার কোনও একটির মিল পেলেই কম্পিউটার জানান দেবে। অর্থাৎ নতুন ব্যবস্থা বলবৎ হলে কুড়িটি দেশের শ’খানেক বিমানবন্দর থেকে এয়ার এশিয়ার যে ছ’শো উড়ান প্রতিনিয়িত ওঠা-নামা করছে, সেগুলির সব যাত্রীর পাসপোর্ট কার্যত দু’-দু’বার যাচাই হবে। এতে বিমানযাত্রার সুরক্ষা আরও বাড়বে বলে ইন্টারপোল-কর্তা আশাবাদী।

এ মাসের শেষে এয়ার এশিয়ায় এই পাইলট-প্রকল্প চালু হওয়ার কথা। সাফল্য মিললে অন্যান্য বিমানসংস্থাকে প্রক্রিয়ায় সামিল করবে ইন্টারপোল। এয়ার এশিয়া-র সিইও টনি ফার্নান্ডেজের কথায়, “পাইলট প্রকল্পের জন্য আমাদের বেছে নেওয়ায় আমরা খুশি। হারিয়ে যাওয়া বা চুরি যাওয়া পাসপোর্ট নিয়ে আমাদের বিমানে উঠে নাশকতা করা কঠিন হবে। যাত্রীরা আরও নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন