বিধানসভা ভোটে অরুণাচলে লড়বেন ৯১ জন কোটিপতি

উপজাতি প্রধান দরিদ্র রাজ্য। সেখানে ৬৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে জঙ্গল। তার পরিমাণ রাজ্যের মোট আয়তনের সাড়ে ৮১ শতাংশের বেশি। প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দা গ্রামে থাকেন। ২০০৯ সালের সরকারি হিসেবে, রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ পরিবার দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করেন। এমনই রাজ্যে সরকারের দায়িত্ব হাতে থাকা রাজনেতাদের সম্পত্তি চমকে দেওয়ার মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৪
Share:

উপজাতি প্রধান দরিদ্র রাজ্য। সেখানে ৬৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে জঙ্গল। তার পরিমাণ রাজ্যের মোট আয়তনের সাড়ে ৮১ শতাংশের বেশি। প্রায় ৮০ শতাংশ বাসিন্দা গ্রামে থাকেন। ২০০৯ সালের সরকারি হিসেবে, রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ পরিবার দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করেন।

Advertisement

এমনই রাজ্যে সরকারের দায়িত্ব হাতে থাকা রাজনেতাদের সম্পত্তি চমকে দেওয়ার মতো।

আগামিকাল অরুণাচল প্রদেশে এ বার লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হবে একই সঙ্গে। বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নামা ১৫৫ জন প্রার্থীর কমিশনে দাখিল করা হলফনামা থেকে পাওয়া গিয়েছে সেই তথ্য। জানা গিয়েছে, বিধানসভার প্রার্থীদের মধ্যে ৬০ শতাংশই কোটিপতি! ২০০৯ সালে তা ছিল ৪১ শতাংশ। ১১ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপরাধের খতিয়ানও রয়েছে।

Advertisement

কমিশন সূত্রের খবর, এ বার অরুণাচলে বিধানসভা ভোটে লড়তে নামছেন ৯১ জন কোটিপতি প্রার্থী। গড়ে তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ ৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা! কংগ্রেস প্রার্থীদের প্রত্যেকের কাছে গড়ে ১১ কোটি ৮৯ লক্ষ, বিজেপি প্রার্থীদের ২ কোটি ৫২ লক্ষ, পিপিএ প্রার্থীদের দেড় কোটি, এনসিপি প্রার্থীদের ২ কোটি ২ লক্ষ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। পিছিয়ে নেই ১৪ জন নির্দল প্রার্থীও। কোন রাজনৈতিক দলের হাত তাঁদের মাথায় না-থাকলেও, গড়ে তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি ৫ লক্ষ টাকা।

কোটিপতি প্রার্থীদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন পালিন কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী টাকাম পারিও। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৮৭ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা। তার পর কংগ্রেসেরই মন্ত্রী পেমা খাণ্ডু। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খাণ্ডুর ছেলে পেমা ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। তাঁর ঘোষিত মোট সম্পদ ১২৯ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তাওয়াং-এর নির্দল প্রার্থী সেরিং তাশি। তাঁর কাছে রয়েছে ৯৬ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তি।

সরকারি হিসেবে, ভোটের ময়দানে লড়তে নামা প্রার্থীদের মধ্যে ১৫ জন প্রার্থীর সম্পদ ১০ লক্ষের নীচে। তাঁদের মধ্যে দরিদ্রতম প্রার্থী হলেন লেকাং কেন্দ্রের বিদা টাকু। হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে সাকুল্যে ৩৫৪০ টাকা রয়েছে! ইয়াচুলির বিজেপি প্রার্থী দেবিয়া তারার অবস্থাও তথৈবচ। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৫০০০ টাকা।

গত বারের ৪৩ জন বিধায়ক এ বারের ভোটেও লড়তে নেমেছেন। গড়ে তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। গত পাঁচ বছরে বাসারের কংগ্রেস বিধায়ক গজেন গাদির সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে সাড়ে ৭০ কোটি টাকা। বামেং-এর কংগ্রেস বিধায়ক কুমার ওয়াইয়ের সম্পত্তির পরিমাণ পাঁচ বছরে বেড়েছে ১৬ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা। ২০০৯ সালের তুলনায়, গত পাঁচ বছরে এই ৪৩ জন বিধায়কের গড়ে সম্পদ বৃদ্ধির হার ১৭৬ শতাংশ। কংগ্রেসের সাত জন, বিজেপির ১ জন, পিপিএ-র ২ জন ও আপ-এর ১ প্রার্থীর বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, মহিলাদের উপরে অত্যাচারের মতো বিভিন্ন অভিযোগে মামলা ঝুলছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়ে, অরুণাচলে মাত্র ৭ জন স্নাতকোত্তর প্রার্থী রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন