বার কাউন্সিলের কোপে মুকেশদের দুই কৌঁসুলি

ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে আগেই অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন দু’জনে। এ বার ওই দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে শো-কজ নোটিস জারি করল ভারতীয় বার কাউন্সিল। গত কাল মাঝ রাতে কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মনন মিশ্র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৫০
Share:

ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে আগেই অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন দু’জনে। এ বার ওই দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে শো-কজ নোটিস জারি করল ভারতীয় বার কাউন্সিল। গত কাল মাঝ রাতে কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মনন মিশ্র।

Advertisement

২০১২ সালে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত চার জনের হয়ে মামলা লড়ছেন এম এল শর্মা এবং এ পি সিংহ নামে দুই আইনজীবী। ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’ নামে যে তথ্যচিত্রটি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে যাবতীয় বিতর্ক শুরু হয়েছে, তাতে যেমন

ধর্ষক মুকেশ সিংহের সাক্ষাৎকার রয়েছে, তেমনই রয়েছে তার আইনজীবীদের মন্তব্যও। ওই তথ্যচিত্রে শর্মা এবং সিংহ এমন কিছু নারী-বিদ্বেষী কথা বলেছেন যা শুনে নড়েচড়ে বসে বার কাউন্সিল। কাল রাতেই তাই জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈঠক ডাকা হয়। তাতে স্থির হয় আগামী সাত দিনের মধ্যে ওই দু’জনকে জানাতে হবে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। সেই সঙ্গেই কাউন্সিল জানিয়েছে, প্রয়োজনে ওই দুই আইনজীবীর লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। তবে যাঁদের মন্তব্য ঘিরে বার কাউন্সিল এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, সেই দুই আইনজীবীর মধ্যে এক জন, এ পি সিংহ অবশ্য আজ জানিয়েছেন, কাউন্সিল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তিনি মেনে নিতে বাধ্য। কিন্তু শর্মা জানিয়েছেন, তিনি তাঁর মন্তব্য থেকে সরে আসবেন না। কারণ তিনি ওই তথ্যচিত্রে ভুল কিছু বলেননি। বার কাউন্সিল তাঁর বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থাই নিক না কেন, তিনি ধর্ষকদের পাশে ছিলেন। ভবিষ্যতেও থাকবেন।

Advertisement

এ দিকে ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’ তথ্যচিত্র এ দেশে নিষিদ্ধ করা নিয়ে আজ ভারত সরকারকে একহাত নিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা শশী তারুর। তাঁর বক্তব্য, তথ্যচিত্রটি সম্প্রচার না করার জন্য ব্রিটিশ সরকারকে অনুরোধ করে ভারতকে অস্বস্তিজনক জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। উল্টে শশী বলেছেন, “প্রতিটি পুরুষের এই তথ্যচিত্রটি দেখা উচিত। তাঁদের জানা উচিত প্রতিটি ধর্ষণ আর শারীরিক হেনস্থার পিছনে কী ধরনের মানসিকতা কাজ করে।” তথ্যচিত্রটি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দোষারোপের পালাও। মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত মুকেশের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ পরিচালক কী ভাবে পেলেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মোদী সরকারের বক্তব্য, ওই অনুমতি পরিচালক লেসলি উডউইন ইউপিএ সরকারের আমলেই পেয়েছিলেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে বলেছেন, তিনি এমন অনুমতিই দেননি। সুতরাং ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’ নিয়ে বিতর্ক থামার নামই নিচ্ছে না।

তবে ভারতে এই তথ্যচিত্র যতই নিষিদ্ধ হোক না কেন, ব্রিটেনের পরে এ বার আমেরিকাতেও দেখানো হবে ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’। আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে পরিচালক উডউইন ছাড়াও থাকবেন অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ এবং ফ্রিডা পিন্টো। পরে নরওয়ে, সুইৎজারল্যান্ড এবং কানাডাতেও তথ্যচিত্রটি দেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন