দস্যু-সর্দার থেকে মহাকাব্য রচয়িতা বাল্মীকির কাহিনিই ভোটারদের শোনাচ্ছেন কামেশ্বর বৈঠা।
সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে সংসদীয় গণতন্ত্রের স্রোতে ফেরা পলামুর বর্তমান সাংসদ সব ভোটারকে বলছেন, “ম্যায় বাল্মীকি হুঁ। পর আপ লোগ মুঝে আভি ভি মুজরিম ঠয়রা রহে হো!”
ঝাড়খণ্ডের উত্তর-পশ্চিমের ওই জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে শেষ মুহূর্তের প্রচারে সে কথারই রেশ টানলেন তৃণমূলের প্রার্থী তথা মাওবাদীদের প্রাক্তন আঞ্চলিক কম্যান্ডার কামেশ্বর। বললেন, “এ বারও জিতব। মাওবাদী হয়েছিলাম মানুষের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে। ভোটের লড়াইয়ে নেমেছি সে কারণেই। আমায় মাওবাদী বলে অপপ্রচার করবেন না।”
খুন, খুনের চেষ্টা, অস্ত্র-আইন, রাহাজানি-সহ তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ৫০টি মামলা রয়েছে। ১৭টি মামলায় জামিন মিলেছে। অন্যগুলি এখনও বিচারাধীন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামাতেই তা জানান কামেশ্বর।
অতীতই এখন তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভোট-প্রচারে আত্মপক্ষ সমর্থনের মতো তিনি বুঝিয়েছেন, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। উল্টে তাদের বিরুদ্ধেই লড়তে নেমেছেন।
২০০৭-এর লোকসভা উপ-নির্বাচনে পলামুর ভোট-ময়দানে নেমেছিলেন কামেশ্বর। পরাজিত হন। গত লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার টিকিটে তিনি ওই কেন্দ্রেরই সাংসদ নির্বাচিত হন। জেলে বন্দি থেকেই ভোটে লড়েছিলেন। সাংসদ হওয়ার পরেও আরও আড়াই বছর জেলে ছিলেন।
২০০৯-এর ভোটের পর গুঞ্জন ছড়িয়েছিল মাওবাদীদের সমর্থনেই জিতেছেন কামেশ্বর। এ বার তাঁকে প্রার্থী করেনি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। ক্ষুব্ধ কামেশ্বর তৃণমূলে যোগ দেন। সূত্রের খবর, প্রাক্তন ওই জঙ্গি নেতাকে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত দলের অন্দর।
পলামুর প্রাক্-নির্বাচনী জনমতেও পিছিয়ে রয়েছেন কামেশ্বর। এলাকার মানুষ বলছেন, তিনি সাংসদ হলেও পলামুতে মাওবাদী উপদ্রব কমেনি। কাজের খোঁজে জেলা ছেড়েছেন অনেকেই। তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন মোদীর গুজরাতেই।