বিহার ভোট মাথায় রেখেই প্রকল্প ঘোষণা জিতনরামের

এগারো মাসের মধ্যে বিহার বিধানসভার নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখেই নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক গোছাতে জেডিইউ সরকার তফসিলি জাতি, উপজাতি ও সংখ্যালঘুদের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করল। কৃষকদের জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হল। আজই রাজ্যে জেডিইউ সরকারের ন’বছর পূর্ণ হল। প্রতি বারের মতো এ বারও সরকারের গত এক বছরের কাজকর্ম এবং আগামী বছরের লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে একটি ‘রিপোর্ট কার্ড’ পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝি।

Advertisement

স্বপন সরকার

পটনা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:১১
Share:

এগারো মাসের মধ্যে বিহার বিধানসভার নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখেই নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক গোছাতে জেডিইউ সরকার তফসিলি জাতি, উপজাতি ও সংখ্যালঘুদের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করল। কৃষকদের জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হল।

Advertisement

আজই রাজ্যে জেডিইউ সরকারের ন’বছর পূর্ণ হল। প্রতি বারের মতো এ বারও সরকারের গত এক বছরের কাজকর্ম এবং আগামী বছরের লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে একটি ‘রিপোর্ট কার্ড’ পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝি। গত আট বছর ধরে এই কাজটি করে এসেছেন নীতীশ কুমার। এ বার তাঁর উত্তরসূরী সেই কাজটি করলেন। তবে গত আট বারের মতো এ বারের কাজটি খুব সহজ ছিল না। ছ’মাস আগের লোকসভা ভোটে তছনছ হয়ে গিয়েছে জেডিইউয়ের তথাকথিত ভোট ব্যাঙ্ক। নরেন্দ্র মোদী ঝড়ে বিহার ভোটের জাতপাতের অঙ্কও এদিক-ওদিক হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য-রাজনীতিতে তাঁর চির-প্রতিদ্বন্দ্বী লালুপ্রসাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে হয়েছে নীতীশকে। সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জেডিইউ নেতৃত্ব, বিশেষ করে নীতীশ যেমন এক দিকে রাজ্য জুড়ে সম্পর্ক যাত্রা শুরু করেছেন, তেমনই দলীয় সরকারকে ব্যবহার করে জাতপাতের বিহারে একেবারে লক্ষ্য স্থির করে প্রকল্প ঘোষণার কাজ শুরু করেছেন।

গত কয়েক দিন ধরেই দলীয়স্তরে আলাপ-আলোচনার পর ঠিক হয় সরকারের ন’বছরে, ন’টি প্রকল্প ঘোষণা করা হবে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই আজ মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝি আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারের রিপোর্ট কার্ডটি প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “তফসিলি জাতি-উপজাতির ছেলেমেয়েরা নিঃখরচায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও পড়াশোনা করতে পারবে। একই সঙ্গে অন্যান্য জাতির মেয়েরাই শুধু এই সুবিধা পাবে।” রাজ্যের ১৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের দিকে তাকিয়ে রাজ্য উর্দু অ্যাকাডেমির জন্য বিশেষ প্যাকেজও ঘোষণা করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি, কৃষি-নির্ভর বিহারের চাষিদের বড় অভিযোগ, সেচের জন্য তাঁরা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ পান না। সে কথা মাথায় রেখেই চাষিরা যাতে সেচের জন্য বছরে অন্তত ছ’মাস সময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পায়, তা সরকার নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে ঘোষিত সংগ্রহ মূল্যের উপরে বাড়তি হিসেবে, রাজ্য সরকার সরাসরি চাষিকে প্রতি কুইন্টালে ৩০০ টাকা করে ভর্তুকি দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এর ফলে চাষিরা, বিশেষ করে ছোট চাষিরা বিশেষ উপকৃত হবে।

Advertisement

তথাকথিত উচ্চবর্ণের দল বিজেপি-র বিরুদ্ধে দলিত-মহাদলিত-সংখ্যালঘু, সব মিলিয়ে ৩০%-এর বেশি ভোটকে এক কাট্টা করার জন্য এটা নীতীশের প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এক জেডিইউ নেতার কথায়: ২০১৫ সালের নভেম্বরে মোদী-ঝড় থাকবে না। বিহার থাকবে বিহারেই। জাতপাতের অঙ্কও থাকবে। সব দিক ভেবেচিন্তেই এই রিপোর্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন