এ ভাবেই খালি পড়ে থাকে অরুণ পার্ক। মঙ্গলবার শিলচরে স্বপন রায়ের তোলা ছবি।
বছরে মাত্র দু’দিন তালা খোলে স্বাধীনতা সংগ্রামী অরুণকুমার চন্দের নামাঙ্কিত পার্কের।
২০০৩ সালে শিলচরের সদরঘাটে তাঁর মূর্তির উন্মোচন করা হয়। কয়েক দিন পর লাগোয়া পুরসভার জমিতে তৈরি করা হয় অরুণ-পার্ক। দোলনা, বসার আসন সব রয়েছে সেখানে। কিন্তু সারা বছর তালা আটকানো থাকে প্রবেশপথে।
অরুণকুমারের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে শুধু পার্ক খোলা হয়, তাঁর মূর্তিতে মালা দেওয়ার জন্য। যেমন আজ সকাল থেকে ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর জন্মবার্ষিকী পালনে ভিড় জমেছিল অরুণ-পার্কে।
বরাক নদীর তীরে ওই পার্কের কাছে শিলচর আদালত, সদরঘাট মন্দির, কাছারি মসজিদ, বাজার। এলাকাটি সারা দিন জমজমাট থাকে। কিন্তু পার্কে বসে বিশ্রামের উপায় নেই। বছরের অন্য সময় কার্যত আড়ালে থাকে অরুণকুমারের মূর্তি।
কংগ্রেসের বীথিকা দেব পুরপ্রধান থাকাকালীন অরুণ-পার্কের উন্নয়নের জন্য অনেক আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাস্তব হয়নি। পরবর্তীকালে সুস্মিতা দেব ঘোষণা করেছিলেন জনসাধারণের জন্য ওই পার্কের দরজা সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলা থাকবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিও পূরণ হয়নি। পরবর্তী পুরপ্রধান তমালকান্তি বণিকের আমলেও বদলায়নি পরিস্থিতি। এ দিন অরুণ-পার্কের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তমালবাবু। তিনি বলেন, “পার্কটি খোলা হলে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কয়েক জন লোক প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে পুরকর্মীর অভাব রয়েছে। তাই সমস্যা মিটছে না।”
পার্কটি নিয়ে কী ভাবছেন বিজেপি পুর-সদস্যরা? ২৮ আসনের পুরসভায় ১৭টিতে জিতে এ বার বোর্ড গঠন করতে চলেছে বিজেপি। কিন্তু অরুণকুমারের মূর্তিতে মালা দিতে দেখা গেল না তাঁদের অনেককেই। বিজেপি নেতাদের মধ্যে কিছু ক্ষণের জন্য হাজির ছিলেন প্রাক্তন পুরসদস্য সঞ্জয় পাল। পুরসভার মুখ্য প্রশাসনিক অফিসার এস এন সিংহও যাননি।
এ নিয়ে অবশ্য ‘অরুণকুমার চন্দ স্মৃতিরক্ষা সমিতি’র কর্মকর্তাদের ক্ষোভ নেই। সৌরীন্দ্রকুমার ভট্টাচার্য, পার্থসারথি দাস বলেন, “প্রতি বছর ১০-১২ জন মানুষই পার্কে আসেন।” তাঁদের আশা, পার্কটি নিয়মিত খোলা থাকলে হয়তো আরও বেশি লোক আসবেন। ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীর বিষয়ে সকলে জানতে চাইবেন। এতেই তাঁদের প্রয়াস সার্থক হবে। চন্দ ভবনটিকে ‘হেরিটেজ বিল্ডিং’ হিসেবে ঘোষণার দাবিও করেন স্মৃতিরক্ষা সমিতির সদস্যরা।