ভোট মিটলেই বিজেপির লক্ষ্য তিন রাজ্য

আপাতত পাখির চোখ লোকসভা ভোট। কিন্তু সেই ভোট শেষ হলেও দেশের আরও তিনটি রাজ্যে কী ভাবে ক্ষমতা দখল করা যায়, আপাতত সেই অঙ্কই কষছে বিজেপি। এই তিন রাজ্য হল দিল্লি, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরাখণ্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৪ ০৪:১৮
Share:

আপাতত পাখির চোখ লোকসভা ভোট। কিন্তু সেই ভোট শেষ হলেও দেশের আরও তিনটি রাজ্যে কী ভাবে ক্ষমতা দখল করা যায়, আপাতত সেই অঙ্কই কষছে বিজেপি। এই তিন রাজ্য হল দিল্লি, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরাখণ্ড।

Advertisement

এই মুহূর্তে শরিকদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি ছ’টি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, ভোটের পর এই তিন রাজ্যেও ক্ষমতায় ফিরে আসা সম্ভব। কারণ, এই তিনটি রাজ্যেই সংখ্যার নিরিখে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিজেপি। কিন্তু ভোটের আগে এই তিন রাজ্যে সরকার গড়ার জন্য কোনও রকম তাড়াহুড়ো করতে নারাজ নরেন্দ্র মোদী। তবে ভোট মিটলেই যাতে সরকার গড়ার কাজটি নির্বিঘ্নে সেরে ফেলা যায়, তার ক্ষেত্র এখন থেকেই প্রস্তুত করে রাখতে চাইছেন তিনি।

এর সূত্র ধরেই আজ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেসের সাংসদ সতপাল মহারাজকে আজ দলে টেনে নিল বিজেপি। স্বয়ং বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ দিল্লিতে দলের সদর দফতরে এসে সতপালের যোগদান পর্ব সুনিশ্চিত করেন। ভোটের আগে দলত্যাগ এ দেশে নতুন নয়। চলতি মরসুমেও একাধিক নেতা, অভিনেতা ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সতপালের যোগ দেওয়ার পিছনে একটি বড় কৌশলও রয়েছে। সেটি হল উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেসের সরকার ফেলে দিয়ে বিজেপি যাতে ক্ষমতা দখল করতে পারে।

Advertisement

৭০ বিধানসভার উত্তরাখণ্ডে সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজন ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন। সেখানে কংগ্রেসের বিধায়ক রয়েছেন মাত্র ৩৩ জন। মায়াবতীর বিএসপি এবং কিছু নির্দলদের সমর্থন নিয়ে সরকার চালাচ্ছে তারা। বিজেপি সূত্রের খবর, সতপালের পাশে রয়েছেন দশ জন বিধায়ক। বিজেপির কৌশল, লোকসভার ভোটপর্ব মিটলে এঁদের বিজেপিতে টেনে নেওয়া, ও সে ক্ষেত্রে অঙ্কের নিয়মেই পড়ে যাবে কংগ্রেসের সরকার। তখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই সরকার গড়তে পারবে বিজেপি। এই হিসেব মাথায় রেখেই ভোটের আগে সতপালকে দলে টানল বিজেপি।

ঝাড়খণ্ডে অঙ্কটা আবার অন্য। সেখানে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্বাধীন হেমন্ত সোরেনের জোট সরকার এমনিতেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। ৮২টি আসনের রাজ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যার থেকে মাত্র এক জন বেশি বিধায়ক নিয়ে সরকার চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি জোট শরিক কংগ্রেসের বিধায়ক চন্দ্রশেখর দুবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আবার হেমলাল মুর্মু এবং বিদ্যুৎ মাহাতো ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার টিকিটে জিতলেও এখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এই অবস্থায় অঙ্কের হিসেবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বিজেপি এখন থেকেই হেমন্ত সোরেন সরকারকে ইস্তফার চাপ দিচ্ছে। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভোট পর্যন্ত ধীরে-চলো নীতি নিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বকে।

আর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। যেখানে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়েও সরকার গড়েনি। কারণ, মোদী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, লোকসভার আগে এমন কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়, যাতে মনে হয় বিজেপি কেনাবেচার রাজনীতি করছে। কিন্তু বিজেপি নেতারা বলছেন, অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার গড়ার সুযোগ পেয়েও যে ভাবে ৪৯ দিনের মাথায় সরকার ফেলে দিলেন, তাতে আপ-এর অনেক বিধায়কই ক্ষুব্ধ। তাঁরা চান বিজেপিতে আসতে। কিন্তু আপাতত তাঁদের কোনও মতে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে। ভোটের পর এক তৃতীয়াংশ বিধায়ক যদি আপ ছেড়ে চলে আসেন, তা হলে অনায়াসেই দিল্লিতে সরকার গড়তে পারবে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন