শিলচরে ধৃত তিন মাওবাদী। সোমবার স্বপন রায়ের তোলা ছবি।
মাওবাদীরা ঘাঁটি গড়েছে বরাক উপত্যকায় এমনই আশঙ্কা করছে পুলিশ, প্রশাসন।
পুলিশকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, আগে বরাককে করিডর হিসেবেই ব্যবহার করত মাওবাদী জঙ্গিরা। এখান দিয়ে সহজেই বাংলাদেশে যাতায়াত করত তারা। আলফা সন্ত্রাস চলাকালীন কাছাড়-করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দিকে নিরাপদ আশ্রয় করে মাওবাদীরা।
গত কাল শিলচর থেকে তিন মাওবাদী জঙ্গিকে গ্রেফতার করার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, কয়েক বছর ধরে বরাকে ঘাঁটি রয়েছে মাও-জঙ্গিদের। বিভিন্ন সংগঠনও তাদের মদত দিয়েছে। যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় করেছে মাওবাদীরা। চা বাগান শ্রমিক বসতিগুলিতে জঙ্গি মতাদর্শ প্রচার করেছে। দেওয়া হয়েছে অস্ত্র প্রশিক্ষণও। এর আগে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে শিলচরে ধরা পড়েছিলেন সিপিআই (মাওবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অনুকূলচন্দ্র নস্কর ওরফে পরেশদা। পুলিশ অতিথিশালার সামনে এক চায়ের দোকান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরেশদাকে জেরা করলেও, মাও সংগঠনের অন্য কারও নাম মেলেনি।
কাছাড়ের এসপি দিগন্ত বরা জানান, মাওবাদীরা যে এখানে বসে কাজকর্ম চালাচ্ছে, বিভিন্ন সূত্রে সেই খবর পাওয়া যাচ্ছিল। গত রাতে রূপাছড়া এলাকা থেকে নরেন ওরাং, অর্জুন ওরাং ও বরসিং টেরন নামে তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। আজ আদালত ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, টেরন অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষিত। আগেও বরাকে কয়েক বার সে ঘুরে গিয়েছে। গত তিন মাস ধরে এখানেই থাকত। পাশাপাশি, মাওবাদী সংগঠনের বিভিন্ন মাপের নেতাও থেকে গিয়েছেন রূপাছড়ার নরেনের বাড়িতে। গোয়েন্দাদের অনুমান, বরাকের কোথাও ওই জঙ্গি সংগঠনের আঞ্চলিক দফতরও রয়েছে। এখন সেটির খোঁজ চলছে।
রাজ্য পুলিশের আইজি এস এন সিংহ বলেন, “চা বাগানই শুধু নয়, অন্য এলাকাতেও জাল ছড়াতে চেয়েছে জঙ্গিরা। দরিদ্র, পিছনের সারিতে থাকা মানুষ তাদের টার্গেট। বরাকের লাগোয়া আন্তর্জাতিক সীমান্তের জন্য মাও-জঙ্গিরা বাড়তি সুবিধাও পাচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত নরেন ও অর্জুনের ঘর থেকে প্রচুর মাওবাদী নথি, বইপত্র মিলেছে। এসপি জানান, কৃষক শ্রমিক মহাসমিতির সঙ্গে মাওবাদীদের যোগসূত্র খুঁজে দেখা হচ্ছে।