মাওবাদী সমস্যা কিছু রাজ্য জিইয়ে রাখছে: সিআরপি

দেশে মাওবাদী সমস্যা না মেটার পিছনে মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলির মনোভাবকেই দায়ী করছে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)। মাওবাদী সমস্যা পুরো মিটুক এটা অনেক রাজ্য চায় না বলেও দাবি সিআরপিএফের ডিজি দিলীপ ত্রিবেদী। গোটা দেশে মাওবাদী হামলা মোকাবিলার মূল দায়িত্বে রয়েছে সিআরপিএফ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০০
Share:

দেশে মাওবাদী সমস্যা না মেটার পিছনে মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলির মনোভাবকেই দায়ী করছে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)। মাওবাদী সমস্যা পুরো মিটুক এটা অনেক রাজ্য চায় না বলেও দাবি সিআরপিএফের ডিজি দিলীপ ত্রিবেদী।

Advertisement

গোটা দেশে মাওবাদী হামলা মোকাবিলার মূল দায়িত্বে রয়েছে সিআরপিএফ। গত দেড়-দু’বছরে ওই বাহিনী সে ভাবে বড় মাপের হামলার মুখোমুখি না হলেও যে ভাবে এখনও মাওবাদীরা চোরাগোপ্তা হামলা-বিস্ফোরণ চালিয়ে যাচ্ছে তা রুখতে না পারার পিছনে রাজ্য সরকারগুলির অসহযোগিতাকেই দায়ী করছেন ওই বাহিনীর শীর্ষ অফিসারেরা। তাঁদের মতে, একেবারে মাওবাদী সমস্যা মিটে যায় এমন চায় না বেশ কিছু রাজ্য। ডিজি দিলীপ ত্রিবেদীর অভিযোগ, “মাওবাদী সমস্যা মিটে গেলে কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্য কমে যাওয়ার আশঙ্কায় কিছু রাজ্য ওই সমস্যা জিইয়ে রাখতে চাইছে। উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সমস্যা না মেটার পিছনেও এটি একটি কারণ।” আর্থিক কারণের পাশাপাশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও ওই সমস্যা জিইয়ে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাহিনী কর্তারা।

পরিসংখ্যানগত ভাবে গত দেড়-দু’বছরে গোটা দেশেই মাওবাদী হামলা অনেকটাই কমেছে। গ্রেফতার ও আত্মসমর্পণ করেছে কয়েকশো মাওবাদী। কেবল ২০১৪ সালেই সিআরপিএফের কাছে ২৬২ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। সাফল্য এলেও বাহিনীর মূল চিন্তার জায়গাটি হল, মাওবাদীদের বিস্ফোরকের জোগান আটকাতে ব্যর্থ হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনগুলি। সিআরপিএফের আই জি (অপারেশন) জুলফিকার হাসানের মতে, “হামলা চালাতে মাওবাদীদের এখন অন্যতম হাতিয়ার হল আইইডি (ইম্প্রোভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস)। একশোটি আইইডি-র মধ্যে একটি যদি খুঁজতে ব্যর্থ হলে সেটিও কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষীর প্রাণ কেড়ে নেয়।” বাহিনীর কর্তাদের মতে, এই আইইডিগুলিতে যে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয় তা বেশ কিছু হাত ঘুরে মাওবাদীদের হাতে পৌঁছয়। বিস্ফোরক যারা বানাচ্ছে সেই কারখানা থেকে শেষ পর্যন্ত মাওবাদীদের হাতে সেগুলি কী ভাবে পৌঁছল তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব রাজ্য তথা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনগুলি চোখ বন্ধ করে থাকায় মাওবাদীরা অবাধে বিস্ফোরক হাতে পেয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

আইইডি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাওবাদীরা যে ভাবে প্রতি পদে নিত্যনতুন উদ্ভাবনী ক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে তাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ সিআরপিএফের কাছে। তাই আইইডি সংক্রান্ত গবেষণার জন্য পুণেতে একটি গবেষণা কেন্দ্র খুলেছে সিআরপিএফ। উপদ্রুত এলাকাগুলিতে জঙ্গি বা মাওবাদীদের কোনও আইইডি উদ্ধার হলেই সে সম্বন্ধে বিস্তারিত ভাবে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পুণের গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য ভাণ্ডারে। যে তথ্য পরে সিআরপিএফের ৪০টি কেন্দ্রকে জানানো হচ্ছে। জুলফিকার হাসান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল গোটা বাহিনী যেন সমস্ত ধরনের অত্যাধুনিক আইইডি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকে।” সে কারণে গোটা বাহিনীকে আইইডি সম্পর্কে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন