মণিপুরেও অস্তিত্ব সঙ্কটে তৃণমূল

প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নেমেই ‘বহিরাগত দল’ হয়েও মণিপুরে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু দলের গোষ্ঠী কোঁদলের জেরে মর্যাদাও হারাতে চলেছে তৃণমূল। কারণ সাত তৃণমূল বিধায়কের মধ্যে ছয় ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ককে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। হাতে রইল এক।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৪ ০৩:৩৯
Share:

প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নেমেই ‘বহিরাগত দল’ হয়েও মণিপুরে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু দলের গোষ্ঠী কোঁদলের জেরে মর্যাদাও হারাতে চলেছে তৃণমূল। কারণ সাত তৃণমূল বিধায়কের মধ্যে ছয় ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ককে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। হাতে রইল এক।

Advertisement

উত্তর-পূর্বে দলের প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে অন্য দলের বিক্ষুব্ধ, দলছুট, টিকিট না-পাওয়া নেতাদের উপরেই ভরসা করেছিল তৃণমূল। তার মাসুল তাদের দিতে হয়েছে অরুণাচল প্রদেশে। এ বার মাসুল গুনতে হচ্ছে মণিপুরে। অরুণাচলে প্রথম বার লড়তে নেমে ২০০৯ সালে এমনই দলছুটদের টিকিট দিয়ে ৫টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। পরে সেই দলছুটরা আবার দল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে যায়। রয়ে যায় তৃণমূলের সাইনবোর্ডটাই। এ বারের অরুণাচল বিধানসভা ভোটে তৃণমূল আর কোনও প্রার্থীই দেয়নি। ২০১২ সালে একই ভাবে দলছুটদের একত্র করে মণিপুরে লড়তে নামে তৃণমূল। স্থানীয় দলগুলিকে পিছনে ফেলে তৃণমূল ৭টি আসনে জেতে। বর্তমান মণিপুর বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও পায়।

তারপর থেকেই অভ্যন্তরীণ বিবাদ শুরু। যার জেরে লোকসভা ভোটের প্রার্থী তথা প্রদেশ সভানেত্রী কিম গাংতের হয়ে সাত বিধায়ক সেই ভাবে নামেননি। সম্প্রতি দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকে ঘোষণা করা হয়, কিং গাংতে প্রদেশ সভাপতি পদে ইস্তফা দিয়েছেন। সে কারণে বিধায়ক কে জয়কিষাণ সভাপতি হয়েছেন। তিনি তাঁর মতো দফতর খুলে কাজও শুরু করেন। কিন্তু কিম পদত্যাগের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘মমতাদি আমায় সভাপতি করেছেন। তিনি না বলা অবধি আমি সরব না।” তিনিও সভাপতি হিসেবে কাজ চালাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে মণিপুর তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন সভাপতি হন বিধায়ক টি শ্যামকুমার। সভাপতি হিসেবে প্রথমেই দলবিরোধী কাজ করার জন্য তিনি জয়কিষাণ, মুখপাত্র টি বিশ্বজিৎ ও বিধায়ক লুখোইকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন। কুঞ্জ সিংহ, ইবোহালবি সিংহ ও শরৎ সিংহকে ‘শো-কজ’ করা হয়। কিন্তু শ্যামের নেতৃত্ব অস্বীকার করে বিধায়করা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। উল্টে জয়কিষাণই শ্যামকুমারকে দল থেকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মুকুলবাবু এ বার বিধানসভার স্পিকার কে লোকেশ্বর সিংহের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানান, দলবিরোধী কাজের জন্য দল ছয় বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছে। জয়কিষাণরা মুকুল রায়ের নির্দেশ খারিজ করে জানান, দলের বিধায়ক ও সদস্যরা তাঁর পক্ষে। তিনি ইতিমধ্যেই শ্যামকুমারের বহিষ্কারের ব্যাপারে বিধানসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন। কিম অবশ্য লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। স্পিকার লোকেশ্বর সিংহ রাজ্যে নেই। ১৮ জুন তাঁর ফেরার কথা। তাঁর ফেরার অপেক্ষায় দু’পক্ষই।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন