নামে অনেক কিছুই আসে যায়! তা না হলে সেই নামকরণ নিয়ে বিবাদ শুরু হয়?
বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নেতাদের মধ্যে যেন একে অপরকে নাম দেওয়া হিড়িক পড়েছে। আর তা নিয়ে জেরবার নির্বাচন কমিশন। প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলা থেকে কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা পড়ছে। যদিও ইতিমধ্যেই তিনটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বাকি অভিযোগের কী হবে, তা নিয়ে কমিশনের কর্তারা চিন্তিত। বিহারের সহকারী মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আর লক্ষ্মণ বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা তা খতিয়ে দেখছি। তারপরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেই অভিযোগ জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হচ্ছে।’’
নামকরণের জেরে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই পটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। দিন কয়েক আগে নির্বাচনী প্রচারে অমিত শাহ লালুপ্রসাদকে ‘চারাচোর’ বলে অভিহিত করেন। পাল্টা দিতে গিয়ে লালুপ্রসাদ তাঁকে ‘নরখাদক’ আখ্যা দেন। এর জেরেই অভিযোগ জমা পড়ে নির্বাচন কমিশনে। দু’জনের বিরুদ্ধেই কড়া মনোভাব নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বেগুসরাই থানায় অমিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। লালুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে পটনায়।
দিন দুয়েক আগে কিষানগঞ্জে এমআইএম নেতা আকবরউদ্দিন ওয়াইসি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘জালিম’ বলে বর্ণনা করেন। সেই সভায় তিনি উত্তেজক ভাষণ দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তার প্রেক্ষিতেই কমিশনের নির্দেশে এফআইআর দায়ের করেছেন কিষানগঞ্জের পুলিশ সুপার রাজীব রঞ্জন। আকবরউদ্দিনকে গ্রেফতার করার জন্য টিম তৈরি করা হয়েছে বলেও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
এফআইআর না হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ধৃতরাষ্ট্র’ বলেছেন লালুপ্রসাদ। দাদরি কাণ্ড-সহ বিভিন্ন ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নীরব থাকায় তাঁকে ‘অন্ধ রাজা’ ধৃতরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন বলে লালুর যুক্তি। এর জেরে গত কালই লালুপ্রসাদের সভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকরা। আরজেডি সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের গোলমাল বেধে যায়। পরিস্থিতি সামল দেন স্বয়ং লালুপ্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘ওদের বিক্ষোভ দেখাতে দিন। বিক্ষোভ দেখালে ওরা জিলিপি পাবে।’’ এমনকী যোগগুরু রামদেবকে ‘পাগল’ বলেও সম্বোধন করছেন লালু। আরজেডি প্রধানের বিরুদ্ধে মুজফ্ফরপুর এবং দ্বারভাঙা এসিজেএম আদালতেও অভিযোগ জমা পড়েছে।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ‘মুঙ্গেরিলাল’ বলে ডাকতে শুরু করেছেন। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ পড়লেও এখনও তাঁর নিষ্পত্তি হয়নি। শুধু এখানেই শেষ নয়, জেলাস্তরে বিভিন্ন নেতারাও স্থানীয় প্রার্থীদের নানা নাম দিচ্ছেন। কেউ অভিযোগ করছেন, তাঁকে ‘... বাচ্চা’ বলছে বিরোধীরা। কাউকে ‘তোলাবাজ’ বলা হয়েছে বলেও অভিযোগ জমা পড়েছে। আপাতত বল কমিশনেরই কোর্টে।