রাশ হাতে নতুন করে দলকে গড়তে চাইছেন লালু

বিহার জয়ের খুশির রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে ঢেলে সাজতে চাইছেন লালুপ্রসাদ। ইলেকট্রনিক এবং ডিজিটাল মাধ্যমের এই যুগে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে সড়গড় লালু নিজের দলকে তৃণমূলস্তর থেকেই আধুনিকমনস্ক ও পেশাদার দল হিসেবেই গড়ে তুলতে চাইছেন।

Advertisement

দিবাকর রায়

পটনা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২৯
Share:

বিহার জয়ের খুশির রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে ঢেলে সাজতে চাইছেন লালুপ্রসাদ। ইলেকট্রনিক এবং ডিজিটাল মাধ্যমের এই যুগে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে সড়গড় লালু নিজের দলকে তৃণমূলস্তর থেকেই আধুনিকমনস্ক ও পেশাদার দল হিসেবেই গড়ে তুলতে চাইছেন।

Advertisement

এ বার আর বাড়ি থেকে নয়, দলীয় অফিস থেকেই দল চালাতে চাইছেন তিনি। দলের সাংগঠনিক নির্বাচনকে সামনে রেখেই গোটা প্রক্রিয়াটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন তিনি। সংগঠনকে মজবুত করতে এক দিকে যেমন ৫০ লক্ষ নতুন সদস্য করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, তেমনই দীর্ঘ দিন ধরে দলীয় পদ আঁকড়ে বসে থাকা কিছু প্রবীণ নেতাকে ছাঁটাই করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৭ জানুয়ারির মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে চান আরজেডি প্রধান।

আজ দুপুরে বীরচন্দ্র পটেল পথে, দলের রাজ্য দফতরে সমস্ত নির্বাচিত বিধায়ক-সাংসদ, জেলা সভাপতি-সহ পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে তাঁর চেনা মোড়কের বাইরে তিনি বেরিয়ে আসেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। দলের নেতাদের তিনি বলেন, ‘‘দুনিয়া বদলেছে। আমাদেরও সেই বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলাতে হবে।’’ রাজ্য-রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জল মাপার চেষ্টা করছেন লালু।

Advertisement

আসলে মন্ত্রিসভায় দুই ছেলের অভিষেক নিয়ে কিছুটা হলেও দলের ‘সিনিয়র’ নেতারা ক্ষুব্ধ রয়েছেন বলে অভিযোগ। লালুপ্রসাদের সামনে তাঁরা এ নিয়ে কিছু বলছেন না। লালু সেটা ভালই জানেন। সে কারণে পাল্টা চাল দিয়ে লালু দলের গ্রামস্তর থেকে কেন্দ্রীয়স্তর পর্যন্ত নেতৃত্বে বদল আনতে চাইছেন। তাতে এক ঢিলে বেশ কয়েকটি পাখি মারা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। দলীয় নেতাদের কাছে লালুপ্রসাদের যুক্তি, ‘‘১৯৯০ সাল থেকে অনেকেই গ্রাম, ব্লক ও জেলাস্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সংগঠন কিন্তু সে ভাবে বাড়েনি। সংগঠনে রদবদল প্রয়োজন।”

দলীয় নেতৃত্বের একাংশের মতে, আসলে লালু দলের কয়েক জন প্রবীণ নেতাকে ‘সাইড লাইন’-এ পাঠাতে চাইছেন। আগামী দিনে তাঁরা যাতে লালু-পুত্রদের জন্য কোনও সমস্যা তৈরি করতে না পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই আগাম ব্যবস্থা। পাশপাশি, তরুণ নেতৃত্বকে এগিয়ে দিতে চাইছেন তিনি। দলের নেতাদের ধারণা, এর ফলে দলের এবং প্রশাসনের কাজ চালাতে লালু পু্ত্রদের কোনও সমস্যা হবে না।

এখানেই শেষ নয়, বিহারের জাতিগত সমীকরণেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন আরজেডি প্রধান। তাঁর মতে, ‘‘এ বার থেকে সমস্ত দলিত সম্প্রদায়কে ‘মহাদলিত’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে আমার এ নিয়ে কথা হয়েছে।’’

এরই পাশাপাশি আরজেডি-র নয়া ভাবমূর্তি তৈরিতেও তৎপর হয়েছেন লালু এবং তাঁর পরিবার। গত কালই আরজেডির নব নির্বাচিত দুই বিধায়ক সরকারি বাংলো দখল করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়াও, আরজেডির এক বিধায়কের বিরুদ্ধে থানার ওসিকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজকের বৈঠকে লালু স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও চার মাস ধরে আমি চাপরাশিদের ফ্লাটে ছিলাম। আমার কোনও সমস্যা হয়নি। বিধায়করা কোনও ভাবেই আইন ও পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করবেন না। কোনও অভিযোগ থাকলে তা নির্দিষ্ট জায়গায় জানান। সরকার কিন্তু দল দেখবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন