ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈরথ থামাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা এ দেশে এসেছিলেন। কিন্তু মোদী সরকারের দাবি, ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির পর দু’দেশই নিজেদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সচেষ্ট। সুতরাং তৃতীয় পক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রপুঞ্জের জম্মু ও কাশ্মীর সেনা পর্যবেক্ষক দলের (ইউএনএমওজিআইপি) আর কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই ওই দলকে দ্রুত দিল্লির সরকারি বাংলো খালি করতে বলেছে বিদেশমন্ত্রক।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন জানিয়েছেন, “ভারতে ওই পর্যবেক্ষক দলের উপস্থিতির যৌক্তিকতা নিয়ে আমাদের যা ধারণা, তার সঙ্গে এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ।” সে জন্যই দিল্লির পুরানা কিলা রোডের যে বাংলোয় বহু বছর ধরে নিখরচায় বসবাস করছিল পর্যবেক্ষক দল, তা খালি করে দিতে বলেছে বিদেশমন্ত্রক। শুধু তা-ই নয়, এত দিন যে সব পরিষেবা বিনামূল্যে পেতেন তাঁরা, সে সবের জন্যও এ বার থেকে মূল্য দিতে হবে তাঁদের। তবে মন্ত্রক জানিয়েছে, পর্যবেক্ষক দল নিজেদের পছন্দমাফিক যে কোনও বেসরকারি বাড়ি ভাড়া নিতে পারে।
এর আগেও বহু বার দিল্লির তরফে এমন দাবি তোলা হয়েছিল। ভারতের বক্তব্য ছিল, জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যা প্রশ্নে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। ভারত ও পাকিস্তান নিজেরাই এই সমস্যার সমাধান করে নেবে। কিন্তু পাকিস্তান সেই ১৯৪৯ সাল থেকেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মধ্যস্থতার পক্ষপাতী। সে সময় করাচি চুক্তির সৌজন্যে সংঘর্ষবিরতি রেখা বরাবর শান্তি বজায় রাখতে পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু তাতেও থামানো যায়নি ’৭১ সালের যুদ্ধ। শেষে অবশ্য সিমলা চুক্তিতে স্থির হয়, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের সমস্যার সমাধান করবে ভারত-পাকিস্তান। সে সময় থেকে মাঝেমধ্যেই ভারত দাবি তুলেছে, পর্যবেক্ষক দলের আর কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। কিন্তু পাকিস্তানের বিরোধিতায় তা কার্যকর করা যায়নি।
এ বার অবশ্য আকবরউদ্দিন যুক্তি দিয়েছেন, “কিছু পরিষেবা পেতে গেলে তার দাম দিতে হয়। ...আর যত দূর জানি, রাষ্ট্রপুঞ্জের অর্থের অভাব নেই। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ারও কারণ নেই।” তবে ঠিক কত তারিখের মধ্যে বাংলো ছেড়ে দিতে হবে, তা এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে জানাননি তাঁরা।