রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন দিগ্বিজয়

নিভৃতে বসে পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ নয়, বরং মাঠে নেমে নেতৃত্ব দিন রাহুল গাঁধী। ভরাডুবির গ্লানি থেকে কংগ্রেসকে টেনে বার করতে আরও সক্রিয় হন তিনি। কংগ্রেস থেকেই এখন এমন দাবি উঠতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে চাপ বাড়াতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য দিগ্বিজয় সিংহ আজ মন্তব্য করেছেন, “অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জেদ থাকলেও, রাহুলের মধ্যে ক্ষমতার জন্য জেদ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৪ ০১:৫৪
Share:

নিভৃতে বসে পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ নয়, বরং মাঠে নেমে নেতৃত্ব দিন রাহুল গাঁধী। ভরাডুবির গ্লানি থেকে কংগ্রেসকে টেনে বার করতে আরও সক্রিয় হন তিনি। কংগ্রেস থেকেই এখন এমন দাবি উঠতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে চাপ বাড়াতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য দিগ্বিজয় সিংহ আজ মন্তব্য করেছেন, “অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জেদ থাকলেও, রাহুলের মধ্যে ক্ষমতার জন্য জেদ নেই। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম লোকসভায় বিরোধী দল হিসেবে তিনিই কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিন।” দিগ্বিজয়ের এই মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক তৈরি করে দিয়েছে।

Advertisement

রাহুল ও তাঁর পরিবারের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ নেতা ছিলেন দিগ্বিজয়। ইদানীং দূরত্ব তৈরি হয়েছে ঠিকই। তবে প্রকাশ্যে রাহুলের সমালোচনা কখনও করেননি তিনি। কিন্তু তাঁর আজকের বক্তব্য দেখে অনেকে এই মানে খুঁজতে শুরু করেছেন যে রাহুলকে কটাক্ষ করছেন এই কংগ্রেস নেতা। ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, শাসক হয়ে ওঠার জন্য রাহুলের মনে জেদ নেই বলে কংগ্রেস সহ-সভাপতির নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন দিগ্বিজয়। কারণ, অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই তো এনজিওগুলিও চালায়।

যদিও বিতর্ক হওয়ায় পরে দিগ্বিজয় ফের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “বোঝাতে চেয়েছিলাম রাহুল ক্ষমতার পিছনে ছোটেন না। কিন্তু তার অন্য ব্যাখ্যা করা ঠিক হবে না।” কংগ্রেসে অবশ্য ভিন্ন মানে করা হচ্ছেও না। বরং দিগ্বিজয়ের বক্তব্যে সায় দিচ্ছেন অনেকেই। তাঁদের মতে, রাহুলের প্রথম ও প্রধান ভুল হল গত দশ বছরে তিনি একে তো সরকারে সামিল হননি, সেই সঙ্গে সংসদেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেননি। শাসক দলের নেতা হিসেবে রাহুল দু’ভাবে তাঁর যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারতেন। মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে কিংবা সংসদে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিয়মিত মত প্রকাশ করে। অথচ ভোটে পরাজয়ের পরেও ঠেকে শিখছেন না তিনি। লোকসভায় রাহুলের পরিবর্তে নেতা করা হয়েছে মল্লিকার্জুন খড়গেকে। আর বিরোধী বেঞ্চের শেষ সারিতে বসছেন রাহুল।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ হল, কংগ্রেসের ভরাডুবির পর দলের মনোবল বাড়াতে সনিয়া গাঁধী যতটা সক্রিয়, রাহুল ততটা নন। সংসদে তাঁকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি। সপ্তাহ খানেক ধরে তিনি বিদেশে ছুটি কাটাচ্ছেন। অথচ মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা ভোট আসন্ন। তা ছাড়া, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস নেতারা সরকারি চাকরিতে নিয়োগ নিয়ে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, রাহুলের উচিত ছিল বিদেশে না থেকে মধ্যপ্রদেশ বা মহারাষ্ট্রে পড়ে থাকা। আদতে সে কথাটাই পরোক্ষে বোঝাতে চেয়েছেন দিগ্বিজয়। রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেননি। উল্টে চেয়েছেন, ‘এনজিও ছাপ রাজনীতি’ ছেড়ে রাহুল এ বার প্রকৃতই কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিন। ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন