ল্যান্ডমাইনে উড়ল জওয়ানদের বাস, নিহত ৮

ছত্তীসগড়ের ধাঁচে এ বার ঝাড়খণ্ডেও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে জওয়ান, ভোটকর্মীদের বাস ওড়াল মাওবাদীরা। আজ বিকেলে দুমকায় ওই জঙ্গিহানায় কমপক্ষে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি আরও ৪-৫ জনের। পুলিশ জানায়, বিকেল ৪টে নাগাদ দুমকার জঙ্গি-অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ৩৩ নম্বর বুথ থেকে ইভিএম নিয়ে একটি মিনিবাসে ফিরছিলেন ভোটকর্মী, জওয়ানরা। সাড়ে চারটে নাগাদ শিকারিপাড়া ব্লকের সরসাজোর গ্রামের কাছে দ্বারকা নদীর রাজবাঁধ সেতুর নীচে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়। রাস্তা থেকে ছিটকে দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। জওয়ান এবং ভোটকর্মী মিলিয়ে সেটিতে ৩১ জন ছিলেন। বিস্ফোরণে পিচরাস্তায় গর্ত হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০০
Share:

শিকারিপাড়ায় আহত জওয়ান। বৃহস্পতিবার। ছবি: এ এফ পি।

ছত্তীসগড়ের ধাঁচে এ বার ঝাড়খণ্ডেও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে জওয়ান, ভোটকর্মীদের বাস ওড়াল মাওবাদীরা।

Advertisement

আজ বিকেলে দুমকায় ওই জঙ্গিহানায় কমপক্ষে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি আরও ৪-৫ জনের।

পুলিশ জানায়, বিকেল ৪টে নাগাদ দুমকার জঙ্গি-অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ৩৩ নম্বর বুথ থেকে ইভিএম নিয়ে একটি মিনিবাসে ফিরছিলেন ভোটকর্মী, জওয়ানরা। সাড়ে চারটে নাগাদ শিকারিপাড়া ব্লকের সরসাজোর গ্রামের কাছে দ্বারকা নদীর রাজবাঁধ সেতুর নীচে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়। রাস্তা থেকে ছিটকে দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। জওয়ান এবং ভোটকর্মী মিলিয়ে সেটিতে ৩১ জন ছিলেন। বিস্ফোরণে পিচরাস্তায় গর্ত হয়ে যায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে আট জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিহতদের মধ্যে তিন জন ভোটকর্মী এবং পাঁচ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ড পুলিশের আইজি (অপারেশন) এম এল মিনা বলেন, “ওই এলাকায় এখনও মাওবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলা চালিয়েছে প্রায় ৫০ জন জঙ্গি। বিস্ফোরণের পর বাসটিতে আগুন ধরে যায়। জওয়ানদের পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ দেয়নি মাওবাদীরা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কয়েক জন জওয়ান জঙ্গিদের দিকে গুলি চালানোর চেষ্টা করেন। এক থেকে দেড় ঘন্টা দু’পক্ষে গুলির লড়াই চলে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় কিছুটা দেরিতে উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। দীর্ঘ ক্ষণ সেখানেই পড়েছিলেন আহত ব্যক্তিরা। পরে, দু’-একটি সংবাদমাধ্যমের গাড়িতে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ছত্তীসগঢ়ে ১২ এপ্রিল একই কায়দায় হামলা চালিয়েছিল মাওবাদীরা। বিজাপুরের কেতুলনা গ্রামের কাছে ল্যান্ডমাইনে ভোটকর্মীদের বাস উড়িয়ে দেওয়া হয়। বিস্ফোরণে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই জগদলপুর জেলার দরভা এলাকায় সিআরপি জওয়ানদের গাড়ির উপর জঙ্গিরা হামলা চালায়। ঘটনায় ৫ জন জওয়ান নিহত হন। মৃত্যু হয় গাড়ির চালকের। দু’টি হামলায় জখম হন ১০ জন।

১৭ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনেও ঝাড়খণ্ডে গিরিডি জেলায় একাধিক মাওবাদী নাশকতার ঘটনা ঘটেছিল। আজ কমিশন জানায়, ঝাড়খণ্ডে তৃতীয় তথা শেষ দফার নির্বাচনে দুমকা, গোড্ডা, রাজমহল ও ধানবাদে বিকেল চারটে পর্যন্ত প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ওই চারটি কেন্দ্রে সবার নজর ছিল দুমকার দুই ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী শিবু সোরেন এবং বাবুলাল মরাণ্ডির দিকে। দু’জনেই ভোট চলাকালীন দুমকার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। শিবু বোকারোর ভোটার। সকাল ৮টা নাগাদ তিনি কপ্টারে বোকারোয় যান। ভোট দিয়ে দুপুরে দুমকায় ফেরেন।

অন্য দিকে, বিহারে চতুর্থ দফায় সাতটি আসনে ভোট কার্যত শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়েছে। ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ। কমিশন জানিয়েছে, বুথে হাঙ্গামা এবং ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগে সুপৌল কেন্দ্রের ইন্ডিয়ান মুসলিম লিগ প্রার্থী মহম্মদ আমানুল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানায়, আজ হাজিপুরে একটি গাড়ি থেকে ১২টি দেশের মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরিমাণ প্রায় ৯২ লক্ষ টাকা। ওই ঘটনায় অভিষেক কুমার এবং মুকেশ নামে সিওয়ানের দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়।

অসমে শেষ পর্যায়ের ভোটে গুয়াহাটি, বরপেটা, মঙ্গলদৈ, ধুবুরি, কোকরাঝাড় ও নগাঁও লোকসভা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ছিল। সন্ধ্যা পর্যন্ত খবর, ভোট পড়ে ৭৭ শতাংশ। ইভিএম বিকল হওয়ায় উত্তেজনা ছড়ায় গোসাইগাঁও, মানকাচর, হাড়ভাঙায়। কমিশন জানায়, গোসাঁইগাঁওয়ের হাড়ভাঙা এলপি স্কুলের বুথে দুষ্কৃতীরা ইভিএম লুঠ করার চেষ্টা করে। পুলিশ বাধা দেয়। দুষ্কৃতীদের গুলিতে পিঙ্কু রাংঘাং নামে এক জওয়ান ঘটনাস্থলেই মারা যান। জখম হন দুই পুলিশকর্মী। তাঁদের কোকরাঝাড় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বকোতে কংগ্রেস ও এআইইউডিএফ সমর্থকদের সংঘর্ষে এক জনের মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন