শ্লীলতাহানির সাক্ষ্য দিতে এসে প্রহৃত নাগা তরুণী

চার মাসের ব্যবধান। ফের নিগ্রহের শিকার উত্তর-পূর্বেরই এক তরুণী। এ বারও ঘটনাস্থল সেই দিল্লি। শ্লীলতাহানির সাক্ষ্য দিতে এসে কোর্ট চত্বরেই অভিযুক্তের বন্ধুদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হল বছর তিরিশের নাগা তরুণীকে। রেহাই পেলেন না তরুণীর পুরুষবন্ধু এবং মহিলা আইনজীবীও। তাঁরা সকলেই উত্তর-পূর্বের বাসিন্দা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০৩:১১
Share:

চার মাসের ব্যবধান। ফের নিগ্রহের শিকার উত্তর-পূর্বেরই এক তরুণী। এ বারও ঘটনাস্থল সেই দিল্লি।

Advertisement

শ্লীলতাহানির সাক্ষ্য দিতে এসে কোর্ট চত্বরেই অভিযুক্তের বন্ধুদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হল বছর তিরিশের নাগা তরুণীকে। রেহাই পেলেন না তরুণীর পুরুষবন্ধু এবং মহিলা আইনজীবীও। তাঁরা সকলেই উত্তর-পূর্বের বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশনের সামনে এক যুবক ওই তরুণীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। তরুণী বাধা দিতে গেলে তাঁকে চড় মারা হয়। চিৎকার শুনে জড়ো হন আশপাশের মানুষ। তাঁরাই অভিযুক্তকে তুলে

Advertisement

দেয় পুলিশের হাতে। জেরায় পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত ইন্দ্র নারায়ণ পেশায় আইনজীবী।

ঘটনার সাক্ষ্য দিতে শুক্রবার দুপুর দু’টো নাগাদ নয়াদিল্লির তিস হাজারি কোর্টে ডেকে পাঠানো হয় নিগৃহীতাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালত চত্বরে প্রবেশ করতেই ওই তরুণী ও তাঁর সঙ্গীদের উদ্দেশে কটূক্তি শুরু করে অভিযুক্তের আইনজীবী বন্ধুরা। ইন্দ্র নারায়ণের বিরুদ্ধে যখন সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে তখনই এজলাসে ঢুকে পড়ে প্রায় ৭০ জন আইনজীবী। ছিঁড়ে ফেলা হয় পুলিশি ফাইল। বিচারকের সামনেই ওই তরুণী ও তাঁর সঙ্গীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ এজলাস থেকে বেরোতেই তাঁদের ঘিরে ধরে অভিযুক্তের আইনজীবী বন্ধুরা। শুরু হয় মারধর। কোনও রকমে পালিয়ে বাঁচেন তাঁরা। তরুণীর মহিলা আইনজীবী নোশী পরে বলেন, “ভেবেছিলাম সহকর্মী ভেবে আমাকে অন্তত ছাড় দেবে। উল্টে চড় মেরেছে। শাসিয়েছে, আইনি লড়াই চালিয়ে গেলে আমারও শ্লীলতাহানি করবে।”

ঘটনার পরেই সব্জি মান্ডি থানায় হেনস্থা ও জাতিগত বিদ্বেষের অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী ও তাঁর সঙ্গীরা। ডিএসপি (উত্তর) সিন্ধু পিল্লাই বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। জাতিগত বিদ্বেষের জেরেই এই ঘটনা কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধেয় উত্তর-পূর্বের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান সব্জি মান্ডি থানার সামনে। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ চলে বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশনের বাইরেও।

এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি দিল্লিতেই পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল অরুণাচলের বাসিন্দা, বছর কুড়ির নিদো তানিয়াকে। কটূক্তির প্রতিবাদে একটি মিষ্টির দোকানের কাচ ভেঙে ফেলেছিলেন তিনি। তার জেরেই খেপে উঠে নিদোর উপর চড়াও হন মিষ্টির দোকানের মালিক ও তাঁর দুই সঙ্গী। ঘটনার পর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশ জুড়ে। উত্তর-পূর্বের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয় গোটা দেশ। তবে পরিস্থিতির যে কোনও বদল নেই, শুক্রবারের ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে দিল আরও এক বার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন