সুষমার টুইটে ফের প্রকাশ্যে বিজেপির দ্বন্দ্ব

প্রকাশ্যে দলের সিদ্ধান্তের বেনজির প্রতিবাদ করে বিজেপির ভিতরের বিরোধটাকেই ভোটের মুখে ফের বাইরে নিয়ে এলেন সুষমা স্বরাজ। আজ সকালে সুষমা দুটি টুইট করেন। একটি টুইটে তিনি কর্নাটকে রেড্ডি ভাইদের বিজেপিতে ফেরানোর বিরোধিতা করেন। আর দ্বিতীয়টিতে হরিয়ানায় বিজেপির শরিক নেতা কুলদীপ বিশনোইয়ের দলে কংগ্রেস নেতা বিনোদ শর্মার যোগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ১০:০১
Share:

প্রকাশ্যে দলের সিদ্ধান্তের বেনজির প্রতিবাদ করে বিজেপির ভিতরের বিরোধটাকেই ভোটের মুখে ফের বাইরে নিয়ে এলেন সুষমা স্বরাজ।

Advertisement

আজ সকালে সুষমা দুটি টুইট করেন। একটি টুইটে তিনি কর্নাটকে রেড্ডি ভাইদের বিজেপিতে ফেরানোর বিরোধিতা করেন। আর দ্বিতীয়টিতে হরিয়ানায় বিজেপির শরিক নেতা কুলদীপ বিশনোইয়ের দলে কংগ্রেস নেতা বিনোদ শর্মার যোগ দেওয়া নিয়ে আপত্তি জানান। বিজেপির শীর্ষ সারির নেতা হয়ে এ ভাবে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার ঘটনা বেনজির। সুষমার এই পদক্ষেপে বেজায় ক্ষুব্ধ দলের সিংহ ভাগ নেতা।

বিজেপির এক শীর্ষ সারির নেতার মতে, আসলে নরেন্দ্র মোদীর যাত্রাভঙ্গ করতে চাইছেন সুষমা। কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পা ফেরার পর এ বার রেড্ডি ভাইদেরও ফিরিয়ে এনে মোদীর হাত শক্ত করাই দলের লক্ষ্য। যাতে কর্নাটকে দলের আসন বাড়ে। আবার হরিয়ানায় আগামিকালই ওম প্রকাশ চৌটালার দুর্নীতি-মামলার শুনানি। যদি চৌটালা আদালত থেকে রেহাই পান, তা হলে বিজেপির শরিক হতে পারেন। কিন্তু তার আগেই বিনোদ শর্মাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন সুষমা।

Advertisement

জেসিকা লাল হত্যাকাণ্ডের আসামি মনু শর্মার বাবা বিনোদ। ওই মামলার এক সাক্ষীর উপরে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই বিজেপি নেতার মতে, বিতর্কিত বিনোদের সঙ্গে বিশনোইয়ের হাত মেলানো নিয়ে সুষমার আপত্তির পিছনে অন্য কারণ আছে। এর পরে চৌটালার সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে অস্বস্তি শুরু হতে পারে মোদী শিবিরে। সুষমা সেটাই চান।

সুষমার এই টুইটের পরেই আজ বিনোদ শর্মার যোগদানের সাংবাদিক বৈঠকটি পিছিয়ে দেন কুলদীপ। সুষমা খুব অল্প বয়সেই হরিয়ানায় মন্ত্রী হয়েছিলেন। হরিয়ানার রাজনীতিতে তিনি এখনও সক্রিয়। সে দিক থেকে প্রকাশ্যে বিরোধিতা জানিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নিজের প্রভাবটাই খাটাতে চাইলেন সুষমা।

কিন্তু লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী তার চেয়েও বড় বিতর্ক উস্কে দিলেন কর্নাটকের প্রসঙ্গ তুলে। দুর্নীতি নিয়ে বিতর্কের জেরে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হয়েছিল ইয়েদুরাপ্পা ও রেড্ডি ভাইদের। এক সময় সুষমার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল, তিনি রেড্ডি ভাইদের সাহায্য নিয়েছেন। রেড্ডি ভাইদের মাথার উপরে হাত রাখা ছবিও তখন খুব প্রচার হয়েছিল। ফি বছর রেড্ডি ভাইদের পুজোতেও তিনি অংশ নিতেন।

এখন দল যখন ফের রেড্ডি ভাইদের ফিরিয়ে আনতে চাইছে, সেই সময় সুষমা প্রকাশ্যে নিজের বিরোধ জানিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, রেড্ডি ভাইদের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং তিনি বিরোধিতা করলেও দলের অন্য নেতারা এই পদক্ষেপ করছেন।

দলীয় সূত্রের মতে, সুষমার ইঙ্গিত আসলে অরুণ জেটলি ও অনন্ত কুমারদের প্রতি। কর্নাটকের নেতা অনন্ত কুমার সুষমার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। জেটলির বিরোধী। রেড্ডি ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগও তাঁর মাধ্যমে হয়েছিল। এখন মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী, অনন্ত কুমার ও জেটলির সম্পর্কও শুধরে গিয়েছে। তাঁরাই এখন রেড্ডি ভাইদের ফিরিয়ে আনতে চাইছেন বলে সুষমার ধারণা। এই গোটা প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখতেই সুষমা প্রকাশ্যে বিরোধিতা করলেন।

ইয়েদুরাপ্পাকে ফিরিয়ে আনা নিয়েও লালকৃষ্ণ আডবাণীদের আপত্তি ছিল। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কোনও নেতাকে প্রশ্রয় দিতে চাননি আডবাণী। কিন্তু তাঁর আপত্তি উপেক্ষা করেই মোদীর উদ্যোগে ইয়েদুরাপ্পা ফিরে আসেন।

দলে সুষমা-বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভার বিরোধী দলনেত্রীর এই পদক্ষেপের পিছনে আডবাণীরও প্রশ্রয় রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন