সায় দিয়েও কংগ্রেস দু’ভাগ বিমা বিলে, উদ্বেগে বিজেপি

রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে সায় দিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু রাজ্যসভায় কি তারা পাশে থাকবে? বিমায় বিদেশি লগ্নি সংক্রান্ত বিল পাশের প্রশ্নে এটাই ভাবাচ্ছে সরকারকে। বিলটি নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে বিরোধ ছিলই। এখন তা যে মাত্রা নিয়েছে, তাতে সংসদের চলতি অধিবেশনে বিলটি পাশ করানো নিয়ে উৎকণ্ঠাতেই থাকতে হচ্ছে সরকারকে। বিজেপি মনে করছে, কংগ্রেস সম্মতি দেওয়ায় বিমা বিলে সিলেক্ট কমিটির সায় ঠেকাতে পারেনি তৃণমূল, সিপিএম, জেডি(ইউ) ও সমাজবাদী পার্টি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৭
Share:

রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে সায় দিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু রাজ্যসভায় কি তারা পাশে থাকবে? বিমায় বিদেশি লগ্নি সংক্রান্ত বিল পাশের প্রশ্নে এটাই ভাবাচ্ছে সরকারকে। বিলটি নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে বিরোধ ছিলই। এখন তা যে মাত্রা নিয়েছে, তাতে সংসদের চলতি অধিবেশনে বিলটি পাশ করানো নিয়ে উৎকণ্ঠাতেই থাকতে হচ্ছে সরকারকে।

Advertisement

বিজেপি মনে করছে, কংগ্রেস সম্মতি দেওয়ায় বিমা বিলে সিলেক্ট কমিটির সায় ঠেকাতে পারেনি তৃণমূল, সিপিএম, জেডি(ইউ) ও সমাজবাদী পার্টি। এ বার রাজ্যসভা অচল করে দিয়ে হলেও ওই বিল পাশ ঠেকানোর ফন্দি আঁটছে ওই চার দলের জোট। কংগ্রেস পাশে থাকলে ওই চার দল তাঁদের ৫০ জন সাংসদের জোরে বিলটির পাশ হয়ে যাওয়া ঠেকাতে পারবে না ঠিকই। কিন্তু সরকারকে চিন্তায় রাখছে রাজ্যসভার সবচেয়ে বড় দল কংগ্রেস। তারাও ছুতোনাতা করে সংসদের চলতি অধিবেশনে বিলটির পথ আটকানোর সুযোগ খুঁজছে।

সিলেক্ট কমিটির বৈঠকে কংগ্রেস বিমা বিলে সায় দিলেও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, মধুসূদন মিস্ত্রী, অম্বিকা সোনির মতো নেতানেত্রীরা মনে করছেন, অন্তত এই অধিবেশনে যাতে সেটি পাশ না হয়, সেই চেষ্টাই করা উচিত কংগ্রেসের। ঘরোয়া আলোচনায় তাঁরা বলছেন, আনন্দ শর্মা ও দিগ্বিজয় সিংহ কর্পোরেট মহলের হয়ে বিলটিকে উতরে দেওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু সরকারকে সুযোগ করে দিয়ে লাভ কী কংগ্রেসের? দলীয় সূত্রের খবর, সনিয়া গাঁধীকেও তাঁরা এ কথা জানিয়েছেন। দলের অর্ধেকের বেশি রাজ্যসভা সদস্যের সই জোগাড় করে সনিয়ার কাছে এ ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়ারও চেষ্টা চলছে।

Advertisement

কংগ্রেসের এক রাজ্যসভা সদস্য বলেন, “বিজেপি বরাবরই আর্থিক সংস্কারের পক্ষে। তবু মনমোহন সিংহের জমানায় তারা বিমা বিলের বিরোধিতা করেছে। আজ কংগ্রেস কেন ভালমানুষি করবে?” ওই কংগ্রেস নেতার মতে, মন্টেক-মনমোহনের সংস্কারের পথে হেঁটে দলের অনেক রাজনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। তাই বিমায় বিদেশি লগ্নি, শ্রম সংস্কারের মতো বিলের বিরোধিতাই করা উচিত।

তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ বলেন, “তৃণমূলের স্পষ্ট বক্তব্য, বিল নিয়ে বিতর্কের সময় রাজ্যসভায় সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে নিয়মানুযায়ী আলোচনা এগোনো যায় না। সেই নিয়মের যেন পালন হয়।” ডেরেকের বার্তাটি স্পষ্ট। তৃণমূল-সহ ওই চার দল বিল নিয়ে আলোচনার সময় ধুন্ধুমার বাধাবে। তার মধ্যে যেন বিল পাশের চেষ্টা না হয়।

রাজ্যসভায় কাল এই বিল নিয়ে সিলেক্ট কমিটির রিপোর্ট পেশ হওয়ার কথা। তার আগে সরকারের এক শীর্ষ সারির মন্ত্রী আজ জানান, সরকার চায় ১৮ তারিখের মধ্যে বিলটি পাশ করাতে। সাতপাঁচ ঝঞ্ঝাটে যদি তা সম্ভব না হয়, তবে যত গন্ডগোল হোক, ভোটাভুটিটা যেন করানো যায়। তাতে হারলেও যৌথ অধিবেশন ডেকে বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকবে। কিন্তু ভোটাভুটি না হলে বিলটি রাজ্যসভাতেই আটকে থাকবে, যৌথ অধিবেশনে নতুন করে তা পেশ করা যাবে না। আগামী সপ্তাহে সোম বা মঙ্গলবার বিলটি নিয়ে রাজ্যসভায় বিতর্কের দিন ধার্য করা হবে। চেষ্টা হবে, দিনের দিনই বিলটি রাজ্যসভায় পাশ করানোর, নিদেনপক্ষে ভোটাভুটি করিয়ে রাজ্যসভা থেকে বিলটিকে মুক্তি দেওয়ার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন