সকালেই ফোন জয়ার, গুজরাতেও সভা করতে তৈরি মমতা

বামেরা সঙ্গ ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করলেন এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। গত কালই একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে জয়ললিতাকে সমর্থনের বার্তা পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তার পরেই আজ সকালে জয়ললিতা ফোন করে ধন্যবাদ জানালেন মমতাকে। আসন্ন নির্বাচনের জন্য জানালেন শুভেচ্ছাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫২
Share:

বামেরা সঙ্গ ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করলেন এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। গত কালই একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে জয়ললিতাকে সমর্থনের বার্তা পাঠিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তার পরেই আজ সকালে জয়ললিতা ফোন করে ধন্যবাদ জানালেন মমতাকে। আসন্ন নির্বাচনের জন্য জানালেন শুভেচ্ছাও।

Advertisement

এক দিকে বামেদের তৃতীয় ফ্রন্ট যখন গোড়াতেই ধাক্কা খেয়ে নড়বড়ে হয়ে পড়েছে, তখন মমতা ফের নতুন উদ্যমে আঞ্চলিক নেতাদের বার্তা পাঠাচ্ছেন। খোলা রাখছেন নির্বাচনোত্তর ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের রাস্তাও। ২০ মার্চ তিনি আমদাবাদে, মোদীর দুর্গে গিয়ে অণ্ণা হজারের সঙ্গে যৌথ ভাবে সভা করবেন।

গুজরাতের সভার আগেই অবশ্য রাজধানীতে সভা করবেন মমতা। এবং সেখানেও অণ্ণা হজারেকে সঙ্গে নিয়েই। ১২ মার্চ রামলীলা ময়দানের ওই সভার মাধ্যমে জাতীয় স্তরে নিজেদের তুলে ধরতে উদ্যোগী মমতা। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ান অবশ্য বলছেন, “মমতার অগ্রাধিকার পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের লড়াই এবং প্রচারে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সে দিকে তিনি সতর্ক নজর রাখছেন।” তবে এটা ঘটনা যে টিম-অণ্ণার সমর্থনে দিল্লি এবং অন্যান্য রাজ্যে তৃণমূলের তৎপরতা ক্রমশ বাড়ছে।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টিকে একটা বড় ধাক্কা দিতে মরিয়া তৃণমূল। এবং এ ব্যাপারে টিম-অণ্ণা তাদের বড় সহায়। অণ্ণার সঙ্গে কেজরীবালের সম্পর্ক বহু দিনই ভাল নয়। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, পূর্ব দিল্লি কেন্দ্র থেকে আপ-এর রাজমোহন গাঁধীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের তরফে দাঁড় করানো হবে বিনোদ কুমার বিন্নিকে। মন্ত্রিত্ব না পেয়ে বিক্ষুব্ধ এই দলীয় বিধায়ককে কিছু দিন আগেই বহিষ্কার করেছেন আপ নেতৃত্ব। আপ-ভোটে ভাগ বসাতে বিন্নিকেই এ বার নামাতে চাইছে টিম-অণ্ণা এবং তৃণমূল। দলের এক নেতার কথায়, “বিজেপি এবং কংগ্রেসের বাইরে যে পরিসরটি রয়েছে, সেটি যাতে কেজরীবাল একচ্ছত্র ভাবে দখল নিতে না-পারেন, সেটা নিশ্চিত করাই টিম-অণ্ণা এবং তৃণমূলের লক্ষ্য।” তবে রাজ্যের বাইরে নিজে থেকে আগ বাড়িয়ে প্রচার কৌশল স্থির করতে চাইছে না তৃণমূল। বরং এ ব্যাপারে টিম-অণ্ণার পরামর্শ এবং লোকবল নিয়েই এগোতে চাইছেন মমতা। দলীয় সূত্রের খবর, দিল্লিতে মোট ৭০টি নির্বাচনী এলাকা রয়েছে এবং এর প্রত্যেকটিতেই নির্বাচনী অফিস খোলার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূলের। এখনও পর্যন্ত ৫৩টি অফিস খোলা হয়েছে। প্রত্যেকটিতে ১৫ জন কর্মী তথা অণ্ণার স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দল থাকছে। দিল্লির প্রার্থীদের মধ্যে প্রাক্তন আইনজ্ঞ বিচারপতি, আমলাদের মুখ দেখা যাবে বলে জানা গিয়েছে।

অসম, ত্রিপুরা, মণিপুরেও আসন পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। দলীয় একটি সূত্রের দাবি, অসমে অগপ-র সঙ্গে আসন সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত। সেখানে পাঁচটি আসনে লড়ার কথা ভাবছে তৃণমূল। মণিপুরে যে হেতু তৃণমূলের ৭ জন বিধায়ক রয়েছেন, তাই সেখানকার দু’টি লোকসভা কেন্দ্রেই লড়বে দল। বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে গুজরাতকেও। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “অণ্ণার বিশেষ অনুরোধে তৃণমূল নেত্রী সেখানে সভা করবেন। তিনটি কারণ রয়েছে আমদাবাদে যাওয়ার। প্রথমত, এটি মোদীল্যান্ড। ফলে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি বার্তা দেওয়া যাবে সেখানে দাঁড়িয়ে। দ্বিতীয়ত, সেখানকার সমতা পার্টি তৃণমূলের সঙ্গে যোগ দিতে চলেছে। তাদের উৎসাহ দিতেও নেত্রীর মঞ্চে থাকা প্রয়োজন। তৃতীয়ত অণ্ণার কথায়, গুজরাতের সঙ্গে তাঁর নিজের রাজ্য মহারাষ্ট্রের নৈকট্য রয়েছে। তাই তিনি চান মমতা একবার গুজরাতে যান।”

দেশজুড়ে মমতার প্রচারের জন্য যে চমকপ্রদ পরিকল্পনটি করা হয়েছে তা হল, পাঁচটি আঞ্চলিক ভাষায় তাঁকে নিয়ে গান। অসমিয়া, মণিপুরি, ভোজপুরি, কাওয়ালি এবং হিন্দিতে স্লোগানধর্মী গান তৈরি করেছে একটি বিজ্ঞাপনসংস্থা। যে গানে বলা হচ্ছে, ‘সচ্চাইকি জঙ্গ লড় রহে হ্যায় হাম/ দিল্লি দেখেগি দিদি কা দম..।”

আপাতত ১২ মার্চ রামলীলায় এই ‘দম’ দেখানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তৃণমূল এবং টিম অণ্ণা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন