আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস, মাদক ও অস্ত্র পাচারের মতো সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ রুখতে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্রুত চুক্তি করতে চাইছে ভারত।
শুধু পাকিস্তানই নয়, সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ আটকাতে সার্ক দেশভুক্ত সমস্ত দেশের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিসটেন্স ট্রিটি (এমএলএটি) করার পথে পদক্ষেপ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বর্তমানে ৩৪টি দেশের সঙ্গে এই চুক্তি রয়েছে ভারতের। তার মধ্যে রয়েছে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মায়ানমার। ভারতের লক্ষ্য সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত বাকি দেশগুলির সঙ্গে ওই চুক্তি দ্রুত সেরে ফেলা। কিছু দিনের ভিতরেই সার্ক দেশগুলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক হতে চলেছে। সেখানে বাকি দেশগুলির সঙ্গে দ্রুত চুক্তি রূপায়ণ করার উপর জোর দিতে চাইছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদ, জাল নোট, অস্ত্র ও মাদক পাচারের মতো অপরাধগুলির ক্ষেত্রে একাধিক দেশের অপরাধীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক কাজ করে। তাই এ সব আটকাতে প্রতিবেশী দেশগুলির সাহায্য প্রয়োজন হয়ে পড়ে। মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপাল-- ভারতের তিন প্রতিবেশী দেশের অপরাধীদের মধ্যে নেটওর্য়াক রয়েছে। এখন ক্ষমতায় এসেই তা ভাঙতে তৎপর হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সঙ্গে ওই চুক্তি সেরে ফেলা সম্ভব হয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে পাকিস্তান ও নেপাল ও আফগানিস্তানের সঙ্গে ওই চুক্তি রূপায়ণ করতে চেষ্টা করছে ভারত। এ বার দ্রুত যাতে ওই চুক্তি রূপায়ণ হয় তার জন্য তৎপর হয়েছেন খোদ রাজনাথ সিংহ। তিনি চাইছেন আসন্ন সার্ক বৈঠকে ওই বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলতে।
মন্ত্রকের দাবি, ওই চুক্তি রূপায়িত হলে দু’দেশের সরকারি ভাবে অপরাধ সংক্রান্ত তথ্যের আদানপ্রদান আরও বাড়বে। বিশেষ করে সন্ত্রাস দমন, জাল নোট চক্র রোখার ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত কার্যকরী বলেই মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ ছাড়া, কোনও মামলার অপরাধী অন্য দেশে ধরা পড়লে তার স্বীকারোক্তি যে দেশে মামলা চলছে সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে ভারতের কোনও অপরাধী প্রতিবেশী দেশে লুকিয়ে থাকলে তাঁকে আটক বা তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশী দেশকে সরকারি ভাবে অনুরোধ করতে পারবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে মন্ত্রকের আশঙ্কা নেপাল বা আফগানিস্তানকে নিয়ে সংশয় না থাকলেও পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে ওই চুক্তি রূপায়িত করবে কিনা তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় রয়েছে খোদ মন্ত্রক কর্তারাই।
তবে চুক্তি হয়ে গেলে পরবর্তী ধাপে বন্দি প্রত্যর্পণের বিষয়টি নিয়ে এগোনো সম্ভব হবে।