জম্মু-কাশ্মীর

সরকারে যেতে নীতি বিসর্জন নয়, হুঁশিয়ারি সঙ্ঘের

জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়তে গিয়ে নীতি বিসর্জন কোনও ভাবেই নয়। পিডিপির সঙ্গে বিজেপির আলোচনার প্রক্রিয়া যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখন এই হুঁশিয়ারি এসেছে সঙ্ঘেরই একাংশের কাছ থেকে। আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার আজ বলেন, বিজেপি ও পিডিপি মিলে যে ভাবে সরকার গড়তে চাইছে, তাতে অনেক প্রশ্ন উঠবে। কোনও ভাবেই সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ কিংবা সামরিক বাহিনীর হাতে বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে অবস্থান লঘু করা উচিত নয় বিজেপির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৯
Share:

জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়তে গিয়ে নীতি বিসর্জন কোনও ভাবেই নয়। পিডিপির সঙ্গে বিজেপির আলোচনার প্রক্রিয়া যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখন এই হুঁশিয়ারি এসেছে সঙ্ঘেরই একাংশের কাছ থেকে।

Advertisement

আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার আজ বলেন, বিজেপি ও পিডিপি মিলে যে ভাবে সরকার গড়তে চাইছে, তাতে অনেক প্রশ্ন উঠবে। কোনও ভাবেই সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ কিংবা সামরিক বাহিনীর হাতে বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে অবস্থান লঘু করা উচিত নয় বিজেপির। ইন্দ্রেশ এখানেই থেমে থাকেননি। বিজেপির সম্ভাব্য সহযোগী পিডিপিকেও কটাক্ষ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, “জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের ইসলামাবাদের পরিবর্তে দিল্লির দিকেই তাকানো উচিত। নজর দেওয়া উচিত বুলেটের বদলে ব্যালটে।”

আরএসএস থেকে বিজেপিতে আসা নেতা রাম মাধব অবশ্য দাবি করেছেন, “সরকার গড়ার সমঝোতা সঠিক পথেই এগোচ্ছে।” তাঁর ব্যাখ্যা, “আরএসএসের সব নেতার জানা নেই, কী দিশায় সমঝোতা হচ্ছে।” জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপির সঙ্গে সমঝোতার অন্যতম কাণ্ডারী রাম মাধবই। বিজেপি ও পিডিপির পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরেই জানানো হচ্ছে, জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত। দুই দলের ঘনিষ্ঠতার প্রতিফলন হিসেবে মেহবুবা মুফতিও ছুটে আসেন দিল্লিতে অমিত শাহের ছেলের বিয়ের ভোজসভায়। দু’পক্ষের আলোচনায় স্থির হয়েছে, ছ’বছরের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী হবেন পিডিপি নেতা মুফতি মহম্মদ সঈদ। উপমুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিংহ।

Advertisement

আদর্শগত ভাবে পরস্পর-বিরোধী দুই দল একসঙ্গে সরকার গড়ার জন্য একটি অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির খসড়াও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে। তবে দুটি বিষয় নিয়ে এখনও পুরোপুরি সমঝোতা হয়নি। বিষয়গুলি হল, সামরিক বাহিনীর হাতে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অনুচ্ছেদ ৩৭০। মুফতি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, অনুচ্ছেদ ৩৭০ কোনও ভাবেই রদবদল করা যাবে না। সেটি বিজেপির পক্ষে মানা কঠিন। তবে সামরিক বাহিনীর বিষয়টিকে নিজেদের আদর্শগত বিষয় হিসেবে দেখছে না বিজেপি। এটি নিরাপত্তার প্রশ্ন। কিন্তু অনুচ্ছেদ ৩৭০ সঙ্ঘ ও বিজেপির আদর্শগত বিষয়। সেটি কী ভাবে অভিন্ন কর্মসূচিতে রাখা যায়, তা নিয়ে শীর্ষ নেতারা আলোচনা করছেন। সব কিছু চূড়ান্ত হলেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুফতির বৈঠক হবে।

কিন্তু আরএসএসের একাংশ মনে করছে, পিডিপি যখন অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে বিজেপির অবস্থান মানতে চাইছে না, এর অর্থ হল, বিজেপিই নিজেদের অবস্থানের সঙ্গে আপস করছে। সেই সূত্র ধরেই আজ ইন্দ্রেশ কুমারের প্রকাশ্য হামলা।

দিল্লিতে বিজেপির ভরাডুবির পরে আরএসএস বিজেপি নেতৃত্বের সমালোচনাও করতে শুরু করেছে। আরএসএসের মুখপত্রে পরোক্ষে মোদী-শাহের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। বিহারে যাতে এই পরিস্থিতি না হয়, তার জন্য এখন থেকেই প্রচারের কৌশলের অংশীদার হতে চাইছে সঙ্ঘ। এই অবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার আগে প্রকাশ্য সমালোচনা।

কিন্তু বিজেপির এক নেতার কথায়, “মানসিক ভাবে বিজেপি ও পিডিপি দুই দলই সরকার গড়তে প্রস্তুত। কিন্তু দুই দলেরই নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। ফলে চেষ্টা হচ্ছে, কোন কৌশলে বিতর্কিত বিষয়গুলিকে অভিন্ন কমর্সূচিতে সামিল করা যায়, যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন