হেমন্ত-সরকারকে সমর্থন নিয়ে তৃণমূলে মতানৈক্য

কয়েক মাস আগেই ঝাড়খণ্ডে সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করেছিল তৃণমূল। এমনই সময়ে গোষ্ঠী কোন্দলের আঁচ ছড়াল দলের অন্দরমহলে। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রাজ্যে কংগ্রেস-জেএমএম সরকারকে সমর্থনের প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূল শিবির। দলের নেতাদের একাংশ জানান, ঝাড়খণ্ড সরকারকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে এ সপ্তাহেই কলকাতায় বৈঠক হওয়ার কথা তৃণমূলের। তার আগেই হেমন্ত সোরেনের সরকারকে সমর্থনের বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূল নেতারা প্রকাশ্যেই পরস্পর-বিরোধী মন্তব্য করছেন। দলে মতানৈক্যের কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের আহ্বায়ক দিলীপ চট্টোপাধ্যায়ও।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০২:৪৬
Share:

কয়েক মাস আগেই ঝাড়খণ্ডে সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করেছিল তৃণমূল। এমনই সময়ে গোষ্ঠী কোন্দলের আঁচ ছড়াল দলের অন্দরমহলে। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রাজ্যে কংগ্রেস-জেএমএম সরকারকে সমর্থনের প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূল শিবির।

Advertisement

দলের নেতাদের একাংশ জানান, ঝাড়খণ্ড সরকারকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে এ সপ্তাহেই কলকাতায় বৈঠক হওয়ার কথা তৃণমূলের। তার আগেই হেমন্ত সোরেনের সরকারকে সমর্থনের বিষয়ে রাজ্যের তৃণমূল নেতারা প্রকাশ্যেই পরস্পর-বিরোধী মন্তব্য করছেন। দলে মতানৈক্যের কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের আহ্বায়ক দিলীপ চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, “সরকারকে সমর্থন করে যাওয়া হবে কি না, ঠিক করবেন নেত্রী। শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়াই দলের কোনও কোনও নেতা এ নিয়ে মুখ খুলছেন। তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।”

লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ডে ৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। জুন মাসে রাঁচি পুরসভার মেয়র নির্বাচনের জন্যও ইতিমধ্যেই নবীন লাকরাকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও লড়বে তৃণমূল। এমনই প্রেক্ষিতে দলের নেতাদের একাংশের দাবি, রাজ্য সরকারের উপর থেকে এখন সমর্থন তুলে নেওয়া হলে, উন্নয়নের কাজ থমকে যাবে। তাতে ভোট-প্রচারে তৃণমূলকেই দায়ী করে প্রচারের সুযোগ পাবে বিরোধীরা। দলের নেতাদের দাবি, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার শক্তি তৃণমূলনেত্রীর রয়েছে। বিধানসভায় বিধায়কদের হিসেবেও তার প্রমাণ আছে।

Advertisement

মতবিরোধ ছড়াচ্ছে কী ভাবে?

মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে সম্প্রতি মন্ত্রিসভা থেকে সরতে হয়েছিল কংগ্রেস মন্ত্রী চন্দ্রশেখর (দদাই) দুবেকে। তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। এ বার ধানবাদ লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থীও হন। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি তিনি নাম না-করেই তোপ দেগেছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক বন্ধু তিরকি, চামরা লিণ্ডার দিকেও। তাঁর কথায়, “আমাদের দলেরই দুই বিধায়ক সরকারের সঙ্গে আঁতাঁত গড়েছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। অনেক আগেই হেমন্তের সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়া উচিত ছিল।”

দুবের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেননি বন্ধু। মান্দারের বিধায়কের মন্তব্য, “সরকারকে কাজ করার একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরকার পরিকল্পনার কথা জানাক। সে সব কাজ করতে না-পারলে সমর্থন রেখে লাভ নেই। তবে ওই সিদ্ধান্ত তো মমতা-দিদিই নিতে পারেন।”

জনতার সমর্থনে এ রাজ্যের বিধানসভায় পৌঁছতে চান বলে রাঁচির জনসভায় বলে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক মাস অপেক্ষা করে তিনি ভোটে যেতে চান, নাকি তার আগেই সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন