হঠাৎ লড়াইয়ে আজসু-নেতা, চিন্তায় ঝাড়খণ্ড বিজেপি

‘সিল্লি বয়’ এর রাজনৈতিক চালে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্যাঁচে পড়ে গেল বিজেপি। সকলকে অবাক করে দিয়ে রাঁচি থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে গেলেন অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন তথা আজসু-র সভাপতি সুদেশ মাহাতো। রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ করেই প্রার্থী হিসেবে ভোটের ময়দানে সরাসরি নেমে পড়ায় রাঁচি কেন্দ্রের অনেক হিসেব ওলোটপালোট হয়ে যেতে পারে বলেই রাজনীতিকদের ব্যখ্যা। আজ দুপুরে মনোনয়ন পত্রও জমা দিয়েছেন সুদেশ।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৪ ০৫:৩৮
Share:

সুদেশ মাহাতো

‘সিল্লি বয়’ এর রাজনৈতিক চালে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্যাঁচে পড়ে গেল বিজেপি। সকলকে অবাক করে দিয়ে রাঁচি থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে গেলেন অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন তথা আজসু-র সভাপতি সুদেশ মাহাতো। রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ করেই প্রার্থী হিসেবে ভোটের ময়দানে সরাসরি নেমে পড়ায় রাঁচি কেন্দ্রের অনেক হিসেব ওলোটপালোট হয়ে যেতে পারে বলেই রাজনীতিকদের ব্যখ্যা। আজ দুপুরে মনোনয়ন পত্রও জমা দিয়েছেন সুদেশ।

Advertisement

সিল্লির তিন বারের বিধায়ক সুদেশ। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। এখানে তাঁর সম্বন্ধে একটি কথা প্রচলিত। তা হল ‘আনপ্রেডিকটেবল’। শেষ মুহূর্তে তিনি তুরুপের তাস খেলে দেন। যার জেরেই তিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এবারেও অনেকটা তেমনই করলেন সুদেশ। প্রথম থেকেই বলেছিলেন, তাঁর দল লোকসভায় প্রার্থী দেবে। কিন্তু তিনি নিজে যে ভোটে দাঁড়াবেন তা ঘুণাক্ষরেও কাউকে বুঝতে দেননি। শেষ পর্যন্ত গত কাল বিকেলে রাঁচি আসন থেকে নিজের প্রার্থী হওয়ার কথা তিনি ঘোষণা করেন। আজ দুপুরে মনোনয়ন পত্রও জমা দিয়েছেন। পরে দলীয় নেতাদের নিয়ে নিজের বাড়িতেই ছোট একটি সভা করেন সুদেশ। বলেন, “ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়টি ঠিক ছিল না। কিন্তু দেখলাম, ক্যাপ্টেন মাঠে না নামলে দলের অন্যান্য খেলোয়াড়রা উৎসাহ পাবে না।”

তাঁর এই মাঠে নামা কংগ্রেসের থেকেও বিজেপিকে বেশি অসুবিধায় ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ বিজেপি রাঁচি থেকে প্রার্থী করেছে রামটহল চৌধুরিকে। তিনি শেষ বার ১৯৯৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে জেতেন। ২০০৪ সালে তিনি কংগ্রেসের সুবোধকান্ত সহায়ের কাছে হেরে যান। তার আগে অবশ্য রামটহল তিন বারের সাংসদ ছিলেন। মাহাতো সম্প্রদায়েরও নেতা ছিলেন তিনি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে শেষ এক দশক তাঁকে রাজনীতির ময়দানেই দেখা যায়নি। এ বছর বিজেপির হাওয়া রয়েছে। ফলে রামটহলকে কংগ্রেস প্রার্থী সুবোধকান্তের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

কেন সুদেশ হঠাৎ লোকসভায় দাঁড়ালেন? রাজনীতিকদের ব্যাখ্যা, জেএমএম-বিজেপি বিরোধে সুদেশ কার্যত বিজেপি-র সঙ্গেই ছিলেন। হেমন্তের সঙ্গে যাননি। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব কিন্তু সুদেশকে কোনও পাত্তাই দেননি। সহযোগী হিসেবে কোনও আসন আজসুকে ছাড়তেও রাজি হয়নি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সেই অপমানের শোধ তুলতেই লোকসভা ভোটের ময়দানে সুদেশের আবির্ভাব। রাজ্য-রাজনীতির কারবারিদের ব্যাখ্যা, সুদেশ দাঁড়ানোয় মাহাতো ভোট তো ভাগাভাগি হবেই। এমনকী সিংহভাগ মাহাতো ভোট সুদেশ টেনে নিয়ে যাবেন। কারণ মাহাতো সম্প্রদায়ের মধ্যে এই মুহূর্তে সুদেশের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। একই সঙ্গে রাঁচি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সিল্লি ও হাটিয়া আজসুর দখলে। তামার ও খিজরি বিধানসভায় শেষ বার সামান্য ব্যবধানেই হেরেছেন আজসু প্রার্থীরা। ফলে রাঁচিতে এ বার বিজেপি আর আজসু-র লড়াই থেকে কংগ্রেস ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে। এমনকী সুদেশও যদি অঘটন ঘটিয়ে জিতে যান তা হলেও অনেকেই অবাক হবেন না।

সুদেশ যে বিজেপিকে চিন্তায় ফেলেছে তা এদিন ধরা পড়েছে রাজ্য বিজেপির মিডিয়া সংযোজক প্রদীপ সিংহের কথাতেও। তিনি বলেন, “মানুষ অবশ্য ভোট দেবেন বিজেপিকে। কোনও ব্যক্তি বিশেষকে নয়। তবে এটা ঠিকই যে আজসুর জায়গাগুলিতে আমাদের রণকৌশল বদলাতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন