Anuttama Banerjee

প্রতি মুহূর্তের খবরাখবর ফেসবুকে দিতে হবে, এমন আসক্তি কাটানোর উপায় জানালেন অনুত্তমা

আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ১২:৪৩
Share:

জীবনের বিভিন্ন খবরাখবর সমাজ মাধ্যমে দিয়ে ফেলার আসক্তির সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

‘লোকে কী বলবে’-র প্রতিটি পর্বে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। নিচ্ছেনও। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবন এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সব ছুৎমার্গ, সামাজিক চাপ যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে সেই সব বিষয় নিয়েই ‘লোকে কী বলবে’-র প্রতিটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে, যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই, আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। পৃথা বাস্কি অনুত্তমার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘জীবনে ভালমন্দ যা-ই ঘটছে, তা হোয়াট্সঅ্যাপ স্টেটাসে জানান দেওয়া ও প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সারা ক্ষণ মনে হতে থাকে কিছু না কিছু পোস্ট করি। বেশ কিছু গোঁড়া ও পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার মানুষের অভদ্র আচরণ, কটূক্তির জবাব দিতে আমি ওদের চিন্তাধারার প্রতি অপমানমূলক ও ব্যঙ্গাত্মক স্টেটাস পোস্ট করি। শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে নানা অনুপ্রেরণামূলক স্টেটাস পোস্ট করি। আমি মুক্ত হতে চাই মাত্রাতিরিক্ত প্রদর্শনের এই আসক্তি থেকে। আমার অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে এ সবের পিছনে।’

সমাজমাধ্যমের এই যুগে আমাদের মধ্যে অনেকেই অনেক বেশি প্রদর্শনমূলক হয়ে উঠেছি। কেউ সেটা উপলব্ধি করতে পারেন, কেউ পারেন না। উপলব্ধিটাই কিন্তু আপনাকে এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে। অনুত্তমা বলেন, ‘‘ভাবনা আসে, তাগিদ আসে আর এই তাগিদের প্রকাশ ও তাগিদের জন্মের মাঝখানে কিন্তু দাঁড়িয়ে রয়েছেন পৃথা নিজেই। যদি মনে হয় আপনার মধ্যে তাড়না এলেও আপনি তা প্রকাশ করবেন না, সেটা কিন্তু আপনার হাতেই রয়েছে। একমাত্র এই প্রবণতা আটকাতে পারেন নিজেই। আমরা নিশ্চয়ই অনেক সময়ে উত্তেজিত হয়ে যেতে পারি, প্রভাবিত হয়ে যেতে পারি, আমাদের রাগ হওয়াটাও স্বাভাবিক, তবে নিজেকে একটু সামলাতে শিখুন। কাউকে সরাসরি কিছু না বলে ফেসবুকে বা হোয়াটস্অ্যাপে তাকে উদ্দেশ্য করে স্টেস্টাস দিয়ে দিলে কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয় না। এতে শুধু আমাদের মনে সাময়িক আরাম হয়। আপনার একটা স্টেটাস পড়েই যদি তাঁদের বাঁকা মানসিকতার বদল হয়ে যেত, তা হলে কিন্তু তাঁরা এমন কথা কখনও বলতেন না। আদতে কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা সমস্তটাই বৃথা যায়। ক’টা মানুষের মধ্যে আপনি স্টেস্টাস দিতে পরিবর্তন আনতে পারবেন বলুন তো? এর পরিবর্তে সত্যিই কিছু বদল আনতে চাইলে কী কী গঠণমূলক পদ্ধিতে তা সম্ভব, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। যাঁরা সমাজমাধ্যমে অনুপ্রেরণামূলক ভিডিয়ো বানান, তাঁদের ভিডিয়ো আপনি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করত নিতে পারেন। আমাকে এখনই জানান দিতে হবে, এই মানসিকতায় বদল আনা দরকার। কী যায় আসে বলুন তো, আপনার সঙ্গে প্রতিনিয়ত যা ঘটছে, তা সকলকে না জানালে? কিছুটা তো আমরা নিজেদের মধ্যে ধারণও করতে পারি। দুর্ভাগ্যবশত সমাজমাধ্যম আবেগ ধারণের ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে আমাদের থেকে। নিজেকে এতটা উন্মোচিত করার কি খুব বেশি প্রয়োজন আছে? আমরা এখন যা মনে করছি, কিছু বছর পর সেটাকে সমর্থন তো না-ও করতে পারি। তখন কিন্তু নিজেকে বড্ড বোকা মনে হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন