প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গ পাওয়া এমনিই জটিল। তার উপরে যে ক’টি ক্ষেত্রে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়, তার মধ্যে অনেকগুলিই শরীরের সঙ্গে ঠিকমতো খাপ খাওয়াতে পারে না। তার ফলে মৃত্যু হয় সংশ্লিষ্ট রোগীদের।
এই কারণেই শরীরের কোষ-কলা থেকে নতুন অঙ্গ তৈরি করা যায় কি না, সেই চেষ্টায় রয়েছেন দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি গার্টনার ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা একটি নতুন পন্থা আবিষ্কার করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, ডিএনএ দিয়ে শরীরের কোষ-কলাকে জুড়ে কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির পথে হাঁটা হচ্ছে। গবেষকদের ব্যাখ্যা, আঠার রেখার উপরে বালি কিংবা রাংতার গুঁড়ো ছিটিয়ে যে ভাবে ছবি আঁকা হয় (গ্লিটার পেইন্টিং), অনেকটা সেই একই কায়দায় ডিএনএ-র উপরে কোষ বসিয়ে এই কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির পথে হাঁটা হচ্ছে। কোষ-কলাগুলিকে ঠিক জায়গায় ধরে রাখতে ডিএনএ আঠার কাজ করবে।
এই কাজে এক এক ধরনের কোষের জন্য এক এক ধরনের ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছে। তার ফলে কোন কোষের কোথায় অবস্থান তা নির্দিষ্ট করে বুঝতে পারা যাবে।
গার্টনার ল্যাবরেটরিতে তিন-চার ধরনের কোষ দিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, এই মডেল সফল হলে আরও অনেক ধরনের কোষের উপরেই এই কাজ করা যাবে। প্রাথমিক ভাবে কাজটির লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন ধরনের কোষ-কলার বেড়ে ওঠা নিয়ে গবেষণা। কিন্তু গবেষকদের আশা, এই প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করলে সেটা কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করা যাবে। সেগুলির উপরে নতুন ধরনের ওষুধও পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা যাবে। পরীক্ষাগারের ইঁদুরের থেকে এই ধরনের অঙ্গের উপরে ওষুধ প্রয়োগ করলে তা আরও ভাল ভাবে বোঝা যাবে।
তবে গার্টনারের বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, এটা অনেক বড় সময়ের প্রকল্প। কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করা আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা অন্তত আগামী এক দশকের আগে বলা যাবে না।