শাড়ি পরে টেক্কা দিন সাহেবি কেতাকে! ছবি : এআই সহায়তায় প্রণীত।
আলমারিতে সাহেবি বা ওয়েস্টার্ন পোশাকের কমতি নেই। অথচ বড়দিনের পার্টিতে যাওয়ার আগে পোশাক খুঁজতে গিয়ে হয়রান। পার্টিতে পরার মতো জমকালো জিনিস নেই! প্রায় সবই ক্যাজ়ুয়াল! সেও বহু বার পরা। উৎসবে-অনুষ্ঠানে একটু অন্য রকম পোশাক পরতে কার না মন চায়। সে ক্ষেত্রে বড়দিনের জমকালো সাজ হিসাবে কি শাড়ি পরা যেতে পারে?
বড়দিনের সাজ ভাবলে সাহেবি পোশাকের কথা মনে আসে প্রথমে। তার কারণও আছে। বড়দিনের উদ্যাপন পাশ্চাত্য দেশগুলি থেকেই এ দেশে এসেছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কোট, প্যান্ট, স্টকিংস, কেতাদুরস্ত সোয়েটার না পরলে বড়দিনের সাজ সম্পূর্ণ হবে না। সাজতে পারলে শাড়ি পরেও দিব্যি ক্রিসমাসের পার্টিতে যাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, ভিড়ের মধ্যে আলাদা হয়ে সাজে টেক্কাও দেওয়া যায় বাকিদের।
বড় দিনে শাড়ির সাজ কেমন হতে পারে?
এমন শাড়ি বাছুন যেটি বড় দিনের রঙের সঙ্গে বা উৎসবের রঙের সঙ্গে মেলে। তাতে যদি নানারকম ফাঙ্কি এবং উজ্জ্বল প্রিন্ট থাকে তবে তো কথাই নেই। নীচের শাড়িটি যেমন উজ্জ্বল নীল রঙের উপর মেটালিক প্রিন্ট। সঙ্গে একটি সবুজ জ্যাকেট আর মাথায় ক্রিসমাসের টুপি পরে নিলেই বড় দিনের পার্টি লুক সম্পূর্ণ।
ঐতিহ্যবাহী প্রিন্ট যেমন কলমকারি, গুজরাতি প্রিন্টও বেছে নেওয়া যেতে পারে। চওড়া পাড় থাকলও অসুবিধা নেই। শাড়ি পরার কায়দায় সামান্য বদল আনলেও অন্য রকম লুক তৈরি হতে পারে। সঙ্গে পরে নিতে পারেন চেনা লেদার বা টুইডের জ্যাকেট আর পায়ে থাকুক শীতের বুট।
অরগ্যাঞ্জা শাড়িতে হালকা সিকুইনের কাজ, রং নীল কালির মতো। সেই শাড়িও হতে পারে ক্রিসমাস পার্টির স্মার্ট ওয়্যার। সিকুইনের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বা কন্ট্রাস্ট কোনও হালকা রঙের জ্যাকেট বা কোট পরে নিন। গয়না হোক বোল্ড তবে হালকা।
সাদামাঠা সাদা শাড়ি। তার প্রেমিকা কম নেই। শৌখিনীদের একটা অংশ সাদা শাড়ি পরে সর্বত্র যেতে ভালবাসেন। সে ক্রিসমাস হোক, ৩১ ডিসেম্বরের রাত হোক বা বিয়েবাড়ি। এই পোশাক তাঁদের জন্য। সাদা কালোর রংমিলান্তি চিরকালীন। তাঁর সঙ্গে এখানে গায়ে স্কার্ফের মতো করে জড়িয়ে নেওয়া হয়েছে ঠাসা কাজের কালো শাল। সঙ্গে কালো সোয়েটার বা জ্যাকেট। হাতের স্টাইলিশ ব্যাগটিও কিন্তু লুক সম্পূর্ণ করেছে। এই পোশাক বড়দিন কিংবা বছর শেষের সপ্তাহান্তের পিকনিকের জন্যও আদর্শ হতে পারে।
অ্যাসেমেট্রিক কাট নিয়েও পরীক্ষা করা যেতে পারে। ছবিতে যেমন গুজরাতি বাঁধনি কাজের সর্ষে হলুদ শাড়িটি পরানো হয়েছে একই রঙের অ্যাসেমেট্রিক কাটের ব্লাউজ় দিয়ে। এর সঙ্গে এক রঙা উলেন শ্রাগ বা কোট পরলেও ভাল লাগবে।
ক্রিসমাসে লাল শাড়ির তুলনা হয় না। এখানে সেই লাল শাড়িকেই স্মার্ট বানিয়েছে সেটি পরার ধরন। আঁচল ঘুরিয়ে সামনে এনে চওড়া বেল্ট দিয়ে আটকে নিয়ে উপরে চাপিয়ে নিন মাননসই জ্যাকেট। বাকি কথা বাকিরা বলবে।
ক্রিসমাসে সবুজ রঙের শাড়িও বছে নিতে পারেন। সঙ্গে স্টেটমেন্ট পিস হিসাবে পরুন একটি মেটািক বেল্ট। শীতের রাতে এর সঙ্গে যেকোনও জ্যাকেট পরে নিন। তাতে পার্টির লুকে কোনও বদল আসবে না।
শাড়ি কতটা স্মার্ট ভাবে পরা যায়, তা এই ছবি দেখলে বোঝা যায়। কালো রঙের রাজস্থানী কুইল্ট জ্যাকেটের সঙ্গে লাল সুতির শাড়ি পরা হয়েছে খানিকটা পাতিয়ালা প্যান্ট বা ধুতির আদলে। শাড়ির কুঁচি ছেড়ে না রেখে গুঁজে দেওয়া হয়েছে। আঁচল গলায় জড়িয়ে নেওয়া হয়েছে ‘কাউল নেক’এর আদলে।
এ বছরের ট্রেন্ডিং কালার ছিল ব্রাউন। নানা ধরনের খয়েরি এবং বাদামির শেড। আর পার্টির মরসুমে আরও একটি রং পরার কথা বলছেন পোশাকশিল্পীরা। শ্যাম্পেন কালার। নীচের শাড়িটি সেই শ্যাম্পেন রঙের। সাধারণ প্লিট করে পরা শাড়ির সঙ্গে কালচে রুপোলি ব্লাউজ় এবং অক্সিডাইজ়ের গয়না পরানো হয়েছে। তার সঙ্গে মডেল পরেছেন একটি বাদামি রঙের লং কোট। আভিজাত্য এবং কেতা দুই-ই স্পষ্ট এই পোশাকে।
সোজা কথায়, বড়দিনের পার্টি হোক বা ৩১ ডিসেম্বরের উদ্যাপন। শাড়ি কখনওই ব্রাত্য থাকতে পারে না। বরং শাড়ি স্মার্টনেসে অনেক সাহেবি পোশাককেও টেক্কা দিতে পারে।