ত্বকের তারুণ্য ফিরবে, ব্রণ দূর হবে, ঘরে বসে কী ভাবে এলইডি থেরাপি করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
ত্বকের পরিচর্যা করার নানা পদ্ধতি এসে গিয়েছে এখন। বয়সকালেও ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখার নানা পন্থা রয়েছে। এসে গিয়েছে বিভিন্ন রকম ডিভাইসও। গালে বা নাকের পাশে গজিয়ে ওঠা ব্রণ দূর করতে ইলেকট্রিক প্যাচও রয়েছে। তেমনই আরও এক পদ্ধতি নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে এখন, যা হল এলইডি লাইট থেরাপি। লাল, নীল, হলুদ বা সুবজ আলোকরশ্মি মুখে ফেলে তা দিয়ে ত্বকের ক্ষত মেরামত করাই এর কাজ। সূর্যের কড়া রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বক, ব্রণের দাগ বা জৌলুসহীন ত্বক— সবেরই সমাধান লুকিয়ে রয়েছে এই এলইডি থেরাপির মধ্যে। আর এই থেরাপি করাতে সব সময় যে সালোঁয় ছুটে যেতে হবে, তা-ও নয়। এলইডি মাস্ক মুখে পরে নিলেই হবে।
এলইডি থেরাপিতে ত্বকের কী লাভ?
এলইডি আলো খুব সহজে এবং অনেক কম সময়ে ত্বক মেরামত করতে পারে বলে মনে করেন চর্মরোগ চিকিৎসকেরা। সহজে এই থেরাপি করার জন্য এলইডি আলো দেওয়া মুখোশ বেরিয়ে গিয়েছে এখন। সেই মুখোশে নানা রঙের আলো লাগানো আছে। মুখে পরে সুইচ অন করলে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো ত্বকে ঢুকবে এবং ত্বকের ক্ষত মেরামত করবে। আলোকরশ্মি ত্বকে ঢুকে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়াবে। ফলে ত্বকের মৃতকোষ দূর হবে। ত্বক অনেক বেশি সতেজ ও ঊজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সূর্যের অতিবেগনি রশ্মিতে ত্বক পুড়ে গেলে সেই পোড়া দাগও দূর করা যাবে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোক রশ্মিতে।
কোন আলোর কী কাজ?
এলইডি মুখোশে মূলত লাল, নীল, হলুদ ও সবুজ আলো থাকে।
লাল আলো ত্বকে ঢুকে কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিন তৈরি করে। এই আলো ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং বলিরেখার সমস্যা দূর করে। ত্বকে তারুণ্যের দীপ্তি ধরে রাখতে এই আলোর থেরাপি করা হয়।
নীল আলোর কাজ হল ব্রণর সমস্যা দূর করা। চামড়ার নীচে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থির নিঃসরণ কমিয়ে দেয় এই আলো। এই গ্রন্থি থেকে তেল বেরিয়েও ত্বকের তৈলাক্ত ভাব বাড়িয়ে তোলে। তা ছাড়া নীল আলো ত্বকের প্রদাহ কমাতে পারে। র্যাশ বা ফুস্কুড়ির সমস্যা থাকলে তা দূর করতেও কার্যকরী নীল আলোর থেরাপি।
এলইডি আলোর মুখোশ থেকে ত্বকে সরাসরি আলো ঢুকবে। ছবি: ফ্রিপিক।
সবুজ আলো ত্বকের কালো ছোপ, হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করতে পারে। ত্বকের বয়স কমাতেও এই আলো উপযোগী। ‘অ্যান্টি-এজিং’ থেরাপির জন্যও এই আলোর ব্যবহার হয় অনেক ক্ষেত্রে।
হলুদ আলোর কাজ হল ত্বকের প্রদাহ দূর করা। ত্বককে আর্দ্র ও নরম রাখতে সাহায্য করে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের হলুদ আলো। রুক্ষ ও খসখসের ত্বককে সতেজ করে তুলতে এই আলোর থেরাপি করা হয়।
সতর্কতা
এলইডি আলোর থেরাপি নিজে করলে তার নিয়ম জেনে নিতে হবে। মুখোশ একটানা ২০ মিনিটের বেশি পরা যাবে না। থেরাপির আগে সানস্ক্রিন বা কোনও ক্রিম, তেল, মেকআপ লাগানো থাকলে তা তুলে নিতে হবে। ত্বকে স্ক্রাবিং করলে বা রোম তোলার পর পরই এই থেরাপি করবেন না। সোরিয়াসিস, কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের মতো চর্মরোগ থাকলে এই থেরাপি করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।