দু’সপ্তাহে দুই প্রসূতি ও সদ্যোজাতের মৃত্যু, উদ্বেগ

দু’সপ্তাহেরও কম সময়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে দুই প্রসূতি এবং দুই সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগ, প্রসূতিদের যথাযথ শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা না হওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৬
Share:

দু’সপ্তাহেরও কম সময়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে দুই প্রসূতি এবং দুই সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগ, প্রসূতিদের যথাযথ শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা না হওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে। একইভাবে সদ্যোজাতদেরও সঠিক দেখভাল না হওয়ার নানা শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য সরকারি ভাবে গাফিলতির অভিযোগ স্বীকার করেনি। যদিও, সূত্রের খবর কী কারণে প্রসূতি এবং সদ্যোজাতদের মৃত্যু হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য দফতরের পরিদর্শক দল আলিপুরদুয়ারে আসবে।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘এই মৃত্যুগুলির পেছনে এখনও পর্যন্ত চিকিৎসকের গাফিলতির ঘটনা তদন্তে উঠে আসেনি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ২২ মার্চ এক প্রসূতি পুত্র সন্তান জন্ম দিয়ে মারা যান। তিন দিন বাদে হাসপাতালে একটি সদ্যজাতর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গত ২৮ মার্চ মৃত্যু হয় আরও এক সদ্যোজাতর। গত ২ এপ্রিল মৃত্যু হয় এক প্রসূতির। এদের পরিবারের তরফে হাসপাতালের সুপারের কাছে গাফিলতির অভিযোগ জমা পড়েছে। পর পর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ ‘আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চ’ এবং ‘মানবিক মুখ’ নামে দুই সংগঠন বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও পাঠিয়েছেন বলেও দাবি।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চের পক্ষে ল্যারি বসু এবং মানবিক মুখের সম্পাদক রাতুল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘যে ভাবে প্রসূতি ও সদ্যোজাতদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। নার্সিংহোমগুলিকে সুবিধে করে দিতেই সরকারি হাসপাতলে গাফিলতি হচ্ছে কিনা খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন। সব ক’টি মৃত্যুর ঘটনার পেছনে চরম গাফিলতি রয়েছে।’’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এক জন প্রসূতির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। সেই রিপোর্ট এখনও জেলায় এসে পৌঁছয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বিষয় গুলি নিয়ে তদন্ত করার জন্য অন্য জেলা থেকে তদন্তকারীরা আলিপুরদুয়ারে আসবেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার রেজাউল মিনাজ।

চিকিৎসকের অভাবের কারণে চাপের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা সুপার রেজাউল মিনাজ। সুপার বলেন, ‘‘হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে শয্যার সংখ্যা ৬৫ টি। তবে প্রতিদিন সেখানে প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক প্রসূতি ভর্তি হন।’’ খোদ সুপার সহ মোট তিন জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। জেলা হাসপাতালের হিসাবে ৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা। সুপারের দায়িত্বে থাকার ফলে তাকে হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজে দিন ভর ব্যস্ত থাকতে হওয়ায় মাত্র দু’জন বিশেষজ্ঞকে প্রসূতি বিভাগ সামলাতে হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে যে পরিকাঠামো রয়েছে, তার যথাযথ ব্যবহারে অনীহার কারণে ঘটনাগুলি ঘটেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন