Green Fungus

Green fungus: ভারতে ধরা পড়েছে গ্রিন ফাঙ্গাস, এই রোগের উপসর্গগুলি জেনে রাখুন

অ্যাস্পারগিলাস নামক এক ছত্রাক থেকে হয় গ্রিন ফাঙ্গাস বা অ্যাস্পারগিলোসিস। এই ছত্রাক পাওয়া যায় বাড়ি বাইরে এবং ভিতরে— দু’জায়গাতেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২১ ১২:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের পর এ বার আতঙ্ক দানা বাঁধছে 'গ্রিন ফাঙ্গাস' ঘিরে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে ইনদওরে করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তি গ্রিন ফাঙ্গাস-এ আক্রান্ত হন। চিকিৎসার ভাষায় এই রোগ ‘অ্যাস্পারগিলোসিস সংক্রমণ’ নামে পরিচিত।

Advertisement

৩৪ বছরের যে যুবকের শরীরে গ্রিন ফাঙ্গাস বাসা বাঁধে, সম্প্রতি করোনা থেকে সেরে উঠেছিলেন তিনি। প্রায় ২ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু তার ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফের জ্বর আসে তাঁর। সেই সঙ্গে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে থাকে। প্রথমে তাঁর অবস্থা দেখে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বলে সন্দেহ করেছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই যুবক গ্রিন ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইনদওরের শ্রী অরবিন্দ ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস থেকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে মুম্বইয়ে স্থানান্তরিত করা হয় চিকিৎসার জন্য।

গ্রিন ফাঙ্গাস হওয়ার কারণ

Advertisement

বাড়ির বাইরে এবং ভিতরে অ্যাস্পারগিলোসিস নামে এক ছত্রাক সর্বত্র পাওয়া যায়। আমাদের সকলেরই শরীরে হাওয়ার মাধ্যমে এই ছত্রাকের ক্ষুদ্রকণা রোজ প্রবেশ করে। কিন্তু কোনও কারণে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা যদি কম থাকে, তাহলে এই ছত্রাকের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ফুসফুসে কোনও ধরনের সংক্রমণ হয়ে থাকলেও এই রোগ হওয়া সম্ভব। তবে আমেরিকার সিডিসি’র তথ্য অনুযায়ী এই রোগ একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়াতে পারে না।

কার হতে পারে

সিডিসি’র তথ্য অনুযায়ী মানুষের শরীরের রোগের উপর নির্ভর করে কোন ধরনের অ্যাস্পারগিলোসিস তাঁকে আক্রমণ করবে। যাঁদের অ্যাজমা বা সিস্টিক ফাইব্রোসিস রয়েছে, তাঁদের এবিপিএ (গ্রিন ফাঙ্গাসের একটি রূপ) হতে পারে। যাঁদের টিবি’র মতো ফুসফুসের রোগ রয়েছে তাঁদের ‘ফাঙ্গাস বল’ বা অ্যাস্পারগিলোমাস হতে পারে। যাঁদের সিওপিডি রয়েছে, তাঁদের পালমোনারি অ্যাস্পারগিলোসিস হতে পারে। যাঁদের কোমো থেরাপি চলছে বা অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে, তাঁদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম থাকতে পারে। তেমন কোনও মানুষের ‘ইনভেসিভ অ্যাস্পারগিলোমাস’ হতে পারে। খুব মারাত্মক ইনফ্লুয়েনজার রোগী যাদেঁর হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়, তাঁদের মধ্যেও এই ধরনের গ্রিন ফাঙ্গাসের রূপ দেখা গিয়েছে।

উপসর্গ কী

একেক ধরনের গ্রিন ফাঙ্গাসের একেক রকম উপসর্গ। অ্যাজমার মতোই এবিপিএ’র ক্ষেত্রে শ্বাস প্রশ্বাসে অসুবিধা, কাশি, আবার খুব মারাত্মক ক্ষেত্রে জ্বরও আসতে পারে। ফাঙ্গাস বলের ক্ষেত্রে কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পালমোনারি অ্যাস্পারগিলোসিসের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, ওজন কমে যাওয়া, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা যাবে। ইনভেসিভ অ্যাস্পারগিলোসিসে উপসর্গগুলো আলাদা করা মুশকিল। কারণ সাধারণত এই রোগীদের আগে থেকেই নানা রকম শারীরিক জটিলতা থাকে। জ্বর, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা যেতে পারে যখন সংক্রমণ ফুসফুস থেকে দেহের অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।

কী করে আটকাবেন

সিডিসি’র নির্দেশিকা অনুযায়ী এই বিরল রোগ আটকানোর উপায় খুব ধুলো-ময়লার জায়গায় না যাওয়া। গেলেও এন৯৫ মাস্ক পরে যাওয়া। সেখান থেকে ফিরে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত-পা ধোওয়া। যেখানে অনেকদিন ধরে জল জমিয়ে রাখা হয়, সে সব জায়গায়ও এড়িয়ে যাওয়া শ্রেয়। নিজেকে পরিষ্কার থাকতে হবে। ভাল করে সাবান দিয়ে স্নান করে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন