ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে কলকাতাতেও

সোমবার মহানগরীতে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৮। বুধবার তা বেড়ে দাঁড়াল ৬৯। ৪৮ ঘণ্টায় ১১ জন নতুন ডেঙ্গি রোগী ধরা পড়ায় রীতিমতো চিন্তিত কলকাতার পুর-কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার ১৬টি বরোর স্বাস্থ্য দফতরের এগজিকিউটিভ অফিসারদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স করলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:১৯
Share:

রক্ত পরীক্ষা। রোগ যাচাই। ছবি: এএফপি।

সোমবার মহানগরীতে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৮। বুধবার তা বেড়ে দাঁড়াল ৬৯। ৪৮ ঘণ্টায় ১১ জন নতুন ডেঙ্গি রোগী ধরা পড়ায় রীতিমতো চিন্তিত কলকাতার পুর-কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার ১৬টি বরোর স্বাস্থ্য দফতরের এগজিকিউটিভ অফিসারদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স করলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।

Advertisement

গত দু’বছর শহরে ডেঙ্গি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রে ছিল। এ বার কেন তা হঠাৎ বাড়ল, তা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে এ দিন। আগে শহরে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা ছিল কত, তা জানতে তথ্য সংগ্রহ বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে পুর-অফিসারদের। বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলি থেকে প্রতিদিন পুর-কর্মীরা সংক্রামক রোগী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন বলে দাবি পুরসভার। সেই মতো শহরে কোথায় কত ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গি রোগী রয়েছেন, তার তথ্য পাওয়া যায়। সেই রোগীদের বাড়ি গিয়েও এলাকা পরিদর্শন করা হয় বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি।

তা সত্ত্বেও এ বার ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া সংক্রমণ বাড়ায় ডায়াগনস্টিক ক্লিনিক, চিকিৎসকের চেম্বারের উপরে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার স্বার্থে রোগ ও রোগীর পূর্ণাঙ্গ তথ্য রাখতে ডায়াগনস্টিক ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের চেম্বারের উপরে আলাদা করে নজরদারি চালাবেন পুরকর্মীরা। ২০১২ সালে শহর জুড়ে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যায় ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছিল। তার পরে গত দু’বছর ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ মেনে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তারা। গত দু’বছরে মশা নিবারণে সাফল্যের পরে এ বারও গত আট মাসে ওই দু’টি রোগ তাঁরা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন বলে দাবি পুর-কর্তৃপক্ষের। সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতিটা বদলে যায়। নানা এলাকা থেকে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের খবর আসতে শুরু করে। কেন হঠাৎ সংক্রমণের মাত্রা এত বাড়ল, তা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে অফিসারদের থেকে রিপোর্ট তলব করেন মেয়র ও মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য)।

Advertisement

এ দিন সব বরোর অফিসারদের আলাদা করে প্রশ্ন করেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের এলাকায় মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কী কাজ হয়েছে, জানতে চান মেয়র। কোন ওয়ার্ডে গত সাত দিনে কত জন ওই আক্রান্ত হয়েছেন, তার খোঁজও নেন মেয়র। পরে মেয়রের দাবি, শহর জুড়ে মশা বাহিত রোগ নিবারণে প্রতিনিয়ত কাজ চলছে। সতর্ক করা হচ্ছে নাগরিকদেরও। মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ জানান, আজ, শুক্রবার থেকে ১৬টি বরোতেই একটি করে মেডিক্যাল ক্যাম্প শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া শহর জুড়ে ৬৩টি স্বাস্থ্য সচেতনতা শিবির হচ্ছে। সেখান থেকে মাইকে প্রচার চলবে। মশাবাহিত রোগ নিবারণে কী করা উচিত, তা জানানো হবে শহরবাসীকে।

এতদিন কেন পুরসভা সচেতনতা ছড়াতে এতটা সক্রিয় হয়নি, বিরোধীরা কিন্তু সেই প্রশ্ন তুলেছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে এখন পুর-স্বাস্থ্য বিভাগের লোকেদের সাদা অ্যাপ্রন পরে ঘুরতে দেখা যায়। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তাঁদের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জমা জল দেখে এবং কখনও-সখনও ওষুধ ছড়িয়ে ওই কর্মীরা দায় সারেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। সচেতন করার কোনও কর্মসূচি পুরসভার নেই বলেও অভিযোগ বিরোধীদের। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগে আমল দিতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement