উন্নত হয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। বেড়েছে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা, হাসপাতালের সংখ্যাও। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে পরিষেবা এত দামি যে গরিব মানুষ যেতে পারেন না। তাই তেরো বছরের কিশোরীকেও দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে ধর্না দিতে হয় হাসপাতালের সামনে। কিন্তু চোখপ্রাপকদের তুলনায় চোখ দান করার লোকের সংখ্যা কম হওয়ায় তিন বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকতে হয় তাকে।
‘‘কিন্তু সংবিধানে উল্লেখিত স্বাস্থ্যের অধিকারের অর্থ তো রোগের চিকিৎসার অধিকার পাওয়া। আর তা ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সমান হওয়ার কথা।’’ বৃহস্পতিবার শহরের এক হোটেলে ক্যালকাটা চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথাই জানালেন শঙ্কর নেত্রালয়ের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব একা সরকারের ঘাড়ে না ঠেলে বাণিজ্যিক সংস্থা, গোষ্ঠী এবং চেম্বার অব কমার্সের মতো ব্যবসায়িক সংগঠনগুলিকেও এগিয়ে আসার কথা বলেন তিনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরিষেবা দামি হওয়ায় গরিব মানুষ যে এর সুবিধা নিতে পারেন না, তা স্বীকার করেন
আমরি হাসপাতালের গ্রুপ সিইও রূপক বড়ুয়া। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে বেসরকারি সংস্থাগুলিও সরকারের সাহায্য করতে পারে। কিন্তু তা হলে সরকারকে নীতি পরিবর্তন করতে হবে। ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইনও বদলাতে হবে।’’
অনুষ্ঠানে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের আসার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের প্রধান চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র জানান, নানা দেশ থেকে মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে আসেন, কম দামে ওষুধ পান, আবার ভারতেই প্রতি বছর মোট জনসংখ্যার ২৪ শতাংশ চিকিৎসা করাতে গিয়ে পথে বসছেন। ৭০ শতাংশ মানুষ চিকিৎসার ব্যয় বহন করছেন নিজেরাই। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জেলায় জেলায় আইটিইউ, ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান, ডায়ালিসিস ইউনিট, ইমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ড চালু করে উন্নত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে বলে দাবি সুব্রতবাবুর।