রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে বড় এক কাপ ধোঁয়া ওঠা কালো কফি নিয়ে বসে তৃণা। চুমুক দিতে দিতে চোখ বুলিয়ে নেয় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে। এক ঝলক দেখে নেয় দেশ বিদেশের খবর। আজকের দিনটাও ঠিক এ ভাবেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু স্মার্টফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখেই চমকে উঠল তৃণা। বলছে কী? সে একজন সাইকোপ্যাথ! মানছে সকালে কালো কফি না খেলে দিন শুরু হয় না। কিন্তু তাই বলে সে সাইকোপ্যাথ? কফির সঙ্গে আবার এ সবের কী সম্পর্ক? অস্ট্রিয়ার ইনসবার্ক ইউনিভার্সিটির সাইকোলজির গবেষক ক্রিস্টিনা স্যাজিওগলু জানিয়েছেন, গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কালো কফি, তেতো চকলেট, তেতো পানীয় যারা বেশি পছন্দ করেন, তারা নাকি আসলে সাইকোপ্যাথ! মেকিভেলিয়ানিজম, স্যাডিজম, নারসিসিজম নামের গালভরা সব রোগের শিকার তারা।
এক হাজার মানুষের পছন্দ নিয়ে দুটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন ক্রিস্টিনা। যাদের বয়স ৩৫ বছরের আশেপাশে। প্রথম পরীক্ষায় তাদের হাতে খাবারের একটা লম্বা তালিকা ধরিয়ে দেন ক্রিস্টিনা। যার মধ্যে মিষ্টি, নোনতা, টক, তেতো সব রকমের খাবারই ছিল। তাদের কাজ ছিল খাবারগুলোকে নিজেদের পছন্দ মতো ১ থেকে ৬ পর্যন্ত নম্বর দেওয়া। মানে সব থেকে বেশি পছন্দের খাবার পাবে ৬ আর সব থেকে কম পছন্দের খাবার পাবে ১। এর পর তাদের ব্যক্তিত্ব পরীক্ষার জন্য হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় একটি প্রশ্নপত্র। যেখান থেকে ক্রিস্টিনা পরীক্ষা করেন তাদের আগ্রাসী মনোভাবের মাত্রা।
দ্বিতীয় পরীক্ষায় ক্রিস্টিনা তাদের চার ধরনের ব্যক্তিত্বের লক্ষণ সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন। ডাক্তারি পরিভাষায় এই লক্ষণগুলো হল এক্সট্রাভার্সন, এগ্রিয়েবলনেস, কনসায়েন্টিয়াসনেস, ইমশনাল স্টেবিলিটি। এই লক্ষণগুলোর মাত্রা থেকেই বুঝে নেওয়া যায় ওই ব্যক্তি স্যাডিজম বা নারসিসিজমের মতো রোগের শিকার কিনা। এই পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করেই ক্রিস্টিনার সিদ্ধান্ত, তেতো বা কড়া স্বাদ যারা পছন্দ করেন, তাদের মধ্যে নারসিসিজম বা স্যাডিজমের মতো রোগের লক্ষণ দেখা যায়।
এই সব খাবার আপনার পছন্দের তালিকায় নেই তো? ক্রিস্টিনার কথায় পাত্তা দেবেন কি না তা আপনার ব্যাপার। তবে লেখাটা পড়ে কী ভাবছেন? এক বার মনোদিদের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেবেন নাকি?