স্বস্তিতে থাক রঙের ছোঁয়া, বলছে ফ্যাশন

দুধসাদা ক্যানভাসে একমুঠো রং। তপ্ত কলকাতার সাজ-সাম্রাজ্যে শেষ কথা যেন এটাই। বর্ষা সে ভাবে নামেনি এখনও। মাঝেসাঝের বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলেও বৃষ্টি থামতেই ওষ্ঠাগত প্রাণ।

Advertisement

পরমা দাশগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৮:৪৯
Share:

দুধসাদা ক্যানভাসে একমুঠো রং।

Advertisement

তপ্ত কলকাতার সাজ-সাম্রাজ্যে শেষ কথা যেন এটাই।

বর্ষা সে ভাবে নামেনি এখনও। মাঝেসাঝের বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলেও বৃষ্টি থামতেই ওষ্ঠাগত প্রাণ। সকালের কলেজ-অফিসে বেরোনোর আগে হাত যেন আপনা থেকেই এগিয়ে যেতে চায় ওয়ার্ডরোবের সাদা পোশাকগুলোর দিকে। কিন্তু রোদজ্বলা দুপুরই হোক বা ঘামঝরা সন্ধ্যা, তাই বলে কি রং থাকবে না সাজে? কে বলেছে!

Advertisement

সেই রংটুকু ছড়িয়ে দিতেই কলকাতার কন্যেদের সাজে জমিয়ে বসেছে বাহারি স্কার্ফ, রংচঙে সুতির জ্যাকেট, পালাজো বা ওড়না।

লম্বা ঝুলের দুধসাদা কুর্তি। সঙ্গে সাদা চুড়িদার বা সালোয়ার। কিংবা সাদা রঙের টপ বা টিশার্ট। অথবা ধবধবে সাদা শাড়ি। তাতেই জুড়ে নিন নানা রঙের মিশেল। দরকার শুধু একটা ওড়না বা স্কার্ফ। অথবা কুর্তি, টপ-টিশার্টের সঙ্গে সুতির জ্যাকেট বা পালাজো। আর শাড়ির সঙ্গে রংবাহারি ব্লাউজ। একঘেয়ে শুভ্রতার মাঝে এমন রংচঙে উপস্থিতি মনেও খানিক রং ছড়ায় তো বটেই!

অতএব, চাহিদার সঙ্গে মিলে গিয়েছে জোগানও। শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, ফুটপাথ থেকে শপিং মল সর্বত্রই দেদার হাজির নানা রঙের ওড়না, স্কার্ফ, জ্যাকেট, পালাজো, ব্লাউজ। এবং তা কেনার হিড়িকও যথেষ্টই। নিউ মার্কেটের ফুটপাথের স্কার্ফ বিক্রেতা, দক্ষিণাপণের ব্লাউজ-সুতির জ্যাকেটের দোকানি কিংবা সিটি সেন্টারের নামী পোশাক বিপণির কর্মী— এই গরমেও তিন জনের হাসিই সমান চওড়া। আর ফল? রণে-বনে-মেট্রো স্টেশনে সর্বত্রই সাদায়-রঙে ঝলমলে কন্যেদের ভিড়।

গরমের সাজে এমন রঙের বন্যায় সায় দিচ্ছেন শহরের ডিজাইনারেরাও। অভিযেক দত্ত যেমন বলছেন, সাদা টপ হোক বা কুর্তি কিংবা স্কার্ট, সঙ্গে রঙের কনট্রাস্টটা থাকলে ভাল দেখায়। ফ্রুটি কালার্স হোক বা প্যাস্টেল শেড, নানা রঙের মিশেলই হোক বা এক-দুটো উজ্জ্বল রং, সাদার সঙ্গে তার যুগলবন্দির মেজাজটাই আলাদা। তাঁর কথায়, ‘‘সাদা ক্রপ টপের সঙ্গে নীলের কোনও একটা উজ্জ্বল শেডে পালাজো বা রংচঙে গ্রাফিক বা ফ্লোরাল প্রিন্টের স্কার্ট পরা যায়, আবার সাদা একটা কুর্তির সঙ্গে রংবাহারি স্কার্ফ কিংবা প্যাচওয়ার্ক প্রিন্টের বা কালার ব্লকিং করা রংবাহারি সুতির জ্যাকেটেও ভাল দেখাবে। সাদা শাড়ি হলে রংচঙে ইন্টেরেস্টিং ছাঁটকাটের একটা ব্লাউজ কিন্তু মাস্ট।’’ সেই সঙ্গেই অভিষেকের মতে, পরা যেতে পারে সাদার উপরে সাদা প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি বা পিনটাক কাজের পোশাক। সে ক্ষেত্রে অনেকটা রং থাক গয়নাগাঁটি, ব্যাগ, বেল্ট বা জুতোয়।

ডিজাইনার চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা অবশ্য গরমে স্টাইলের চেয়ে আরামটাকেই গুরুত্ব দিতে চান বেশি। ‘‘ঘামতে ঘামতে কুর্তির উপরে জ্যাকেট না পরে বরং একটা রংবাহারি স্কার্ফ গলায় ঝুলিয়ে নিলেন। রং-ও হলো, আবার ঘাম মুছতেও কাজে দিল!’’ বলছেন তিনি। চন্দ্রাণী জানান, গরমের হাত থেকে বাঁচতে যে পোশাকই পরুন না কেন, তা যেন ঢিলেঢালা হয়। সঙ্গে রোদে পুড়ে যাওয়া আটকাতে দিনের বেলায় যথাসম্ভব ঢাকা পোশাক পরে স্লিভলেস সাজ বা জ্যাকেটের লেয়ারিং সন্ধে বা এসি-র আরামের জন্যই রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। আর বলছেন, ‘‘স্টাইল তো রইলই। সাদার সঙ্গে রং থাকলেই হল—ব্লাউজ, স্কার্ফ, ট্রাউজার্স, স্কার্ট, পালাজো, ধোতি প্যান্ট, ব্যাগ, জুতো, যাতে খুশি। পুরোপুরি সাদা সাজে রং ছড়াতে হাত ভরা নানা রঙের চুড়ি-বালাও ভাল দেখাবে।’’

অতএব? গরমের আরামেও রঙিন হওয়ার সাধ? আশ মেটালেই হয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন