priyanka chopra

নিউ ইয়র্কে প্রিয়ঙ্কার নতুন রেস্তরাঁ ঘুরে দেখল আনন্দবাজার ডিজিটাল

গত মাসের ২৭ তারিখ খুলল রেস্তরাঁটা। সেই থেকে চেষ্টা করছি একটা রিজার্ভেশন পাওয়ার। কিন্তু হচ্ছে কই!

Advertisement

সমর্পণ বিশ্বাস

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২১ ১৫:৩৩
Share:

প্রিয়ঙ্কার ‘সোনা’ জনপ্রিয় হয়েছে আমেরিকায়। ছবি: পিটিআই

অনেক দিন থেকেই শুনছি, প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার ভারতীয় ‘ফাইন ডাইনিং’ রেস্তরাঁ ‘সোনা’ খুলবে নিউ ইয়র্কে। যখন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম, তখন ওই শহরের অন্য বিখ্যাত ভারতীয় রেস্তরাঁগুলোয় খেতে যেতাম। তাই ইচ্ছে ছিল, এখানেও খাওয়ার। কিন্তু অতিমারির জন্য শুনেছিলাম উদ্বোধন পিছিয়ে গিয়েছে। অবশেষে গত মাসের ২৭ তারিখ খুলল রেস্তরাঁটা। সেই থেকে চেষ্টা করছি একটা রিজার্ভেশন পাওয়ার। কিন্তু হচ্ছে কই!

Advertisement

সপ্তাহে ৩ দিন শুধু রাতের খাবার পরিবেশেন করে ‘সোনা’। তাঁর উপর নতুন খুলেছে। নানা রকম নামী-দামিদের ভিড়। তাই বুকিং পাওয়াই মুশকিল! অবশেষে এখনাকার এক বুকিং অ্যাপের মাধ্যমে পেলাম। অবশ্য রেস্তরাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে মেল করেও বুকিং করা যায়। রাত ৯: ৪৫-এ বুকিং ছিল। গিয়েছিলাম পরিবারের সঙ্গে।

ঢুকতেই যাঁরা এগিয়ে এলেন তাঁরা সকলেই ভারতীয় বা ভারত বংশোদ্ভূত। বেশ আপ্যায়ন করেই বসালেন নির্ধারিত টেবিলে। কোভিড সংক্রমণের ভয়ে এখন নিউ ইয়র্কের সব রেস্তরাঁ সংখ্যা গুণে মানুষকে প্রবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে। সেই কথা মাথায় রেখেই বলা যায়, রেস্তরাঁ ভর্তি। মানে ১৬টার মধ্যে ৮টা টেবিলে এখন মানুষ বসতে পারছেন। ৮টাই ভর্তি ছিল। সব টেবিলেই স্থানীয় উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবার। চোখ বুলিয়ে দেখে নিলাম, কয়েকটা টেবিল বাদে সবগুলোতেই যাঁরা বসে আছেন, তাঁরা ভারতীয়। মোট এক ঘণ্টা ছিলাম। যা দেখলাম, সেটা ভাগ করে নিচ্ছি আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে।

Advertisement

খাবার

মেনু দেখলে মনে হবে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া চেয়েছিলেন, তাঁর খাবার দিয়েই একটা সর্বভারতীয় সফর হয়ে যাক। ক্যালকাটা মটন কাটলেট থেকে গোয়ান প্রন কারি— বহু প্রদেশের খাবার রয়েছে তাঁর মেনুতে। খুব বেশি আইটেম নেই। কিন্তু তা নিয়ে খুব একটা আফশোস হবে না। আমরা অর্ডার করেছিলাম মসালা চা, মুম্বইয়ের ভেল, চিজ দোসা, স্টাফ্‌ড চিকেন উইঙ্গস, বাটার চিকেন, গার্লিক নান এবং শেষপাতে চকো-বানানা কুলফি। লক্ষ্য করে দেখলাম, শহরের অন্য ফাইন ডাইনিংগুলোর তুলনায় এরা পরিমাণে অনেকটা বেশি খাবার দেয়। প্রত্যেকটা খাবারের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে। এর মধ্যেই অনেকে বলতে শুরু করেছেন, এখানে নাকি শহরের সেরা বাটার চিকেন পাওয়া যায়। খেয়ে দেখলাম সত্যি হলেও হতে পারে! চিজ দোসার পুরটা আমাদের অচেনা। খুব একটা মুখে রুচল না। তবে তাজ্জব চিকেন উঙ্গস খেয়ে। হাড়ের কোনও বালাই নেই। ওই আকারের দেখতে হলেও পুরোটাই আসলে মাংস। ভিতরে পুর ভরা। খাবারের স্বাদ নিয়ে খুব একটা সমালোচনা করার জায়গা নেই।

‘সোনা’র অন্দরসজ্জা এবং খাবার। ছবি: লেখক

অন্দরসজ্জা

পুরনো মুম্বইয়ের আমেজ তৈরি করতে চেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। তাই অন্দরসজ্জাও মানানসই। বসার জায়গা বেশ আরামদায়ক। কিশোর কুমারের গান চলছে বেশির ভাগ সময়। কখনও কখনও অন্য পুরনো হিন্দি গানও কানে এল।

পরিষেবা

যাঁরা পরিবেশন করছেন তাঁরা বেশি ভাগই এশিয়ার। আমাদের টেবিলের দায়িত্ব ছিলেন এক কমবয়সী ইন্দোনেশিয় মেয়ে। খুব মিষ্টি ব্যবহার। ঘন ঘন পরিষ্কার করছে তাঁরা টেবিল। প্রত্যেকটা পদের পর প্লেট বদলে দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কেউ না কেউ সব সময়ই খেয়াল রাখছেন আর কিছু লাগবে কি না। আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি নেই।

খরচ

নিউ ইয়র্ক শহরে যত ভারতীয় ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁ রয়েছে, সবেতেই আমি খেয়েছি। খেয়াল করে দেখলাম, সেগুলোর তুলনায় প্রত্যেকটা খাবারের দাম অন্তত ২-৩ ডলার করে বেশি। ড্রিঙ্ক নিলে সেগুলোও ৫-৬ ডলার করে দাম বেশি। তাই খরচটা ভালই। কিন্তু পরিমাণে অনেকটা খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে বলে খুব একটা গায়ে লাগল না।

শেষ কথা

এখানে নতুন কোনও রেস্তরাঁ খুললে খাওয়ার শেষে শেফ সাধারণত এসে জানতে চান, খাবার কেমন লেগেছে। এখানে শেফ হরি নায়ককে চোখে পড়ল না। সহকারী শেফ এসে অবশ্য কথা বললেন। জানালেন, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া এবং তাঁর বন্ধু মণীশ গয়াল (যুগ্ম) খুব যত্ন নিয়ে এই রেস্তরাঁ তৈরি করেছেন। তাঁরা চেয়েছিলেন, এখানে এসে দেশের জন্য নস্ট্যালজিয়া অনুভব করুন নিউ ইয়র্কের মানুষ। সে কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে যাবতীয় মেনু এবং অন্দরসজ্জা।

লেখক মিশিগানের বাসিন্দা। আনন্দবাজার ডিজিটালের জন্য নিউ ইয়র্ক গিয়ে খেয়ে এলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার নতুন রেস্তরাঁ ‘সোনা’য়। ভাগ করেন নিলেন অভিজ্ঞতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন