Covid Infection

বাড়িতে আপনার সন্তান কোভিড-আক্রান্ত? কী করে যত্ন নেবেন জেনে নিন

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগ থাকলেও কোনও রকম উপসর্গ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২১ ১৭:৩১
Share:

বাচ্চাদের নিভৃতবাসে রাখা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি কঠিন। ফাইল চিত্র

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছে বাচ্চারাও। যদিও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ছোটদের মধ্যে করোনার খুব গুরুতর প্রভাবের ঘটনা এখনও পর্যন্ত সে ভাবে চোখে পড়েনি। যাদের হচ্ছে, তারা বাড়িতে বাবা-মায়েদের কাছে থেকেই সুস্থ হয়ে উঠছে। কিন্তু বাচ্চাদের নিভৃতবাসে রাখা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক বেশি কঠিন। তাই কী কী করণীয়, জেনে নিন।

Advertisement

কী করে বুঝবেন

আপনার সন্তানের কোভি়ড হয়েছে কি না, সেটা বোঝাটাই সবচেয়ে মুশকিলের। সাধারণত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগ থাকলেও কোনও রকম উপসর্গ নেই। সেই কারণেই বাচ্চাদের ‘সুপারস্প্রেডার’ বলা হচ্ছে। মানে তারা প্রাপ্তবয়স্কদের সংস্পর্শে এসে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু নিজেদের কোনও উপসর্গ সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না, তাই তারা নির্দ্বিধায় আরও অনেকের সঙ্গে মেলামেশা করছে। তাতে প্রাপ্তবয়স্করা সংক্রমিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সাধারণত বাড়ির অন্য সদস্যদের কোভিড পরীক্ষা করার পাশাপাশি যখন বাচ্চাদেরও করানো হচ্ছে, তখনই ধরা পড়ছে।

Advertisement

পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর

বাচ্চাদের যদি কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তা হলে তাদের কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। জ্বর, সামান্য শ্বাসকষ্ট, পেটের সমস্যা, বমি, কাশি, বা গায়ে-হাত পায়ে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। খেয়াল রাখুন, কোনওটা আপনার সন্তানের মধ্যে রয়েছে কি না। সাধারণত বাচ্চারা ৪-৫ দিনের মধ্যেই এগুলি থেকে সুস্থ হয়ে ওঠে। তবে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার কোনও কো-মর্বিডিটি রয়েছে কিনা। অনেক সময়ে, ডায়বিটিস বা ওবিসিটির মতো কোনও সমস্যা আগে থেকেই থাকলে, কোভিডের প্রভাব আরও গুরুতর হয়ে যেতে পারে। তাই বাচ্চার রিপোর্ট পাওয়ার পরে চিকিৎসকের সঙ্গে একবার যোগাযোগ করে নিন। জরুরি নম্বরগুলি হাতের কাছে রাখুন।

নিভৃতবাসে কারা থাকতে পারবে

৫ বছরের নীচে বাচ্চাদের কোনও ভাবেই নিভৃতবাসে রাখা যাবে না। যে বাচ্চাদের বয়স ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে, তাদেরও বাড়ির বাকি সদস্যদের থেকে আলাদা রাখা মুশকিল। সে ক্ষেত্রে বাড়ির বয়স্কদেরই সতর্ক থাকতে হবে। দাদু-ঠাকুরমাদের এই সময়ে আলাদা থাকাই ভাল। তবে বাচ্চাদের বাড়িতে আলাদা রাখলেও সারাক্ষণ হয় বাবা-মা বা অন্য কোনও প্রাপ্তবয়স্ককে দায়িত্ব নিতে হবে। যদি কোনও ওষুধ ছা়ড়া ২৪ ঘণ্টার বেশি জ্বর না আসে তা হলে বুঝবেন, বাচ্চা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে। উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১০ দিন পর্যন্ত নিভৃতবাসে রাখাই ভাল।

কারা দেখাশোনা করতে পারেন

১। যিনি নিজে সুস্থ

২। যাঁর কোনও রকম কো-মর্বিডিটি নেই

৩। যাঁর কোনও অটো-ইমিউন রোগ নেই

৪। যাঁর বয়স ১৮ থেকে ৪৫-এর মধ্যে

কী ভাবে যত্ন নেবেন

১। জ্বর থাকলে নিয়মিত মাপুন। হাতের কাছে প্যারাসিটামল রাখুন

২। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৬ ঘণ্টা অন্তর মেপে দেখুন

৩। গলা ব্যথা, কাশি হলে গরম জলে গার্গল করতে বলুন। তবে এটা একটু বেশি বয়সের বাচ্চার পক্ষেই সম্ভব

৪। পেটের সমস্যার ওষুধ সঙ্গে রাখুন

৫। বাচ্চাকে পরিস্থিতি বুঝিয়ে বলুন। সে যেন মাস্ক পরে, কনুইয়ে মুখ চাপা দিয়ে কাশে, খাওয়া হয়ে গেলে নিজেই কাগজের প্লেট, গেলাস ঘরের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়, এগুলি অভ্যাস করান।

৬। বাচ্চাকে ব্যস্ত রাখার জন্য খেলনা, আঁকার খাতা বা কোনও বাদ্যযন্ত্র দিতে হবে। গল্পের বই দিতে পারেন

৭। বাচ্চা যেন একাকিত্বে না ভোগে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। মাঝেমাঝেই তার সঙ্গে গিয়ে গল্প করতে হবে

৮। বাড়িতে কোনও পোষ্য থাকলে এই সময়ে তাকে বাচ্চার ঘর যেতে না দেওয়াই কাম্য

কেয়ারগিভারকে যা মাথায় রাখতে হবে

খুব ছোট বাচ্চাকে আলাদা রাখা যাবে না। বাবা কিংবা মায়ের মধ্যে যে কোনও একজনই বাচ্চার দায়িত্ব নিন। সারাক্ষণ মাস্ক এবং গ্লাভ্‌স পরে থাকতে হবে। বাচ্চার ব্যবহৃত যে কোনও জিনিস ভাল করে স্যানিটাইজ করতে হবে। ফেলে দেওয়া যায় এমন থালা-বাসন ব্যবহার করুন। টিস্যু পেপার হাতের কাছে রাখুন। বাচ্চার ঘরে ঢোকার সময়ে সব রকম সাবধানতা নিয়েই ঢুকবেন। ঘর থেকে বেরিয়ে গ্লাভ্‌স, মাস্ক, পোশাক— সব ধুয়ে ফেলুন। বাচ্চার ঘর নিয়ম করে পরিষ্কার করুন।

যে লক্ষণগুলি দেখলে হাসপাতাল বা নজরদারি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে

১। ৩ দিনের বেশি ১০১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে জ্বর

২। হঠাৎ খুব পেটে ব্যথা

৩। হঠাৎ বুকে ব্যথা বা প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট

৪। সব সময়েই ঘুমিয়ে থাকছে বা যা বলা হচ্ছে, বুঝতে সমস্য হচ্ছে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন