মধুমেহতেও জলপাই আলু

আলুর দম, আলু ভাজা, আলু পোস্ত— কত কী! বা মাংসের ঝোল বা বিরিয়ানির গোটা আলুর স্বাদ ভোলার নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০০:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

আলু ছাড়া বাঙালির রান্না ভাবাই যায় না!

Advertisement

আলুর দম, আলু ভাজা, আলু পোস্ত— কত কী! বা মাংসের ঝোল বা বিরিয়ানির গোটা আলুর স্বাদ ভোলার নয়।

কিন্তু সুস্বাদু, সুষম ও পুষ্টিগুণ থাকলেও আলুতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকায় তা খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখতে বাধ্য হন মধুমেহ আক্রান্ত রোগীরা। শর্করা বেশি থাকায় তা খেলে শরীর স্থূলকায় হওয়ার আশঙ্কায় পাতে আলু তুলছেন না স্বাস্থ্যসচেতন অনেক বাঙালিও। ডায়াবেটিস রোগী ও স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে এ বার বিশেষ প্রজাতির ‘জলপাই’ আলু চাষের ভাবনা শুরু করেছে রাজ্য কৃষি দফতর।

Advertisement

শনিবার সিউড়ির রাষ্ট্রীয় কৃষি খামারে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে এসে এমনই জানান কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী জানান, উত্তরবঙ্গের কৃষিবিজ্ঞানীরা পরীক্ষামূলক ভাবে এমন আলুর চাষ করছেন যাতে পুষ্টিগুণ ও স্বাদ এক থাকলেও শর্করার পরিমাণ কম। জলপাই আলু নামে সেই আনাজের ২ প্যাকেট বীজ জেলায় এসেছে। এ বছরেই তার চাষ করা হবে। আগামী দিনে সেই চাষ ছড়িয়ে যাবে অন্য জেলাতেও।

কী ভাবে দক্ষিণবঙ্গে ওই আলু চাষের ভাবনা মাথায় এল, তা-ই সিউড়ির অনুষ্ঠানে গল্পের ছলে জানালেন কৃষিমন্ত্রী। আশিসবাবু বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে প্রথম বার ছোট্ট আকারের ওই আলু চেখে দেখেছিলাম। দারুণ স্বাদ হলেও, কী সব্জি খাচ্ছি, প্রথমে বুঝতে পারিনি। পাশে থাকা উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সেটা জলপাই আলু। সঙ্গে এটাও জানান, ওখানকার কৃষি বিজ্ঞানীরা পরীক্ষানিরীক্ষার পরে এই আলু চাষ করছেন, এই আলু নির্ভয়ে ডায়াবেটিস রোগীরাও খেতে পারেন।’’ মন্ত্রী বলছেন, ‘‘সে কথা শুনেই ওই প্রাজাতির আলু চাষের গণ্ডি বাড়াতে চেয়েছি। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।’’

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে চাষ হয় জলপাই আলুর। স্থানীয়রা অনেকে ‘বাদাম আলু’ও বলে থাকেন। আকারে ছোট হলেও এই আলুর জনপ্রিয়তা ওই অঞ্চলে যথেষ্ট। শুধু তাই নয়, চাষি দামও বেশি পান। প্রতি কিলোগ্রামে কমপক্ষে ১৫ টাকা। কৃষিবিজ্ঞানীদের এই আশ্বাস শুনেই দক্ষিণবঙ্গ ও রাজ্যের অন্যান্য অংশে ওই আলুর চাষে আগ্রহী হয় কৃষি দফতর। মন্ত্রী জানান, প্রথমে কৃষি খামারগুলিতে ওই আলুর চাষ করা হবে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের যা কিছু উপলব্ধি মন্ত্রীকে জানিয়েছি। তবে দীর্ঘ পরিশ্রমের পর কৃষিবিজ্ঞানীরা যে ভাল কাজগুলি করছেন তার মধ্যে এই আলু রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন