সাত বছরের গোগোল সব সময় মোবাইল নিয়ে খুটখাট করে। কখনও তার হাতে বাবার মোবাইল, কখনও মায়েরটা। এমনকী পড়তে পড়তেও মন চলে যাচ্ছে পাশে রাখা মোবাইলে। বাবা-মা বকে, বুঝিয়েও সুরাহা করতে পারছেন না।
মনোবিদ জয়রঞ্জন রামের মতে, ভুলটা গোড়ায় বাবা-মাই করেন। কারণ, বাচ্চার কান্না থামাতে বা দুষ্টুমিতে দাঁড়ি টানতে তার হাতে অভিভাবকরাই মোবাইল তুলে দেন। ক্রমে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যায়। দরকার প্রথমেই সতর্ক হওয়া।
১। স্মার্টফোন আর তাতে নানা চিত্তাকর্ষক অ্যাপের হাতছানি এখন সকলকেই টানে। খুব ছোট বয়সে বাচ্চাকে শান্ত করতে বাবা-মা নিজেরাই তাদের হাতে মোবাইল তুলে দেন। এটা অনুচিত।
২। বাচ্চাকে গান শোনাতে ইচ্ছে করতেই পারে। কিন্তু সে জন্য মোবাইল চালিয়ে দেবেন না। তেমন হলে কম্পিউটারে বা সিডি প্লেয়ারে গান চালান।
৩। এমন জায়গায় মোবাইল রাখুন যাতে বাচ্চা নাগালে না পায়।
৪। অনেক সময় বাচ্চা পড়তে যাওয়ার সময় বাবা-মা তাদের হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেন। বলেন, ‘প্রয়োজনে ফোন করবে।’ এটা করবেন না। দরকারে শিক্ষককে ফোন করে সন্তানের খবর নিন।
৫। বাচ্চাদের অবসর বিনোদন বলতে এখন আর মাঠে খেলাধুলো বোঝায় না। স্কুল থেকে ফিরেই ওরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে কম্পিউটার বা স্মার্টফোন নিয়ে। এই অভ্যাস বাড়তে দেবেন না।
৬। স্মার্টফোনে নানা গেম থাকে। বাচ্চাকে সেই গেম খেলতে না দেওয়াই ভাল।
৭। ছোট থেকেই গল্পের বই পড়া, গান শোনা, খেলাধুলোর মতো অভ্যাস সন্তানের মধ্যে গড়ে তুলুন।
৮। সমবয়সীদের মধ্যে সন্তান যাতে বন্ধু খুঁজে পায় সেই ব্যবস্থা করুন।ওদের নিয়ে বেড়াতে যান, বাইরে খেলাধুলো করতে দিন। এতে মোবাইল কখনও আপনার সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠবে না।
৯। যদি সন্তানের মোবাইলের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে তা জোর করে ছাড়াতে হবে। তেমন হলে হাতে মোবাইল দেখলেই তা কেড়ে নিন।
১০। নিয়ম অনুযায়ী তেরো বছরের আগে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করা যায় না। সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রেও এই বয়সের সীমারেখাটা মাথায় রাখুন।
১১। তেরো বছরের পরে যদি সন্তানকে মোবাইল ব্যবহার করতে দেন তা হলেও ইন্টারনেট সংযোগ নেই এমন মোবাইল দিন।