সম্পর্ককে প্রশ্নের মুখে ফেলে যাচাই করতে হবে। মনে করেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। ছবিতে তাঁর সঙ্গে স্ত্রী বরখা বিস্ত। ছবি : সংগৃহীত।
বিয়ে মানেই চিরকালীন, এমনটা ভাবতে নারাজ অভিনেতা ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। তাঁর কাছে বিয়ে যদি আজীবন টিকে যায়, তা হলে খুব ভাল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, দু’টি মানুষের সম্পর্ক আজীবন টিকে থাকতেই হবে। অভিনেতা মনে করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ব্যক্তিত্বের বিকাশ হয়, দৃষ্টিভঙ্গীতেও বদল আসে, তখন তাঁর সম্পর্কও বদলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলা জরুরি। অভিনেত্রী স্ত্রী বরখা বিস্তের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তিনি তা-ই করেছেন।
ইন্দ্রনীল এবং বরখার বিয়ে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনা— দুই-ই হয়েছে বলিউড এবং টলিউডে। কিন্তু ইন্দ্রনীল জানান, তিনি জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখায় বিশ্বাসী নন।
দু’জনেরই পরষ্পরের সঙ্গে কাটানো সুখস্মৃতি রয়েছে, মানছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইন্দ্রনীলকে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘আমরা বহু ভাল সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি। তবে সেই সঙ্গে আমরা নিজেদের আলাদা আলাদা সফরেও এগিয়েছি। সেই অভিজ্ঞতা আমাদের ব্যক্তিত্ব বদলেছে।’’ তার পরে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে কারও ভুল আছে বলে মনে করেন না অভিনেতা। বিয়ে টিকিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত বলেও মানেন না তিনি।
ইন্দ্রনীল জানিয়েছেন, তাঁদের এখনও বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। বরখা এবং তিনি বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে চলেছেন। তবে বিচ্ছেদের শুরুতে নানা রকম উপদেশ শুনতে হয়েছে। কেউ কেউ এ-ও বলেছেন যে, ‘‘পরিবার আগে। পরিবার রক্ষা করো। পুরুষেরা যা যা করে থাকে, সেই সব কিছুই তুমি করতে পারো, কিন্তু বিয়েটা বাঁচাও।’’ ইন্দ্রনীল বলেছেন, ‘‘আমি শুনে বিস্মিত হয়েছিলাম। এটা কী ধরনের পরামর্শ!’’
বয়স বাড়লে ব্যক্তিত্বও বদলায়। ইন্দ্রনীল বলছেন, তাঁরা দু’জন দু’রকম মানুষ ছিলেন। তাই বদলেছেনও আলাদা ভাবে। ছবি: সংগৃহীত।
সমাজ আধুনিক হলেও এখনও অনেকে বিয়ে ভাঙার ঘটনাকে খারাপ চোখেই দেখেন। তাতে তৃতীয় ব্যক্তির ভূমিকা থাকলে, বিষয়টি আরও খারাপ ভাবে দেখা হয়। ইন্দ্রনীল বলছেন, ‘‘আমি দেখেছি, বিয়ে টিকিয়ে রাখার উপদেশ দিতে গিয়ে অনেকে পুরনো দিনের কথা টেনে আনেন। আগে ডিভোর্স হত না। আগে আমৃত্যু স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকতেন। ইত্যাদি। কিন্তু সময় বদলেছে। সে কালে সম্পর্কের সঙ্গে জড়িয়ে থাকত নির্ভরতা। এখন তা নয়। এখন প্রত্যেকে নিজের ভাল থাকা নিয়ে সচেতন। সম্পর্কে তাঁরা ভাল থাকতে পারছেন কি না, তা নিয়ে প্রত্যেকে অবিরত প্রশ্নও তুলছেন। আমিও সেই রকমই প্রশ্ন তুলেছি। তা থেকে সিদ্ধান্তও নিতে পেরেছি।’’