Parenting Tips

মোবাইল নয়, অভিভাবকদের নজর চাই খুদের, ফোনের টান কমাতে শিশুর দেখাশোনা করবেন কী ভাবে?

কোভিডের পরবর্তী সময় খুদেরা মোবাইলের প্রতি এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে যে, তার কুপ্রভাব পড়ছে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর। কী ভাবে আসক্তি দূর করবেন?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৩ ১৭:৩১
Share:

অত্যধিক মোবাইল-আসক্তির কারণে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, চোখের সমস্যা বৃদ্ধির মতো নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে খুদেরা। ছবি: শাটারস্টক।

মোবাইলের প্রতি আসক্তি ছিল। তা বাড়ছিলও। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কোভিডের পরবর্তী সময়ে খুদেরা মোবাইলের প্রতি এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে যে, তার কুপ্রভাব পড়ছে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর। স্কুলের পড়াশোনাই হোক কিংবা খেলা— খুদেদের গোটা জগৎটাই এখন মোবাইল-নির্ভর হয়ে পড়েছে।

Advertisement

আধুনিক পৃথিবীতে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে, তা নিয়ে সংশয় নেই। অতিমারিতে তালাবন্ধ বিশ্বে অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলি সচল থেকেছিল এর মাধ্যমেই। পরবর্তী কালেও যে সেই নির্ভরতা কমে যাবে না, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু অল্পবয়সিদের মধ্যে ডিজিটাল-আসক্তির ক্ষতিকর প্রভাবটি উপেক্ষা করার নয়।

আগেকার মতো বাস্তবের বন্ধুদেরর সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে নয়, স্মার্টফোনের ভার্চুয়াল ‌বন্ধুত্বেই অধিক স্বচ্ছন্দ বোধ করছে এখনকার বেশির ভাগ শিশু। আপাতদৃষ্টিতে এই পরিবর্তনগুলি সামান্য বোধ হলেও সমাজজীবনের ক্ষেত্রে এর প্রভাব বিপুল এবং সুদূরপ্রসারী। সমাজ ও সামাজিকতা— ধীরে ধীরে এই দুই ধারণা থেকেই অনেকটা দূরে চলে যাচ্ছে খুদেরা। কেউ অজান্তেই, কেউ আবার জেনেবুঝেই আন্তর্জালে গুটিয়ে নিচ্ছে নিজেদের। অন্য দিকে, মাত্রাতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের শারীরিক কুপ্রভাবগুলিও অনস্বীকার্য। অত্যধিক মোবাইল-আসক্তির কারণে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, চোখের সমস্যা বৃদ্ধির মতো নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। খোলা জায়গায় দৌড়নো, খেলার অভ্যাস হারিয়ে কায়িক পরিশ্রমহীন অলস জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে তারা। ফলে ছেলেবেলাতেই স্থূলত্বের মতো সমস্যা গ্রাস করছে তাদের। ডিজিটাল ডিভাইসে মুখ গুজে বসে থাকার অভ্যাস খুদেদের মনোযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিশুরা অনেক বেশি হিংসাত্মক আচরণ করে— এর পিছনেও অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল-আসক্তিই দায়ী।

Advertisement

কী ভাবে আসক্তি কমাবেন?

১) যখন-তখন নয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিন। তবে তখন শিশু স্মার্ট ফোনে কী করছে বা কী দেখছে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। খেলাধুলো, নাচ, গান যে বিষয়ে শিশুর আগ্রহ আছে, সে সব বিষয়ে মন দিতে উৎসাহী করে তুলুন খুদেকে।

আপনি যদি খুব বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত হন, তা হলে স্বাভাবিক ভাবে আপনার সন্তানও সেটি করবে। ছবি: সংগৃহীত।

২) শিশু যদি অনলাইনে ক্লাস করে, তা হলে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে সে কী করছে, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া স্মার্টফোন থেকে আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৩) শিশুর স্মার্টফোনের আসক্তি কাটাতে আপনাকে ওর জন্য সময় বার করে নিতে হবে। ওর জন্য দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখুন। তখন শিশুর মনের কথা শুনুন, শিশুর সঙ্গে খেলুন, ওর সঙ্গে গল্প করুন।

৪) আপনি যদি খুব বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত হন, তা হলে স্বাভাবিক ভাবে আপনার সন্তানও সেটি করবে। তাই আগে আপনার নিজের আসক্তি দূর করুন।

৫) ঘুমোনোর ঘণ্টা খানেক আগে শিশুকে ফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করতে মানা করুন। প্রয়োজনে শাসন করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন