Reason of Cheating

গোপনে অন্য সম্পর্কে সঙ্গী! আঁচ পেয়ে গুমরে মরছেন আপনি, কেন ভালবাসার মানুষেরা ঠকান এ ভাবে?

প্রতারণার প্রবণতা কোনও ভাবেই কেন আটকানো যায় না? বড়সড় হোক বা ছোটখাটো, ঠকেছেন অনেকেই। কত সমস্যারই তো সমাধান বার করে নিয়েছে আধুনিক মানুষ। তা হলে প্রতারণার প্রবণতাকে সমূলে বিনাশ করা যাচ্ছে না কেন? 

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৫ ১০:০০
Share:

প্রবণতা কোনও ভাবেই কেন আটকানো যায় না? ছবি: এআই।

নিজের ভালবাসার মানুষ যখন অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যায়? তা সে শারীরিক হোক বা মানসিক। লুকিয়ে, গোপন করে, সঙ্গীকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে— এই প্রতারণার সম্মুখীন হতে হয় অধিকাংশকে। কখনও না কখনও। নতুন নয়, অভ্যস্ত সকলেই। অথচ প্রতারণার শিকার হওয়ার যন্ত্রণা তীব্র। কিন্তু এই প্রবণতা কোনও ভাবেই কেন আটকানো যায় না? বড়সড় হোক বা ছোটখাটো, ঠকেছেন অনেকেই। কত সমস্যারই তো সমাধান বার করে নিয়েছে আধুনিক মানুষ। তা হলে প্রতারণার প্রবণতাকে সমূলে বিনাশ করা যাচ্ছে না কেন? কেন এর কাছে হার মানছে সকলে?

Advertisement

এখানে মূল সমস্যা গোপন করা। গোপন করা মানেই আপনি আপনার সঙ্গীর সামনে কোনও বিকল্প রাস্তা রাখছেন না। তিনি না জেনে, অথবা আঁচ করে ভিতরে ভিতরে গুমরে গুমরে জীবন যাপন করে চলেছেন। আপনি বলছেন না অথবা প্রশ্ন করলে স্বীকার করছেন না বলে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হচ্ছেন না। তিনি আদৌ এমন সম্পর্কের মধ্যে থাকতে চান না কি চান না? এই অনুমতিটুকু নিয়ে নিলেই অনেক সমস্যা মিটে যায়। সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু সেটুকুর সাহস থাকে না অনেকেরই। এ দিকে আদিম প্রবৃত্তির হাতছানি থেকে দূরেও থাকা যায় না। তাই প্রতারণাই একমাত্র অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। প্রতারণাকে অনেকেই অন্যায় হিসেবে দাগিয়ে দেন।

কিন্তু তার পরও কেন কেউ কেউ তাঁর সঙ্গীকে ঠকান?

Advertisement

আত্মবিশ্বাসের অভাব: কেবল সঙ্গীর কথা যথেষ্ট নয়। কেবল নিজের দেখাও যথেষ্ট নয়। নিজের বিষয়ে আরও এক জন কারও কথা জরুরি হয়ে পড়ে। যখন মনের মধ্যে নিজের প্রতি বিশ্বাস ফুরিয়ে যায়, তখন এমন এক জন কাউকে দরকার পড়ে, যে কথা শোনার সময়ে বিচারকের আসনে বসবে না। আসলে তৃতীয় ব্যক্তি সেই ব্যক্তির সবটা তো জানে না। ফলে সুবিধা হয় কথা বলা শুরু করতে। কিন্তু শুরুতেই সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলে নিলে এই প্রতারণার অবকাশ তৈরি হত না।

ডিজিটাল যুগে তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে সাধারণ কথাবার্তা আর ঠকানোর মধ্যে পার্থক্যের সূক্ষ্ম রেখা মাঝেমাঝে মিলিয়ে যায়। ছবি: এআই।

একঘেয়েমি: অনেক সময় এক জনের সঙ্গে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি চলে আসে। রোমাঞ্চের দরকার পড়ে অনেকের। আর তার জন্য নতুন ব্যক্তির খোঁজ করে মানুষ। কিন্তু সে মুহূর্তেই সঙ্গীর সঙ্গে সব কথা ভাগ করে নিলে আর সমস্যা হয় না।

একাকিত্ব: কঠিন সময়ে সঙ্গী ছাড়াও অন্য কারও থেকে সহানুভূতির চাহিদা তৈরি হয়। সঙ্গী ব্যস্ত থাকলে অথবা পাশে থাকলেও একা লাগতে পারে। আর তখনই প্রতারণার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সব সময়ই যে তা শারীরিক সম্পর্কে গড়িয়ে যাবে, তা নয়। লুকিয়ে কথা বললেও সঙ্গীকে ঠকানো হয়।

মানসিক বিচ্ছিন্নতা: কারও যদি মনে হয়, তিনি তাঁর সঙ্গীর থেকে যথেষ্ট ভালবাসা পাচ্ছেন না, বা সঙ্গী তাঁর দিকে ভাল ভাবে তাকান না, অথবা প্রয়োজনের সময়েও সঙ্গী পাশে দাঁড়িয়ে সহানুভূতিশীল হতে পারেন না, তখন এমন এক জন মানুষকে দরকার পড়ে, যিনি সব রকম ভাবে সঙ্গে থাকবেন। আর এই যে নতুন এক মানুষকে দরকার পড়ছে, সে কথা সরাসরি সঙ্গীকে বলার সাহস থাকে না অনেকের।

সামাজিক পরিবর্তন: বহুগামী আর একগামী সম্পর্ক নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে চারদিকে। অনেকেই মনে করছেন, একসঙ্গে একাধিকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে তিনি ভাল থাকবেন। অর্থাৎ, আদিম যুগের প্রবণতা ফিরে আসছে। কিন্তু সমস্যা হল, যে মুহূর্তে বহুগামিতায় গোপনীয়তা চলে আসে, তা তো আর বহুগামিতা থাকে না। তা কেবলই প্রতারণা হয়ে থেকে যায়। এই সূক্ষ্ম পার্থক্য বোঝেন না অনেকে। বা বুঝলেও সাহস পান না। তাই সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে চলতে গেলে কমিউনিটিতে কথাবার্তা বলা উচিত।

সমাজমাধ্যমের প্রভাব: ডিজিটালের যুগে তো কোটি কোটি বিকল্প মানুষের সামনে। ডেটিং অ্যাপ এবং সমাজমাধ্যমের মঞ্চগুলির কারণে মানুষ খুব সহজে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছেন। ফলে সাধারণ কথাবার্তা আর ঠকানোর মধ্যে পার্থক্যের সূক্ষ্ম রেখা মাঝেমাঝে মিলিয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement