Priyanka Chopras Moms Trauma

শৈশবের পরিবেশ পছন্দ ছিল না প্রিয়ঙ্কার মা মধুর, সন্তান পালনে ঘরের পরিবেশ কেমন থাকা জরুরি?

বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার মা মধু চোপড়ার নিজের বাড়ির পরিবেশ অসহ্য লাগত। ছোট থেকে বড় হওয়ার সময় বাড়ির পরিবেশ কেন সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩০
Share:

অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে মা মধু চোপড়া। ছবি: সংগৃহীত।

পেশাগত জীবনে সফল। তিনি একজন গর্বিত মা-ও। অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার মা মধু চোপড়া সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ছোট থেকে তাঁর একটা স্বপ্ন ছিল। এমন একটা বাড়ি হবে, যেখানে সব সময় শান্তির পরিবেশ বজায় থাকবে। কোনও চিৎকার, চেঁচামেচি থাকবে না।

Advertisement

মুম্বই নিবাসী মধু চোপড়া একজন চিকিৎসক। একই সঙ্গে সৌন্দর্য এবং প্রসাধনী জগতের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। প্রিয়ঙ্কা এবং সিদ্ধার্থ, দুই সন্তানের মা তিনি। সেই মধুই কিন্তু ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতেন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশের। কিন্তু কেন? সে কথা নিজে মুখেই বলেছেন মধু। তাঁর বাবা মনোহর কিষণ আখোরি এবং মা মধু জ্যোৎস্না আখোরি, দু’জনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাড়িতেও সেই আবহই বহাল ছিল। প্রচুর লোক আসতেন, যেতেন। মধুর কথায়, বাড়িতে নিজের মতো থাকতে পারতেন না তিনি। সে কারণেই তাঁর মনে হয়েছিল, এমন একটা বাড়ি হবে, যেখানে শব্দ থাকবে না, অতিরিক্ত কথা, চিৎকার থাকবে না। শান্তিতে নিজের মতো করে কাটাতে পারবেন তিনি।

শৈশবে যে মধু বাবা-মায়ের মধ্যে অশান্তি দেখেছিলেন বা আদর-যত্ন পাননি, তা কিন্তু নয়। তবু এমন ভাবনা কেন তৈরি হল? মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকার বলছেন, ‘‘ছোটবেলার অপ্রাপ্তি বা না পাওয়া অনেক সময় কোনও কিছু পাওয়ার খিদে বাড়িয়ে দেয়। চাহিদা তৈরি করে। তখন মনে হয়, বড় হয়ে এই ইচ্ছাগুলো পূরণ করব।’’

Advertisement

মনোবিদ মারওয়ার কথায়, শৈশবে যদি কোনও শিশু অশান্তির আবহে বড় হয়, তা হলে তার মধ্যে নিশ্চিন্ত পরিবেশে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়ে ওঠে। সে যে শুধুই সেই পরিবেশ থেকে মুক্তি চায় তা নয়, ক্ষেত্র বিশেষে নিরাপত্তাও খোঁজে।

শৈশবে বড় হওয়ার পরিবেশ কী ভাবে ভবিষ্যৎ জীবনে প্রভাব ফেলে?

· চিৎকার, চেঁচামেচি থেকে শিশুর মনে ভীতির উদ্রেক হতে পারে।

· শৈশবে বাবা-মায়ের কলহ বা অশান্তিজনক পরিবেশে বড় হলে, তার মধ্যেও হিংসাত্মক আচরণ দেখা দিতে পারে।

· অবহেলা, নিরাপত্তাহীনতা থেকে অপরাধ প্রবণতাও জন্ম নেওয়া স্বাভাবিক।

· কারও মধ্যে শৈশবের অপূর্ণতা পূরণের চাহিদা তৈরি হতে পারে।

· কেউ আবার নিজে যা পাননি, সন্তানের ক্ষেত্রে সেই অপ্রাপ্তি বজায় রাখার মানসিকতাও রাখতে পারেন। বা নিজের অপূর্ণ সাধ অন্যের ক্ষেত্রে পূরণ হতে দেখলে ঈর্ষান্বিতও হতে পারেন।

মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা বলছেন, ‘‘কোন পরিবেশ শিশুর উপর কী প্রভাব ফেলবে, বলা কঠিন। মধু চোপড়ার ক্ষেত্রে নিজের বাড়ি তৈরির তাগিদ তৈরি হয়েছিল। আবার কারও ক্ষেত্রে এই অপ্রাপ্তি বা শৈশবের অশান্তিমূলক পরিবেশ তাঁকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে। জেদি, বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারেন সেই ব্যক্তি।’’

বাড়িতে কেমন পরিবেশ জরুরি?
সন্তানের বড় হওয়ার সময় অশান্তির আবহ তার ক্ষতি করতে পারে। সে কারণেই মনোবিদেরা বলেন, স্বামী-স্ত্রী মনোমালিন্য, ঝগড়া যেন সন্তানের জীবনে ভয়ের কারণ না হয়। সে যেন নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে। বাড়িতে চিৎকার করে কথা বলা, অন্যকে অসম্মান করা, সামান্য কারণে শিশুকে বকাঝকা, গায়ে হাত তোলা— এসব এড়িয়ে চলা দরকার। সে বাড়িতে যা হতে দেখবে সেটাই শিখবে। বরং সন্তান কী চাইছে, কোন পরিবেশ তার ভাল লাগছে না, সে সব বোঝা প্রয়োজন। সন্তানের সঙ্গে তার মতো করে কথা বলা সে কারণে খুব জরুরি। তাকে বলতে দেওয়া দরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement