একাধিক বিড়াল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন? কোন ভুল এড়িয়ে চলা দরকার? ছবি: ফ্রিপিক।
একলা ছিল একরকম। কিন্তু ভাল ভেবে দোসর আনতে গিয়েই ফ্যাসাদে পড়েছেন রাজন্যা। মার্জার ‘আদরিনী’র যাতে একা না লাগে সে জন্য আরও দুই পোষ্য বিড়াল বাড়িতে এনেছেন তিনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে, তিন জনের ভাব-ভালবাসা নয়, বরং রাগই বাড়ছে। বিশেষত আদরের ‘আদরিনী’র যেন বাকিদের প্রতি আচরণ বেশ রূঢ় হয়ে উঠেছে।
পশুরোগ চিকিৎসকদের কথায়, একসঙ্গে একাধিক বিড়াল পালন করতে গেলে তাদের আচরণ, হাবভাব সম্পর্কে ভাল ভাবে জানা প্রয়োজন। তা না হলেই বিপত্তি। প্রত্যেকটি বিড়াল স্বভাবে, আচরণে ভিন্ন। তাদের সামলাতে হলে, তাদের বোঝা জরুরি। এ ক্ষেত্রে অনেক সময়ই সাধারণ ভুলভ্রান্তি করে ফেলেন মার্জারদের অভিভাবকেরা। সেই ভুল এড়ালেই বিষয়টি সহজ হয়ে যেতে পারে।
১। বিড়ালেরা তাদের নিজস্ব পরিসর সম্পর্কে সচেতন। তাদের জায়গা, জিনিসপত্র তারা কিন্তু সমগোত্রীয়দের সঙ্গেও সব সময় ভাগ করে নিতে চায় না। তা ছাড়া, সব বিড়ালের আচরণও এক নয়। কোনও বিড়াল অন্যদের দাবিয়ে রাখতে পছন্দ করে, কর্তৃত্ব করতে চায়। কোনও বিড়াল আবার এমন আচরণের জেরে নিজেকে খানিক গুটিয়েও নিতে পারে। একসঙ্গে থাকতে গিয়ে কোনও বিড়াল যদি অকারণে বেশি রেগে যায় বা হিংস্র হয়ে ওঠে বা আচরণে বিশেষ বদল ঘটে তা হলে বুঝতে হবে তাদের বনিবনা হচ্ছে না।
২। প্রতিটি বিড়ালের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বা এলাকা প্রয়োজন। সেই জায়গা যে আয়তনের হিসাবে বড় হতে হবে তা নয়। তবে প্রতিটি বিড়াল যাতে নিজের মতো করে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিড়াল সাধারণত একটু উঁচু কোনও জায়গা পছন্দ করে যেখান থেকে সে চারদিকে নজর চালাতে পারে। এ ছাড়া তারা বিশ্রামের জন্য নিরাপদ স্থান চায়। সমস্যা এড়ানোর সহজ উপায় হল প্রতিটি বিড়ালের জন্য আলাদা জায়গায় শোয়া এবং বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া। সেই জায়গা কিন্তু পাশাপাশি হলে চলবে না। বরং প্রয়োজনে ঘর ভিন্ন করে দিতে হবে। যাতে প্রতিটি বিড়াল চাইলে একলা নিজের মতো করে সময় কাটাতে পারে।
৩। বাড়িতে একাধিক পোষ্য বিড়াল থাকলে তাদের প্রস্রাব এবং মলত্যাগের পাত্রটিও ভিন্ন রাখা দরকার। একটি বিড়াল মোটেও পছন্দ করে না তার মূত্রত্যাগের স্থান বা ‘লিটার বক্স’ অন্য মার্জার ব্যবহার করবে। তা ছাড়া, বিড়াল অত্যন্ত পরিষ্কার প্রাণী। দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা লিটার বক্স ব্যবহারেও তাদের ঘোরতর আপত্তি। একাধিক পোষ্য মার্জার পালন করতে হলে প্রত্যেকের মলমূত্র ত্যাগের স্থান-পাত্র আলাদা করতে হবে। এগুলি রাখতে হবে এমন জায়গায় যেখানে সর্ব ক্ষণ লোকজন আসে না বা যাতায়াত করে না।
৪। খাবার সময় কি মার্জারদের মধ্যে গন্ডগোল বেধে যায়? সমস্যা এড়ানোর ভাল পন্থা হল আলাদা ঘরের কোণে আলাদা পাত্রে তাদের খেতে দেওয়া। একই জায়গায় খেতে দিলে তাদের মধ্যে খাবার, পাত্র নিয়ে অসুবিধা হতে পারে। প্রতি দিন নির্দিষ্ট সময় প্রতিটি বিড়ালকে নির্দিষ্ট জায়গায় খাওয়ানোর অভ্যাস করালে সমস্যা এড়ানো সম্ভব।
৫। একসঙ্গে একাধিক বিড়াল থাকলে প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের উপর আলাদা ভাবে নজর দেওয়া দরকার। হঠাৎ করে কোনও মার্জারের ওজন কমে বা বেড়ে গেলে, আচরণে বিশেষ বদল হলে, নেতিয়ে পড়লে দ্রুত পশুরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক বিড়ালের টিকাকরণের দিকে আলাদা ভাবে নজরও দিতে হবে।