হৃদরোগে দ্বিতীয় মত জরুরি, বলছেন ডাক্তার

ওই রোগীর অভিযোগ, এই রিপোর্ট নিয়ে তিনি আগের হাসপাতালে গেলে, তাঁকে ফের জোরাজুরি করা হয় অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করানো জন্য। রোগীর বক্তব্য, ‘‘ওই হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

সম্প্রতি কাঁকসা এলাকার এক বাসিন্দা দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে এসেছিলেন হার্টের সমস্যা নিয়ে। তাঁকে সেই হাসপাতালে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করার জন্য বলা হয়। রোগীর দাবি, তা শুনে তিনি শহরের অন্য একটি হাসপাতালে গেলে সেখানকার চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির দরকার নেই। তুলনায় অনেক কম খরচে টিএমটি (ট্রেড মিল টেস্ট) করলেই হবে। পরীক্ষার পরে ওই রোগীর ফলাফল ‘নেগেটিভ’ হয়। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, স্টেন্ট বসানোর প্রয়োজন নেই যেহেতু রিপোর্টে ‘নেগেটিভ’ এসেছে।

Advertisement

ওই রোগীর অভিযোগ, এই রিপোর্ট নিয়ে তিনি আগের হাসপাতালে গেলে, তাঁকে ফের জোরাজুরি করা হয় অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করানো জন্য। রোগীর বক্তব্য, ‘‘ওই হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে। স্টেন্ট বসিয়ে দেওয়া হবে। অথচ আমি দ্বিতীয় একটি হাসপাতালে দেখিয়ে অন্য পরামর্শ পেয়েছি।’’

ঘটনাচক্রে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে বুধবারই। ওই দিন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগে শ্যামপুরের বাসিন্দা তারাপদ ঘড়ুই দাবি করেন, পেটে ব্যথা নিয়ে মঙ্গলবার তাঁর ভাই নিরাপদকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার তাঁকে বিভিন্ন ইঞ্জেকশন দেওয়ার নাম করে বেশ কিছু কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। দুপুরে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, তাঁর ভাই মারা গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারাপদবাবু।

Advertisement

চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হলে তিন ঘণ্টার মধ্যে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করা উচিত। তাতে হার্ট ভাল থাকে। হার্ট অ্যাটাক হলে যদি পরীক্ষায় দেখা যায়, ধমনীতে এমন ব্লক হয়েছে, যা থেকে রোগীর প্রাণসংশয় হতে পারে, তখন বেলুন দিয়ে ব্লক খুলে দিতে হয়। পরে বাইপাস সার্জারি করতে হয়। দুর্গাপুরের বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ারম্যান তথা সিনিয়র কার্ডিয়াক সার্জেন সত্যজিৎ বসু বলেন, ‘‘হার্টের সমস্যায় ৫০-৬০ শতাংশ ক্ষেত্রেই অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির দরকার পড়ে না। তাই রোগীদের দ্বিতীয় মতামত নেওয়া উচিত।’’ তিনি জানিয়েছেন, হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে দুটি অ্যাসপিরিন এবং ৪টি ক্লোপিড্রোজেল ট্যাবলেট (৭৫ মিলি গ্রাম) খেয়ে নিয়ে দু’ঘন্টার মধ্যে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা যাবে, এমন হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়া উচিত। তা হলে হার্টের পেশির ক্ষতির সম্ভাবনা কমে। ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়।

‘‘তবে সব সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই চলা উচিত রোগীর।’’—মনে করেন সত্যজিৎবাবুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন