বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসে র্যালি সিউড়িতে। — নিজস্ব চিত্র।
আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া দিবসে হাসপাতালের তরফে আমন্ত্রিত ছিলেন তাঁরা। তাই আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে শুক্রবার সকালে সিউড়ি হাসপাতালে হাজির হয়েছিলেন অভিভাবকেরা। কিন্তু অনুষ্ঠানের সুর বদলে গেল বিক্ষোভে। অভিভাবক ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের পরিজনেদের ক্ষোভ, যাদের জন্য অনুষ্ঠান যাদের জন্য সরকারের এত টাকা খরচ হয়, তারাই অবহেলিত। হাসপাতাল থেকে রক্ত পাচ্ছে না। ঠিকমতো পরিষেবা মিলছে না। উল্টে জুটছে দুর্ব্যবহার। নানা অব্যবস্থা নিয়ে সিউড়ি হাসপাতালের সুপার শোভন দে’র অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষেভও করেন তাঁরা। সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁর বছর সাতেকের মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত, সঞ্জয় সাহার ছ’বছরের ছেলে কিংবা রওশনারা বিবি যাঁর বছর সাতেকের ছেলেও একই রোগে আক্রান্ত। প্রত্যেকের অভিযোগ, ‘‘ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। বলা হচ্ছে ডোনার জোগাড় করে আনতে। এত সংখ্যক ডোনার কোথায় পাব? ব্লাড ডোনেশনের কার্ড থাকলেও মিলছে না রক্ত। হাসপাতালে এর চিকিৎসক নেই। রক্তপরীক্ষার যন্ত্রটি বিকল। বলতে গেলে জুটছে দুর্বব্যহার। এই তালিকায় সুপারও আছেন।’’ যদিও এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন সুপার শোভনবাবু কার্যালয়ে ছিলেন না। তিনি স্বাস্থ্য দফতর থেকে আসা দুই আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন। তাই অভিভাবকেরা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আরি’র কাছে অভিযোগ জানান। সিএমওএইচ বলেন, ‘‘সত্যিই এখন রক্তের অভাব রয়েছে। গ্রীষ্মকালে এমন হয়। আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি যাতে আরও রক্তদান শিবির হাসাপাতালের উদ্যোগে করা যায়। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির প্রতিও আবেদন থাকল। আর চিকিৎসক যাতে শীঘ্রই নিয়োগ হয়, সে ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের সঙ্গে সহানুভুতিশীল ব্যবহার করতেই হবে, এটাই কাম্য। আমি হাসপাতল সুপারের সঙ্গে এই নিয়ে কথাও বলেছি।’’ পরে সুপার অবশ্য বলেন, ‘‘রক্ত বা চিকিৎসকের অভাব রয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোনও রোগী বা তাঁদের পরিজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ ঠিক নয়।’’